Congress

Working President: কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী সভাপতি পদ: অশোক, দিগ্বিজয়ের নাম-চর্চা

কংগ্রেস সূত্রের খবর, পি চিদম্বরম, প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা-সহ সাত সদস্যের এই কমিটি প্রশান্ত কিশোরের অধিকাংশ পরামর্শই কার্যকর বলে মত দিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২২ ০৭:০০
Share:

ফাইল চিত্র

সৃষ্টি, স্থিতি, অনুগ্রহ, সংহার, তিরোভাব—শিবের তাণ্ডব নৃত্যকে প্রতীক করে কংগ্রেসের পুনরুত্থানের পথ বাতলেছেন প্রশান্ত কিশোর। তাঁর সেই পরামর্শ খতিয়ে দেখে কংগ্রেসের সাত সদস্যের কমিটির রিপোর্ট জমা পড়ল দলের সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীর কাছে।

Advertisement

কংগ্রেস সূত্রের খবর, পি চিদম্বরম, প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা-সহ সাত সদস্যের এই কমিটি প্রশান্ত কিশোরের অধিকাংশ পরামর্শই কার্যকর বলে মত দিয়েছে। কিন্তু প্রশান্ত কিশোরের নিজের ভূমিকা কী হবে, কংগ্রেসে যোগ দিলে ভোটকুশলীকে কোন পদে বসানো হবে, সেই সিদ্ধান্ত সনিয়া গান্ধীই নেবেন।

প্রশান্ত কিশোরের অন্যতম প্রধান পরামর্শ ছিল, গান্ধী পরিবারের বাইরের কাউকে দলের সহ-সভাপতি বা কার্যনির্বাহী সভাপতি করা হোক। গান্ধী পরিবারের কেউ সভাপতি পদে থাকলেও আদতে এই সহ-সভাপতি বা কার্যনির্বাহী সভাপতিই সমস্ত রাজ্যে ও লোকসভা ভোটে নির্বাচন পরিচালনা করবেন। কিশোর নিজের জন্য সহ-সভাপতি বা কার্যনির্বাহী সভাপতির পদ চাইলেও কংগ্রেসের অনেকেরই তাতে আপত্তি রয়েছে। তবে দলের প্রবীণ নেতাদের মধ্যে কাউকে এই দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে অনেকে একমত। কংগ্রেস সূত্রের খবর, দলের অনেকেই মনে করছেন, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত এই পদের জন্য উপযুক্ত। ২০১৮-তে তিনি সংগঠনের দায়িত্বে থাকার সময়ই কংগ্রেস রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়ে ভোটে জিতেছিল। কিন্তু গহলৌত নিজে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে এই দায়িত্বে আসতে আগ্রহী নন বলে সূত্রের খবর।

Advertisement

চলতি সপ্তাহেই রাজস্থানে গহলৌত-বিরোধী শিবিরের নেতা সচিন পাইলট সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দিল্লিতে বৈঠক করে গিয়েছেন। তারপরে রাজস্থানে মুখ্যমন্ত্রী বদল নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। মনে করা হচ্ছিল, আগামী বছর রাজস্থানে ভোটের আগে সচিনকে মুখ্যমন্ত্রী করে গহলৌতকে জাতীয় স্তরে বড় দায়িত্বে নিয়ে আসা হবে। কিন্তু গহলৌত আজ আপত্তি বুঝিয়ে দিয়ে বলেছেন, “আমিও গত দু’তিন দিন ধরে এই গুজব শুনছি। এতে সরকারের কাজে ক্ষতি হয়। আমার ইস্তফাপত্র কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীর কাছে পড়ে রয়েছে। উনি চাইলেই তা গ্রহণ করতে পারেন। রাতারাতি তা হয়ে যাবে, কেউ জানতেও পারবে না।” গহলৌত একান্তই রাজি না হলে, প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শ মেনে দিগ্বিজয় সিংহের মতো কারও নাম কার্যনির্বাহী সভাপতি পদের জন্য উঠে আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে কংগ্রেস হাইকমান্ড এতে রাজি হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

কিশোর নিজের পরামর্শে জানিয়েছেন, কংগ্রেসে যাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, তাঁরা সাংগঠনিক নির্বাচনে জিতে আসেননি। অনেকে ভোটেই লড়েন না। কিশোরের মতে, শিবের তাণ্ডব নৃত্যের মতো কংগ্রেসকে পুনরুত্থানের জন্য ছ’টি সিদ্ধান্ত নিতে হবে। জনগণের পছন্দ হয়ে ওঠা, নিজের মতাদর্শ রক্ষা, জড়তা কাটানো, ক্ষমতাকে নিজের প্রাপ্য ভাবার অভ্যাস দূর করা, শীর্ষ নেতৃত্বের চাটুকারিতা বন্ধ করা, দলের মধ্যে দুর্নীতি বন্ধ করা, দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার কাজ করতে হবে।

প্রশান্ত কিশোরের যাবতীয় পরামর্শ খতিয়ে দেখতে চিদম্বরম, প্রিয়ঙ্কা, কে সি বেণুগোপাল, রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা, জয়রাম রমেশ, অম্বিকা সোনি, মুকুল ওয়াসনিককে নিয়ে কমিটি গঠন করেছিলেন সনিয়া। প্রিয়ঙ্কা ও বেণুগোপাল সনিয়ার কাছে তাঁদের রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। সূত্রের খবর, প্রশান্ত কিশোরের কংগ্রেসে নিজের ভূমিকা ছাড়াও তাঁর সঙ্গে আই-প্যাকের সম্পর্ক এবং আই-প্যাকের সঙ্গে তৃণমূল, তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির মতো দলের সম্পর্ক নিয়ে কংগ্রেসের অনেক নেতারই সংশয় রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন