Delhi IAS Coaching Centre

দিল্লির সেই আইএএস কোচিং সেন্টারের দুর্ঘটনার মুহূর্তের ভিডিয়ো প্রকাশ্যে, গ্রেফতার সেন্টারের মালিক-সহ দুই

এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, প্রথম দিকে জল খুব ধীরেই ঢুকছিল। কিন্তু আচমকাই সেই জলের স্তর বেড়ে যায়। ২-৩ মিনিটের মধ্যে কোমরসমান জল হয়ে যায়। সঙ্গে জলের টানও বাড়তে থাকে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৪ ১২:৩১
Share:

পড়ুয়াদের উদ্ধারের সেই দৃশ্য। ছবি: এক্স।

দিল্লির আইএএস কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টে দুর্ঘটনায় ওই সেন্টারের মালিক এবং কো-অর্ডিনেটরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ডেপুটি পুলিশ কমিশনার এম হর্ষবর্ধন জানিয়েছেন, উদ্ধারকাজ শেষ হয়েছে। তিন পড়ুয়ার দেহ উদ্ধার হয়েছে। রাজেন্দ্র নগর থানায় ওই কোচিং সেন্টারের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। রাজধানীর যে সব কোচিং সেন্টারে বেসমেন্টে পড়ানোর ব্যবস্থা রয়েছে, সেই সব সেন্টারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র শেলি ওবেরয়।

Advertisement

কোচিং সেন্টারে দুর্ঘটনার মুহূর্তের একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। যদিও ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, ঘোলা এবং নোংরা জল হু হু করে বেসমেন্টে ঢুকছে। সেন্টারেরই অন্য পড়ুয়ারা বেসমেন্টে আটকে পড়া পড়ুয়াদের উদ্ধার করছেন।

শনিবার বিকেল থেকেই মুষলধারায় বৃষ্টি হচ্ছিল। সন্ধ্যা তখন ৬টা। একটু একটু করে রাস্তার জল জমতে শুরু করে। আধ ঘণ্টার মধ্যেই সেই জলস্তর বেড়ে যায়। রাস্তা ছাড়িয়ে সেই জল ঢুকতে শুরু করেছিল দিল্লির রাজেন্দ্র নগরের সেই কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টে। ওই বেসমেন্টেই রয়েছে কোচিং সেন্টারের গ্রন্থাগার। বেশ বড়সড়। ১৫০ জন বসার মতো জায়গা রয়েছে সেখানে। কিন্তু শনিবার সেখানে ছিলেন ৩০-৩৫ জন আইএএস পড়ুয়া।

Advertisement

এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, প্রথম দিকে জল খুব ধীরেই ঢুকছিল। কিন্তু আচমকাই সেই জলের স্তর বেড়ে যায়। ২-৩ মিনিটের মধ্যে কোমরসমান জল হয়ে যায়। সঙ্গে জলের টানও বাড়তে থাকে। গ্রন্থাগারের ভিতরে থাকা পড়ুয়ারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এই পরিস্থিতিতে হুলস্থুল পড়ে যায় কোচিং সেন্টারে। কিন্তু জলের স্তর এত দ্রুত বাড়তে শুরু করেছিল যে, পড়ুয়ারা ভিতরেই আটকে পড়েন। দড়ি ফেলে তাঁদের কয়েক জনকে উদ্ধার করেন কোচিং সেন্টারের অন্য পড়ুয়ারা। কিন্তু ১০ মিনিটের মধ্যে বেসমেন্টের ছাদ ছুঁয়ে ফেলেছিল জল। ফলে কত জন গ্রন্থাগারের ভিতরে আটকে পড়েছিলেন প্রথম দিকে তা বোঝা যায়নি।

আরও এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, জলের স্তর ১২ ফুট পর্যন্ত পৌঁছে যায়। অনেক পড়ুয়া বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেন। কিন্তু জলের টান এত বেশি ছিল যে, পড়ুয়ারা বেসামাল হয়ে পড়েছিলেন। বেশির ভাগ পড়ুয়াকেই দড়ির সাহায্যে তুলে ফেলা হয়েছিল, কিন্তু তিন-চার জন বেরোতে পারেননি। ডুবে মৃত্যু হয় তাঁদেরই। পড়ুয়াদের অনেকের অভিযোগ, বৃষ্টি হলেই কোচিং সেন্টারের বাইরে জল জমে যায়। গত সপ্তাহেই বেসমেন্টে জল ঢুকে গিয়েছিল। তাঁদের বেসমেন্টে যেতে দেওয়া হয়নি সে কারণে। কিন্তু তার পরেও কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ পড়ুয়াদের। বেসমেন্টে গ্রন্থাগার ছাড়াও একটি ক্লাসরুমও রয়েছে। বেসমেন্টে যাতায়াত করার জন্য একটিই রাস্তা। গ্রন্থাগার ছাড়াও গাড়ি পার্কিংয়েরও ব্যবস্থা রয়েছে বেসমেন্টে।

তিন জনের মৃত্যুর প্রতিবাদে কোচিং সেন্টারের সামনে শনিবার রাত থেকে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন অন্যান্য পড়ুয়ারা। রবিবার সকালেও প্ল্যাকার্ড হাতে সেন্টারের সামনে বসে থাকতে দেখা যায় তাঁদের। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে দিল্লিতে আপ বনাম বিজেপি তরজা শুরু হয়েছে। এই ঘটনার জন্য আপ সরকারের অব্যবস্থাকেই দায়ী করেছে বিজেপি। আপ মন্ত্রী অতিশী ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement