খোশমেজাজে: আদালতের বাইরে বিজয় মাল্য। ছবি: এপি।
প্রত্যর্পণ শুনানিতে হাজিরা দিলেন বিজয় মাল্য। জানালেন, নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার মতো যথেষ্ট প্রমাণ তাঁর হাতে আছে। দাবি করলেন, কোথাও গেলে সমস্যা হয়। কোনও কথা বললেই তা বিকৃত করা হয়। তাই এখন আর সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন না।
ভারতের প্রত্যর্পণ অনুরোধের ভিত্তিতে ৯ হাজার কোটি টাকার ঋণ খেলাপের মামলায় অভিযুক্ত মাল্যের প্রত্যর্পণ নিয়ে শুনানি হচ্ছে ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। আজ মাল্যের হাজিরার খবর থাকায় আদালতের বাইরে ভিড় ছিল সাংবাদিকদের। ছেলে সিদ্ধার্থ, এক সঙ্গিনী ও কয়েক জন সমর্থককে নিয়ে হাজির হন মাল্য। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন কিছু ক্ষণ। জানান, সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বললে বক্তব্য বিকৃত করা হয়। তাই তিনি আর কথা বলেন না। মাল্যের কথায়, ‘‘আমি ক্রিকেট ম্যাচে ভারতকে সমর্থন করতে গেলেও সমস্যা হয়।’’ সম্প্রতি ওভালে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের সময়ে মাল্যকে দেখে ‘চোর, চোর’ বলে চেঁচিয়েছিলেন দর্শকদের একাংশ। মাল্য জানিয়েছেন, কেবল দুই মাতাল তাঁকে ‘চোর, চোর’ বলেছে। অনেকেই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
প্রাক্তন কিঙ্গফিশার কর্তার দাবি, ঋণের টাকা অন্য উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেননি তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘কেউ ১০০ কোটি পাউন্ড চুরি যাওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারেন। কিন্তু তথ্য ছাড়া কিছু প্রমাণ করা সম্ভব নয়।’’
ম্যাজিস্ট্রেট এমা লুইস আরবুথন্টের আদালতে কেবল দু’বার মুখ খুলেছেন মাল্য। নিজের নাম ও জন্মতারিখ নিশ্চিত করতে। আইনজীবীরা জানান, প্রত্যর্পণ মামলা শোনার সময়সীমা স্থির করছেন বিচারক। ব্রিটিশ আইনের পরিভাষায় যার নাম ‘কেস ম্যানেজমেন্ট হিয়ারিং’। মাল্যের আইনজীবীরা আদালতকে জানান, ভারতের কাছ থেকে পুরো তথ্যপ্রমাণ এখনও মেলেনি। দ্বিতীয় একটি প্রত্যর্পণের আর্জিও আসতে পারে। ফলে ২০১৮ সালের মার্চ বা এপ্রিলে চূড়ান্ত শুনানি হওয়া উচিত। এই মামলায় ভারতের প্রতিনিধিত্ব করছে ব্রিটিশ ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিস। তাদের আইনজীবী অ্যারন ওয়াটকিনস সওয়ালে জানান, ডিসেম্বরেই চূড়ান্ত শুনানি হওয়া উচিত। এই মামলায় ভারতের সঙ্গে ব্রিটেনের সহযোগিতা ভাল। ভারত বেশ দ্রুত তথ্যপ্রমাণ, নথিপত্র সরবরাহ করছে।
আরও পড়ুন:কেন্দ্রের ‘উপদেশে’ সবই বন্ধ গর্ভবতীর
বিচারক ৪ ডিসেম্বর চূড়ান্ত শুনানির দিন ধার্য করেন। ৬ জুলাই মামলার ফের শুনানি। বিচারক জানান, তখন সময়সীমার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা হবে। ততক্ষণে ভারতের কাছ থেকে তথ্যপ্রমাণ, প্রত্যর্পণের আর্জি পাওয়ার কাজ শেষ হয়ে গেলে ডিসেম্বরেই চূড়ান্ত শুনানি হবে। মাল্যের আইনজীবীরা জানান, সংবাদমাধ্যমের ভিড়ের ঠেলায় আদালতে ঢোকা মুশকিল হচ্ছে। তা শুনে পরবর্তী শুনানিতে মাল্যকে হাজিরা থেকে রেহাই দেন বিচারক।
বিদেশ প্রতিমন্ত্রী ভি কে সিংহের দাবি, ‘‘মাল্যকে দেশে ফেরানো হবেই। তবে দিনক্ষণ এখনই নির্দিষ্ট করে বলা অসম্ভব।’’ কংগ্রেসের এক নেতার কটাক্ষ, ‘‘মাল্যকে ব্রিটেনে পালিয়ে যেতে সরকারই সাহায্য করেছে। এখন তিনি সেখানে বসে সরকারকেই চ্যালেঞ্জ করছেন।’’