ভোট ঘিরে সরগরম আসাম বিশ্ববিদ্যালয়

ছাত্র সংসদ নির্বাচন ঘিরে সেজে উঠেছে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়। আজ প্রচারের শেষ দিনে দফায় দফায় চলে সভা-সমিতি। আগামী কাল আটটি পদের জন্য ভোটগ্রহণ। একই সঙ্গে বিভাগীয় প্রতিনিধিও নির্বাচিত হবেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলচর শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৫ ০৩:৫০
Share:

ছাত্র সংসদ নির্বাচন ঘিরে সেজে উঠেছে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়। আজ প্রচারের শেষ দিনে দফায় দফায় চলে সভা-সমিতি। আগামী কাল আটটি পদের জন্য ভোটগ্রহণ। একই সঙ্গে বিভাগীয় প্রতিনিধিও নির্বাচিত হবেন। লিংডো কমিশনের সুপারিশ মেনে বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বার প্রথম ছাত্র সংসদ গঠিত হচ্ছে।

Advertisement

২১ সেপ্টেম্বর ছাত্র সংসদ নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। সেই থেকে ছাত্র সংগঠনগুলির তৎপরতা বেড়ে যায়। দৌড়ঝাঁপ শুরু হয় ছাত্রনেতাদের। এর পরও প্রার্থী বাছাইয়ে সবাই হিমশিম হয়। এবিভিপি ছাড়া অন্য কোনও সংগঠন আট জনের প্যানেল ঘোষণা করতে পারেনি। এআইডিএসও এবং এসএফআই জোট বেঁধে দু’টি আসনে লড়ছে। তা-ও সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক পদে নয়। উপ-সভাপতি পদে প্রার্থী দিয়েছে এআইডিএসও। এসএফআই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে ম্যাগাজিন সম্পাদকের জন্য।

গত কাল দুপুর পর্যন্ত কোনও রাজনৈতিক দল নির্বাচনী প্রচারে সক্রিয় ভাবে অংশ নেয়নি। সন্ধেয় আইরংমারায় উপস্থিত হন একঝাঁক বিজেপি নেতা। সেখানে ভাড়াবাড়িতে থাকেন প্রচুর ছাত্রছাত্রী। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক ছাত্ররাও সন্ধেয় ওই এলাকায় ঘোরাফেরা করেন। দফায় দফায় তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন গেরুয়া দলের নেতৃবৃন্দ। কার্যত ছাত্র সংসদ নির্বাচনের জন্যই তড়িঘড়ি গত কাল দুপুরে বিজেপিতে যোগদান করানো হয় আকসা-র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি প্রদীপ দত্তরায়কে। তাঁকে সামনে রেখে এবিভিপি প্রার্থীদের জেতানোর আহ্বান জানানো হয়।

Advertisement

অল কাছাড়-করিমগঞ্জ-হাইলাকান্দি স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (আকসা)-ও পৃথক ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছে। বিজেপি নেতারা মাঠে নামায় আজ অ-বিজেপি প্রার্থীদের কাছাকাছি আসার প্রয়াস চলে। কিন্তু এসএফআই, এআইডিএসও তাতে নেই বলে জানিয়ে দিয়েছে। এনএসইউআই-আকসা চেষ্টা করে চলেছে, আগামী কাল ভোটের আগে ভোটারদের হাতে যৌথ প্যানেলের নাম ধরিয়ে দিতে। এনএসইউআই-র জেলা সভাপতি ইনজামুল হক মজুমদার বলেন, ‘‘সব আসনে আমরা প্রার্থী দিইনি। তবে চেষ্টা করছি, সব আসন যেন এবিভিপি-বিরোধীরা জিততে পারেন।’’ বিরোধীদের সব প্রয়াস ফলপ্রকাশের পর অর্থহীন বলে প্রমাণিত হবে— এমনই দাবি করছেন এবিভিপি-র দক্ষিণ অসম সাংগঠনিক সম্পাদক অপাংশুশেখর শীল। তিনি বলেন, ‘‘লিংডো কমিশনের সুপারিশ মেনে ভোটের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হতেই এনএসইউআই, আকসা হেরে গিয়েছে।’’ তিনি জানান, আগের পদ্ধতিতে প্রথমে বিভাগীয় প্রতিনিধি নির্বাচন করা হতো। নির্বাচিতরা তাঁদের মধ্যে থেকে ছাত্র সংসদের কমকর্তা মনোনয়ন করতেন। ছাত্রছাত্রীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ তাতে ছিল না। তাই এবিভিপি এত দিন বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তাঁরাই চাপ সৃষ্টি করে পদ্ধতির পরিবর্তন ঘটান।

এনএসইউআই ও আকসা-র পক্ষ থেকে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে বিজেপি নেতাদের প্রচারে অংশগ্রহণের সমালোচনা করা হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, কোনও কালে রাজনৈতিক নেতারা এ ভাবে ছাত্র সংসদের নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেননি। এবিভিপি প্রথম বার ভোটে দাঁড়িয়েই শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতি ঢোকাল। একই অভিযোগ করেছেন এআইডিএসও নেতা গৌরচন্দ্র দাসও। প্রচারের শেষ দিনও ছাত্র-ছাত্রীদের ডেকে কোনও বড় সভা হয়নি। সব প্রার্থীই ব্যক্তিগত সংযোগ স্থাপনে গুরুত্ব দিয়েছেন। দিনভর এই বিভাগ থেকে ওই বিভাগে ছুটে বেড়িয়েছেন তাঁরা। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের বাইরেও তৎপর ছিল ছাত্র সংগঠনগুলি। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, আগামী কাল সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা
নেওয়া হয়েছে। অভীক গুপ্তকে চেয়ারম্যান করে নির্বাচন কমিশন তৈরি করা হয়েছে। ওই কমিশন-ই রিটার্নিং অফিসার-সহ অন্যান্যদের নিয়োগ করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন