ভোটের পর বাহিনী সরতেই শুরু সন্ত্রাস

কেন্দ্রীয় বাহিনী সরতেই সন্ত্রাস শুরু হল প্রথম পর্বের ৪৯টি বিধানসভা এলাকায়। গত ১২ অক্টোবর বিহারের দশটি জেলার ৪৯টি কেন্দ্রে প্রথম দফার ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। ভোট শেষ হতেই বাহিনী সেই এলাকা থেকে সরতে শুরু করেছে।

Advertisement

দিবাকর রায়

পটনা শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৫ ০৩:৪১
Share:

কেন্দ্রীয় বাহিনী সরতেই সন্ত্রাস শুরু হল প্রথম পর্বের ৪৯টি বিধানসভা এলাকায়।

Advertisement

গত ১২ অক্টোবর বিহারের দশটি জেলার ৪৯টি কেন্দ্রে প্রথম দফার ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। ভোট শেষ হতেই বাহিনী সেই এলাকা থেকে সরতে শুরু করেছে। আর বাহিনী সরতেই শাসক জোটের দুষ্কৃতীরা গ্রামে গ্রামে হামলা চালানো শুরু করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই স্থানীয় পুলিশ দুষ্কৃতীদের মদত দিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। নির্বাচনের ফল ঘোষণার আগে পর্যন্ত এলাকায় বাহিনী রাখার কথা জানিয়েছিল কমিশন। তাতে ভোটারদের আত্মবিশ্বাস বাড়বে বলে দাবি করেছিলেন কমিশন কর্তারা। কিন্তু কয়েকটি এলাকায় তা না হওয়ায় বিরোধী শিবির ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। নিরাপত্তার দাবিতে আজ সন্ধ্যায় রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন এনডিএ জোটের নেতারা।

কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, নওয়াদা জেলার রাজৌলি থানার পরমচক গ্রামের বাসিন্দা, বছর পঞ্চান্নের বৃদ্ধা কৌশল্যা দেবী বিজেপিকে ভোট দিয়েছিলেন। ভোটের আগে থেকেই বিজেপিকে ভোট না দেওয়ার জন্য হুমকি আসছিল বলে অভিযোগ। ভোট শেষ হওয়ার পরে তিনি বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন জানতে পেরেই এলাকার আরজেডির ছত্রচ্ছায়ায় থাকা দুষ্কৃতীরা তাঁকে মারধর করে। মাকে মার খেতে দেখে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন ছেলে গুড্ডু কুমার। দুষ্কৃতীরা তাঁকেও মারধর করে। খবর পেয়ে গ্রামবাসীরা জড়ো হন। আসেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরাও। তাঁদের সঙ্গে আরজেডি সমর্থকদের মারপিট লেগে যায়। এই ঘটনা নিয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছেন বিজেপি নেতারা। রাজৌলি থানার ওসি সঞ্জীবকুমার গুপ্ত বলেন, ‘‘কৌশল্যা দেবীর বয়ান নেওয়া হয়েছে। সেই বয়ানের ভিত্তিতেই এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।’’ তবে কোনও দুষ্কৃতীকে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়নি।

Advertisement

শুধু পরমচক গ্রামের ঘটনাই নয়, কম করে ২৫টি এলাকায় বিরোধীদের উপরে শাসকদলের হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। অনেক এলাকায় মারধরের ঘটনা না ঘটলেও শাসকদলের আশ্রিত দুষ্কৃতীরা লাগাতার হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ। তবে অনেক ক্ষেত্রেই পুলিশ এফআইআর নিতে চায়নি বলে বিরোধীদের দাবি। নির্বাচনের দিন ১০টি জেলায় প্রায় দেড় লক্ষ কেন্দ্রীয় জওয়ান মোতায়েন করা হয়েছিল। বাহিনীর উপরে ভরসা রেখেই বিপুল হারে ভোট দিতে আসেন ভোটারেরা। বিহারের মাওবাদী প্রভাবিত এলাকাগুলিতেও রেকর্ড পরিমাণ ভোট পড়ে। স্বাভাবিক ভাবেই নির্বাচন কমিশনের ভূমিকার প্রশংসা করেছিল সব মহলই। কিন্তু ভোটের পরে ভোটারদের নিরাপত্তা দেওয়ায় কিছুটা হলেও কমিশনের খামতি রয়েছে বলে দাবি করল সংশ্লিষ্ট মহল। রাজ্যের সহকারী মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আর লক্ষ্মণন বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন