আরও এক ‘নেতাজি’! এ বার বিদরের লালধারী মুত্যা

সম্প্রতি কর্নাটকের বিদারে একটি আশ্রমের ‘গোপন ঘর’ থেকে উদ্ধার হয়েছে সেনা উর্দি, টুপি, জ্যাকেট, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার জার্মানিতে তৈরি হাতঘড়ি, ১৯৩২ সালে বানানো কম্পাস এবং একটি ফরাসি দূরবীন। আর এগুলি পাওয়ার পর থেকেই নতুন একটা জল্পনা দাঁনা বাঁধতে শুরু করেছে স্থানীয় মানুষদের মনে। আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা লালধারী মুত্যা (মুত্যা শব্দের অর্থ বৃদ্ধ) কি আসলে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু!

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৬ ২১:৫৯
Share:

সম্প্রতি কর্নাটকের বিদারে একটি আশ্রমের ‘গোপন ঘর’ থেকে উদ্ধার হয়েছে সেনা উর্দি, টুপি, জ্যাকেট, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার জার্মানিতে তৈরি হাতঘড়ি, ১৯৩২ সালে বানানো কম্পাস এবং একটি ফরাসি দূরবীন। আর এগুলি পাওয়ার পর থেকেই নতুন একটা জল্পনা দাঁনা বাঁধতে শুরু করেছে স্থানীয় মানুষদের মনে। আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা লালধারী মুত্যা (মুত্যা শব্দের অর্থ বৃদ্ধ) কি আসলে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু!

Advertisement

নেতাজি রহস্যের যেন কোনও শেষ নেই! তাইহোকুতে বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু হয়েছিল কিনা তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা কাটেনি। এরই মধ্যে নেতাজিকে নিয়ে নতুন করে জল্পনা উস্কে উঠেছে কর্নাটকের বিদারের ওই মৃত প্রবীণকে ঘিরে।

ওই বৃদ্ধকে হঠাত্ করে নেতাজি মনে করার কী কারণ!

Advertisement

আশ্রমের ভক্তরা যাঁরা লালধারী মুত্যাকে কাছ থেকে দেখেছেন তাঁরা বলছেন, বৃদ্ধ নাকি সারা ক্ষণ স্বাধীনতা সংগ্রামের নানা কথা বলতেন। খুব ঘটা করে স্বাধীনতা দিবস পালন করতেন আশ্রমের সকলকে নিয়ে। নেতাজির ছবি দেখিয়ে সবাইকে প্রশ্ন করতেন ‘এঁকে চেনো?’ উত্তরে যেই কেউ বলত ‘কেন চিনবো না! ইনি তো নেতাজি।’ উত্তর শুনে অদ্ভুত প্রশান্তিতে ভরে যেত বৃদ্ধের মুখ।

লালধারী মুত্যার সেই আশ্রম এখন দেখভাল করেন সন্তরাম মুরজানি। তাঁর থেকে জানা গেল লালধারি মুত্যার সম্পর্কে আরও কিছু তথ্য। সন্তরাম মুরজানি জানান, ১৯৭১ সালে সেনার উর্দি গায়ে এই বৃদ্ধকে মহারাষ্ট্রের শোলাপুরের এক বাসস্ট্যান্ডে দেখতে পান তাঁর বাবা আতমুল মুরজানি। ভাল লাগায় তিনি তাঁকে নিয়ে আসেন নিজের বাড়িতে। চোদ্দ বছর ওই বৃদ্ধ অতিথি হয়ে থাকেন মুরজানি পরিবারে। পরে চলে যান কর্নাটকের বিদারে। বিদারের হুমানাবাদে লালধারীতে একটা আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন যা দেখতে অনেকটা জাতীয় সংসদ ভবনের মতো। ১৩ মে ২০০১ মারা যান ওই বৃদ্ধ। ৩২টা মিনারওয়ালা এই বাড়িতেই মৃত্যুর পরে সমাহিত করা হয় লালধারি মুত্যাকে।

এলাকার মানুষ তাঁকে লালধারী মুত্যা নামে ডাকলেও বৃদ্ধের আসল নাম কেউ জানত না। কোথা থেকে তিনি টাকা পেতেন তা নিয়েও ছিল ধোয়াঁশা। কেউ তাঁর সঠিক বয়স জানত না। অনেকেই বলত বৃদ্ধের বয়স একশো পেরিয়েছে। বৃদ্ধের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন এই সন্তরাম। এ বছরের জানুয়ারি মাসেই আশ্রমের একটি ‘গোপন ঘর’ থেকে একটি লোহার বাক্সে এই জিনিসগুলি খুঁজে পান সন্তরাম। তার পর তার মনেও সন্দেহ দানা বাঁধে তাহলে মুত্যা কি আসলে নেতাজি! নিজের শৈশবে মুত্যার সঙ্গে কাটানো কিছু কথা যেন হঠাত্ করেই মনে পড়ে গেল সন্তরামের।

এর পরই তিনি উদ্যোগী হন সেনা উর্দি, টুপি, জ্যাকেট, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার জার্মান হাতঘড়ি— এ সবের সঙ্গে আজাদ হিন্দ বাহিনীর নেতাজির কোনও সম্পর্ক আছে কিনা তা অনুসন্ধানে! সন্তরাম আরও জানান, এর সঙ্গে বাড়িতে মিলেছে বৃদ্ধের দাঁত এবং চুল। স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে সন্তরাম আবেদন জানিয়েছেন, এই সব নমুনার ডিএনএ পরীক্ষার ব্যবস্থা করার জন্য। আবেদন জোরালো করতে সন্তরাম সাক্ষাৎ করেছেন নেতাজির পরিবারের সঙ্গেও। শৌলমারির সেই সন্নাসীর মতো বার বার নানা জায়গায় নানা রূপে নেতাজিকে ‘খুঁজে পেয়েছেন’ দেশের মানুষ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জল্পনা রহস্যে আর রহস্য ইতিহাসে ঠাঁই পেয়েছে। কিন্তু নেতাজি মৃত্যু রহস্য আজও রহস্যই রয়ে গিয়েছে। যাঁর কিনারা কবে হবে কারও জানা নেই!

আরও খবর...
দেশে যুদ্ধবিমানের ককপিটে প্রথম তিন মহিলা!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন