কেমব্রিজ কাণ্ডে সরব রাহুল, থামছেন না রবি

কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী আজ টুইটারে অভিযোগ করেন, নীরব মোদী-কাণ্ড, রাফাল চুক্তি এবং সর্বশেষ ইরাকে ৩৯ জন ভারতীয়ের মৃত্যু থেকে নজর ঘোরাতেই কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা নিয়ে হইচই করছে বিজেপি।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৮ ০৫:৫৬
Share:

‘তথ্য-জাল’ কেটে বেরিয়ে আসার চেষ্টায় পরস্পরকে দোষারোপ করে চলেছে বিজেপি-কংগ্রেস দু’পক্ষই।

Advertisement

কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী আজ টুইটারে অভিযোগ করেন, নীরব মোদী-কাণ্ড, রাফাল চুক্তি এবং সর্বশেষ ইরাকে ৩৯ জন ভারতীয়ের মৃত্যু থেকে নজর ঘোরাতেই কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা নিয়ে হইচই করছে বিজেপি। আর সংবাদপত্রের রিপোর্ট হাতে নিয়ে মাঠে নামেন আইন ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। অভিযোগ, গুজরাত বিধানসভা ভোটের সময়ে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকাকে ব্যবহার করেছিল কংগ্রেস। কংগ্রেসের রণদীপসিংহ সুরজেওয়ালার পাল্টা, ‘‘হিটলারের যেমন গোয়েবলস ছিলেন, নরেন্দ্র মোদীর তেমন রবিশঙ্কর!’’

রবিশঙ্করই গতকাল দাবি করেছিলেন, রাহুলের সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার সামলায় কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা। কংগ্রেস সভাপতি কাল কিছু না বললেও আজ সকালেই তাঁর টুইট, ‘সমস্যা: ৩৯ ভারতীয় মৃত। কাঠগড়ায় সরকার, তাদের মিথ্যে কথা ধরা পড়ে গিয়েছে। সমাধান: কংগ্রেস ও তথ্য চুরি নিয়ে নতুন গল্প ফাঁদা। সমস্যা শেষ।’

Advertisement

জবাব দিতে দেরি করেননি কেন্দ্রীয় তথ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘‘রাহুল গাঁধী যে ভাষায় বলতেন, ‘গব্বর সিংহ ট্যাক্স’, ‘বিকাশ পাগল হয়ে গিয়েছে’, আরও কত কী... সেগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছিল কারা? সোশ্যাল মিডিয়ায় রাহুলের প্রচার সামলাতে সাহায্য করেছিল কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা। ওদের একাধিক বার দেখাসাক্ষাৎও হয়েছিল।’’ সেই অভিযোগ সঙ্গে সঙ্গেই খারিজ করেন শশী তারুর। এআইসিসি-র ওভারসিজ সেলের প্রধান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ স্যাম পিত্রোদার টুইট, ‘উত্তেজক খবর করতেই ব্যাপারটাকে বড় করে দেখানো হচ্ছে।’

বিজেপির সঙ্গে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার যোগাযোগের কথা অবশ্য সংস্থার ভারতীয় শাখার ডিরেক্টরের লেখায় গতকালই জানা গিয়েছিল। সংস্থার ওয়েবসাইটেও দেখা যাচ্ছে, তাদের ক্লায়েন্ট হিসেবে বিজেপি, কংগ্রেস ও নীতীশ কুমারের জেডিইউ-এর নাম রয়েছে। ওয়েবসাইটের দাবি অনুযায়ী, ২০১০ সালে বিহার ভোটের সময়ে একটি রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করেছিল তারা। যদিও কোন দল, তা উল্লেখ করা নেই। শুধু লেখা হয়েছে, ‘বিপুল ভোটে জিতেছিল ওরা। লক্ষ্যমাত্রার ৯০ শতাংশেরও বেশি আসন পেয়েছিল।’ উল্লেখ্য, ২০১০ সালের নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে জিতেছিল জেডিইউ।

অভিযোগ, জেডিইউ-এর সাধারণ সম্পাদক কে সি ত্যাগীর ছেলে অমরীশের সংস্থার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে কেমব্রিজ অ্যানালটিকা এবং তার সিইও অ্যালেকজান্ডর নিক্সের। সেই সূত্রেই নীতীশের সঙ্গে বৈঠক হয়েছিল। কে সি অবশ্য সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

তবে শুধু ওয়েবসাইটের দাবিই নয়, অ্যানালিটিকা-যোগের আরও অভিযোগ উঠছে বিজেপির বিরুদ্ধে। বিরোধীরা উল্লেখ করছেন, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি টুইটারে ফলো করেন ওই সংস্থাকে। তথ্যপ্রযুক্তি সেলের প্রাক্তন প্রধান তথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘মাই গভ’-এর সিইও অরবিন্দ গুপ্ত এক সময়ে টুইট করেছিলেন, ‘খুবই শক্তিশালী মাধ্যম কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা। ঠিক মতো ব্যবহার করা গেলে এর প্রভাব ব্যাপক।’ যদিও রবিশঙ্করের কথায়, ‘‘বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হয়েছে। দলের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ ঠিক নয়। যদি কেউ ফেসবুকে কারও সম্পর্কে ঢাক পেটায়, সেটা কতটা যথার্থ, তা ফেসবুক বা ওই সংস্থার খতিয়ে দেখা উচিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন