অমিতের সফর হতাশই করল বিরসা মুণ্ডার গ্রামকে

দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের গ্রামগুলোকে মডেল গ্রাম বানানোর পরিকল্পনা নিয়েছে বিজেপি সরকার। সেই অনুযায়ী ঝাড়খণ্ডের ১৯টি গ্রাম মডেল গ্রাম হবে। মডেল গ্রামের সব বাড়িই হবে পাকা। এ দিন অমিত বিরসার বংশধর সুকরা মুণ্ডার পাকা বাড়ির ভিত পুজো করে বিরসা মুণ্ডার গ্রাম উলাহাতুকে মডেল গ্রাম বানানোর শুভ সূচনা করেন।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

রাঁচী শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ২০:৪৩
Share:

বিরসা মুণ্ডার গ্রামে অমিত শাহ। —নিজস্ব চিত্র।

তাঁর আসার কথা সকাল দশটা নাগাদ। মাদল বাদক গারু মুণ্ডা তাঁর নাচ ও গানের দলবল নিয়ে বিরসা মুণ্ডার ঘরের সামনে ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলেন সকাল দশটা থেকেই। মাঝেমধ্যেই ছোটো বড় নেতার আগমনে মাদল বেজে উঠছে। কিন্তু আজকের বিশেষ অতিথি কোথায়?

Advertisement

আরও পড়ুন

দলের হুইপ মানতে হবে ঋতব্রতকে

Advertisement

মন্ত্রীর বোনই আক্রান্ত

শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত সময়ের দেড় ঘণ্টা পরে এলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। ভাদ্র শেষের তীব্র গরমে ঠায় দাঁড়িয়ে তখন গারু মুণ্ডার দলের ছেলে মেয়েরা ক্লান্ত। কিন্তু তার মধ্যেও মাদল বেজে উঠল। মেয়েরা নাচল মাদলের তালে তালে। গান নাচের শেষে গাড়ু বলেন, ‘‘শুধু নাচ গান দেখানোই নয়, ইচ্ছা ছিল অমিত শাহকে আমাদের গ্রামের সমস্যার কথা সরাসরি বলার। কিন্তু সেই সুযোগ তো মিলল না!’’

দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের গ্রামগুলোকে মডেল গ্রাম বানানোর পরিকল্পনা নিয়েছে বিজেপি সরকার। সেই অনুযায়ী ঝাড়খণ্ডের ১৯টি গ্রাম মডেল গ্রাম হবে। মডেল গ্রামের সব বাড়িই হবে পাকা। এ দিন অমিত বিরসার বংশধর সুকরা মুণ্ডার পাকা বাড়ির ভিত পুজো করে বিরসা মুণ্ডার গ্রাম উলাহাতুকে মডেল গ্রাম বানানোর শুভ সূচনা করেন। তীব্র গরমের মধ্যে পুরোহিতের সঙ্গে পুজোয় বসে রীতিমতো ঘেমে নেয়ে গিয়েছিলেন অমিত। প্রায় পনেরো মিনিট ধরে চলে পুজো। বিরসা যে ঘরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, সেই ঘরে গিয়ে বিরসার মুর্তিতে মালা দিয়ে প্রণামও করেন অমিত। এর পরে গ্রামে একটি সভায় ভাষণ দেন। কিন্তু নিরাপত্তার বেড়াজালে থাকা অমিতের সঙ্গে কোনও গ্রামবাসীই কথা বলতে পারেননি।

দেখুন ভিডিও

শুধু গ্রামবাসীরাই নয়, কথা বলার সুযোগ পাননি বিরসার নাতি সুকরা মুণ্ডাও। এ দিন ওই গ্রামে যে সভা হয় তাতে সুকরা অমিত শাহ, মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাস-সহ অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে স্টেজে বসেছিলেন। বিজেপি সভাপতি তাঁকে উপহার স্বরূপ চাদর দেন। কিন্তু অমিতের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলার সুয়োগ মেলে নি সুকরার। সুকরা বলেন, ‘‘এখনও কথা হয়নি। দেখি যদি পরে বলা যায়।’’

অমিত শাহকে স্বাগত জানানোর প্রস্তুতি বিরসা মুণ্ডার গ্রামে।

এত বড় নেতা এলেন গ্রামে, কিন্তু সরাসরি কথা বলার সুযোগ না মেলায় মুষড়ে পড়েছেন গ্রামবাসীরা। তাঁরা জানালেন, গত দু’দিন ধরে গ্রামে আলো, পানীয় জল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র সব একদম ঠিকঠাক চলছে। এক গ্রামবাসী বলেই ফেললেন, ‘‘কেন এ সব ঠিক মতো আছে সেতো আমরা সবাই জানি। ভিআইপি চলে যাবেন। আর এ সব পরিষেবাও ভ্যানিশ হয়ে যাবে। আমরা যদি সরাসরি আমাদের সমস্যার কথা বলতাম তা হলে হয়তো সুরাহা হতো। কিন্তু তা হল না।’’
অমিতের এ দিন ওই গ্রামে বিরসার বংশধরের বাড়িতে দুপুরের খাবার কথা থাকলেও পরে তা বাতিল হয়। অনুষ্ঠান শেষে অমিত হেলিকপ্টারে চেপে চলে যান রাঁচী। সেখান থেকে আজই তাঁর দিল্লি ফেরার কথা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন