ফাইল চিত্র।
কাশ্মীর উপত্যকায় সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার জন্য টাকা জোগানোর অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। সপ্তাহখানেক আগে কাশ্মীরি শিল্পপতি জাহরুর আহমেদ শাহ ওয়াটালিকে গ্রেফতার করেছিল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। গোয়েন্দাদের দাবি, জেরায় ওয়াটালি স্বীকার করেছেন, ১৯৯৯ সালে কার্গিল যুদ্ধের সময় ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতা করার দায়িত্ব তাঁর হাতে তুলে দিয়েছিলেন হুরিয়ত নেতারা।
প্রয়াত বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা আব্দুল গনি লোনের ঘনিষ্ঠ ছিলেন ওয়াটালি। তাঁর দাবি, নিজেদের বৈধতা প্রমাণ করতে কার্গিল যুদ্ধে দু’দেশের মধ্যে মধ্যস্থতার ব্যবস্থা করেছিল হুরিয়ত। তৎকালীন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের কাছে গনির লেখা একটি চিঠি পৌঁছে দিয়েছিলেন ওই শিল্পপতি। ব্যবসার কাজে পাকিস্তান ও উপসাগরীয় দেশগুলিতে প্রায়ই যেতে হতো তাঁকে। সেই সূত্রে পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গেও পরিচয় ছিল তাঁর।
সূত্রের খবর, ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের উপস্থিতি নিশ্চিত করতেও তিনি সদর্থক ভূমিকা নিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন ওয়াটালি।
২০০২ সালের মে মাসে শ্রীনগরের এক মিছিলে খুন হন আব্দুল গনি লোন। তার আগে লোনের চিকিৎসার সময়ে তাঁর সঙ্গে আমেরিকা গিয়েছিলেন ওয়াটালি। ওই শিল্পপতির দাবি, সেখানেই বেনজির ভুট্টো-সহ একাধিক পাক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সঙ্গে দেখা হয় তাঁদের। ভুট্টোকে লোন জানিয়েছিলেন, বরাবরই তিনি স্বাধীন কাশ্মীরের পক্ষে। কিন্তু যদি সে সুযোগ না হয়, তা হলে তাঁরা ভারতের সঙ্গে থাকাই পছন্দ করবেন। ওয়াটালির আরও দাবি, প্রাক্তন পাক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশারফ ও তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর মধ্যে আগরা সম্মেলনে আলোচনার রাস্তা খুলে দেওয়ার পিছনেও তাঁর সদর্থক ভূমিকা ছিল। পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট সর্দার মোহম্মদ আবদুল কায়ুম খানের সঙ্গে সে বার দেখা করে দু’দেশের মধ্যে মধ্যস্থতার প্রস্তাব রেখেছিলেন ওয়াটালি। কায়ুম তার পর দু’দেশের নেতাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলে আগরায় আলোচনায় বসানোর জন্য রাজি করেন বলে দাবি করেছেন ধৃত শিল্পপতি। তবে ওয়াটালির সব দাবি সত্য কি না, তা নিয়ে মুখ খোলেননি এনআইএ-র গোয়েন্দারা। তাঁর বক্তব্যের সমর্থন মেলেনি হুরিয়ত নেতাদের থেকেও।