TMC

‘পশ্চিমবঙ্গে কী ভাবে নিরীহদের হত্যা করা হচ্ছে তা জানা আছে’

তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করছেন, ‘‘ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজনের চক্রান্ত রুখতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পথে নামাই প্রধানমন্ত্রীর ক্ষোভের কারণ।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:২১
Share:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৃহস্পতিবার সংসদে। পিটিআই

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে গত ক’দিন ধরে সংসদে

Advertisement

ও সংসদের বাইরে সরব ছিলেন রাজ্যের বিজেপি সাংসদেরা। আজ সেই প্রসঙ্গে সংসদে মুখ খুললেন খোদ নরেন্দ্র মোদী। লোকসভায় প্রধানমন্ত্রী বললেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে কী ভাবে নিরীহ মানুষদের হত্যা করা হচ্ছে তা দেশের লোকের ভালই জানা আছে।’’

তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করছেন, ‘‘ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজনের চক্রান্ত রুখতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পথে নামাই প্রধানমন্ত্রীর ক্ষোভের কারণ।’’

Advertisement

বছর ঘুরলেই রাজ্যে নির্বাচন। তৃণমূলকে হারিয়ে ক্ষমতা দখলে মরিয়া মোদীরা। তাই আজ লোকসভায় রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার ধন্যবাদজ্ঞাপন বিতর্কের জবাবে সব রাজ্য ছেড়ে পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে সরব হন প্রধানমন্ত্রী। তা-ও দিল্লির শাহিন বাগ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে। মমতাই একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী যাঁর নাম নেন তিনি। তবে কিছুটা মজার ছলে। যা দেখে সিপিএম নেতৃত্ব বলছেন, ফের মোদী-দিদি গট আপ খেলা সামনে এল।

আরও পড়ুন: সিএএ সমর্থনে হাতিয়ার ২ বাঙালি

আজ লোকসভায় শাহিন বাগের নাম না-করেই সমালোচনায় সরব হন মোদী। এমন সময় তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘‘শাহিন বাগে গুলি চালানো অনুচিত।’’ থমকে যান প্রধানমন্ত্রী। কয়েক সেকেন্ডে নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে সৌগতবাবুর উদ্দেশে বলেন, ‘‘দাদা, পশ্চিমবঙ্গের পীড়িত লোকেরা এখানেই রয়েছে। ওখানে কী চলছে, তা ফাঁস করে দিলে সমস্যায় পড়ে যাবেন। নির্দোষ লোকেদের কী ভাবে হত্যা করা হচ্ছে, তা দেশ জানে।’’ এ নিয়ে আর বিশেষ ব্যাখ্যায় না-গেলেও পরে তৃণমূল নেত্রীর নাম উল্লেখ করেন মোদী। তবে মজার ছলে। কংগ্রেসকে করা একটি প্রশ্নের উত্তর সৌগত রায় দিতেই মোদী হাসতে হাসতে বলেন, ‘‘দাদা! আপনি কি কংগ্রেসে যোগদান করেছেন? দিদি কিন্তু ভাষণ শুনছেন!’’ হেসে ওঠে গোটা লোকসভা।

সংসদ অধিবেশন শুরুর আগেই পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ে সংসদে ও সংসদের বাইরে সরব হওয়ার জন্য রাজ্যের বিজেপি নেতাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। আর আজ তিনি নিজেই তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানানোয় উৎসাহিত বাংলার বিজেপি সাংসদেরা একসঙ্গে উঠে দাঁড়ান। কিন্তু মোদী খুব

দ্রুত প্রসঙ্গান্তরে চলে যাওয়ায় খেই হারিয়ে বসে পড়েন তাঁরা। সাধারণত মোদীর আক্রমণ যেমন চাঁছাছোলা হয়ে থাকে, এ দিন অবশ্য তা মনে হয়নি। রাজনীতির অনেকের মতে, প্রধানমন্ত্রী বুঝিয়ে দিয়েছেন, এই মুহূর্তে মমতার রাজ্য নিয়ে বিশেষ কথা তিনি বাড়াতে ইচ্ছুক নন। কিন্তু সেখানকার ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি’ সম্পর্কে তিনি ওয়াকিবহাল। এখন আক্রমণের ক্ষেত্র প্রস্তুত

হচ্ছে। সঠিক সময়ে এ প্রসঙ্গে মুখ খুলবে বিজেপি।

পাল্টা জবাবে সুদীপবাবু বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘ সময় ধরে রাজ্যকে শুধু আক্রমণই নয়, বিভিন্ন দিক থেকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের এনআরসি-সিএএ নীতির বিরুদ্ধে মমতাই পথে নেমেছেন। দেখাদেখি সরব হয়েছেন অন্য মুখ্যমন্ত্রীরা। পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়ায় ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন