Environment

পরিবেশ ধ্বংসের ফল ভুগছি

বেঙ্গালুরুর তথ্যপ্রযুক্তির প্রায় ৭০ ভাগ অফিস এ দিকেই। বড় বড় টেকনোলজি পার্ক তৈরি হয়েছে গোটা এলাকা জুড়ে। কিন্তু এ দিকেই সব থেকে খারাপ অবস্থা। আমাদের অফিস ইয়েমালুর এলাকায়।

Advertisement

পৌষালী গুহ

বেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:১৭
Share:

ট্র্যাক্টর ও ক্রেনের শরণাপন্ন হয়েছেন অফিসযাত্রীরা। মঙ্গলবার বেঙ্গালুরুর ইয়েমালুরে। পিটিআই

বেহাল পরিকাঠামো আর পরিবেশ নির্বিচারে ধ্বংস করলে তার ফল যে কী মারাত্মক হতে পারে, এ বারের বৃষ্টিতে বেঙ্গালুরুতে বসে খুব ভাল করে বুঝতে পারছি। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে মেট্রো রেলের কাজ আর কাবেরী নদীর জল আনার প্রকল্পের লাইন বসানো —এর জেরে বেঙ্গালুরু শহরটা জুড়ে রাস্তা ছিন্নবিচ্ছিন্ন। ৫ কিলোমিটার পথ যেতে সময় লাগে ৪০ মিনিট। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে অঝোর ধারার বৃষ্টি। বিশেষ করে মহাদেবপুরা, মারাঠাল্লি, ইয়েমালুর, বেলান্দুর, সারজাপুর —বেঙ্গালুরুর দক্ষিণ-পূর্ব দিকের এই এলাকার অবস্থা এতটাই খারাপ যে গত সোমবার ট্র্যাক্টর করে অনেককে অফিস যেতে হয়েছে।

Advertisement

বেঙ্গালুরুর তথ্যপ্রযুক্তির প্রায় ৭০ ভাগ অফিস এ দিকেই। বড় বড় টেকনোলজি পার্ক তৈরি হয়েছে গোটা এলাকা জুড়ে। কিন্তু এ দিকেই সব থেকে খারাপ অবস্থা। আমাদের অফিস ইয়েমালুর এলাকায়। এই মুহূর্তে অফিসের বেসমেন্ট-সহ একতলা জলের তলায়। সীমানা দেওয়াল ভেঙে গিয়ে জল ঢুকেছে। বিদ্যুৎ নেই। তাই পাম্প চালিয়ে জল বার করা যাচ্ছে না। অফিস থেকে আমাদের অনির্দিষ্ট কালের জন্য আসতে বারণ করে দেওয়া হয়েছে। সকলেই এখন 'ওয়ার্ক ফর্ম হোম' করছি।

এই পরিস্থিতির কারণ খুঁজতে গেলে প্রথমেই যা চোখের সামনে আসবে, তা হল বেআইনি নির্মাণের বাড় বাড়ন্ত। লেক বুজিয়ে, এমনকি, নর্দমা বুজিয়েও বড় বড় বাড়ি, অফিস বিল্ডিং, শপিং মল তৈরি করা হয়েছে। রাস্তাঘাটে যেখানে সেখানে বর্জ্যের স্তূপ। বেআইনি ভাবে সরকারের চোখের সামনেই এই সব বাড়ি তৈরির নকশা হয়েছে। অনেক রাস্তাতেই খানাখন্দ ভর্তি।

Advertisement

মেট্রো রেলের কাজ যতটা ধীর গতিতে করা সম্ভব, তাই হচ্ছে। ঘরে ঘরে কাবেরীর জলের সংযোগ যাচ্ছে, তার জন্য এককালীন ট্যাক্সও নিচ্ছে সরকার। কিন্তু কবে যে সেই জল আসবে, তা কেউ জানে না। সামান্য কিছু জায়গায় জল সরবরাহ চালু হলেও বেশির ভাগ জায়গায় হয়নি।

ইতিমধ্যেই কিছু সংস্থা সরকারকে চিঠিতে জানিয়েছে, প্রতি দিনের জ্যামে তাদের ২০০ কোটির বেশি ক্ষতি হয়েছে, এ ভাবে চললে অফিস সরিয়ে নিতে বাধ্য হবে তারা। সরকারি অবহেলাই এই পরিস্থিতির আসল কারণ। এত অফিস, এত লোকের নিত্য যাতায়াত যে দিকে, সে দিকেই এই অবহেলা! এখানে বৃষ্টি বিকেলে বেশি হয় আর সকাল থেকে রোদ। তার পরও জল নামছে না। কারণ, যথাযথ কোনও পরিকল্পনা নেই। জল বেরিয়ে যে কোথায় যাবে তা নিয়েও কোনও ভাবনা নেই। দক্ষিণ-পশ্চিম এবং মধ্য বেঙ্গালুরুতে মূলত সরকারি কর্মচারীদের বসবাস। সেখানে এত সমস্যা হচ্ছে না।

শুধু বাড়ি, টেকনোলজি পার্ক বানিয়ে বিনিয়োগ আনলেই হবে না, তাকে টিকিয়ে রাখতে এই শহরের পরিকাঠামো ঠিক করতেই হবে।

(লেখক তথ্য-প্রযুক্তি কর্মী)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন