ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি, ফের কি বিপদে পড়বে পশ্চিমবঙ্গ!

প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত বিহার ও বিহারের লাগোয়া উত্তরপ্রদেশের পূর্ব অংশও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৪০
Share:

ছবি: এএফপি।

প্রতিবেশী ঝাড়খণ্ডে লাগাতার বৃষ্টির ফলে ফের কি বিপদে পড়বে পশ্চিমবঙ্গ! ঝাড়খণ্ড প্রশাসন জানাচ্ছে, এখনও বিপদসীমা ছাড়ায়নি বাঁধগুলি। তবে লাগাতার বৃষ্টিতে ঝাড়খণ্ডের বাঁধগুলোর জলস্তর ক্রমশ বাড়ছে। এ রকম লাগাতার বৃষ্টি চললে পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে মনে করছেন মাইথন বাঁধের ইঞ্জিনিয়াররা।

Advertisement

মাইথন বাঁধের সুপারিন্টেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার কে কে ঝা বলেছেন, ‘‘যে ভাবে এখনও বৃষ্টি হয়ে যাচ্ছে তা যথেষ্ট চিন্তার। আমরা পশ্চিমবঙ্গকে বাঁচাতে খুবই চেষ্টা করছি। তাই বাঁধগুলো থেকে জল যতটা পারা যায় কম ছাড়া হচ্ছে। কিন্তু লাগাতার বৃষ্টি যদি চলতে থাকে, তা হলে পরিস্থিতি কী হবে, তা ভবিষ্যতই বলবে।’’ রাঁচীর মৌসম বিভাগ জানাচ্ছে আগামী ২ অক্টোবর পর্যন্ত বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত বিহার ও বিহারের লাগোয়া উত্তরপ্রদেশের পূর্ব অংশও। এই দুই রাজ্যে মৃত্যু বেড়েই চলেছে। চলছে বৃষ্টিও। গত চার দিনে বিহার ও উত্তরপ্রদেশ মিলিয়ে মোট ৮৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আজই পটনা, ভাগলপুর ও কৈমুর জেলায় প্রবল বৃষ্টিতে বাড়ি ভেঙে ও গাছ পড়ে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। পটনার কঙ্করবাগ, মিঠাপুর, ইন্দ্রপুরী, পটেলনগর জলমগ্ন। কয়েকটি এলাকায় নৌকা ও ভেলা চলছে। পটনার এনএমসিএইচ হাসপাতালের ভিতরে জল। সোশ্যাল মিডিয়ার ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, রোগীর বেডের ছ’ইঞ্চি নীচে জল থইথই। ভাগলপুরে মারা গিয়েছেন ৩ জন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিহারে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ১৮টি দল নামানো হয়েছে। বিহারের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী। রাজ্য সরকার ও স্থানীয় প্রশাসন বন্যা দুর্গতদের সাহায্য করতে প্রয়োজনীয় ত্রাণের ব্যবস্থা করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।

Advertisement

বন্যা বিপর্যস্ত: জলে ডুবেছে পথঘাট। বৃষ্টি মাথায় করেই ভেলায় চলছে যাতায়াত। রবিবার পটনার শাখা ময়দান এলাকায়। ছবি: পিটিআই।

উত্তরপ্রদেশে এ পর্যন্ত ৪৭ জন, যার মধ্যে শুধু গত কালই ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বৃষ্টি ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কারণে। বন্যা পরিস্থিতি গুজরাতের রাজকোট জেলাতেও। আজ সকালে জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে একটি গাড়ি। এতে এক পরিবারের তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। গাড়িটির চতুর্থ আরোহীকে স্থানীয়েরা উদ্ধার করেছেন। তাঁর অবস্থাও আশঙ্কাজনক। শনিবার রাতে গির সোমনাথ জেলায় আরব সাগরের উপকূলে নৌকাডুবি হওয়ায় খোঁজ মিলছে না চার মৎস্যজীবীর।

ঝাড়খণ্ডে দামোদরের জল বাড়ায় জলস্তর বেড়েছে মাইথন, পাঞ্চেত ও তেনুঘাট বাঁধের। মাইথন বাঁধের জনসংযোগ আধিকারিক বিজয় কুমার জানিয়েছেন, মাইথন বাঁধের এখনও পর্যন্ত ৮টি গেট খোলা হয়েছে। জল ছাড়া হয়েছে ৪৫ হাজার কিউসেক। জলস্তর পৌঁছেছে ৪৯০ ফুট পর্যন্ত। এই বাঁধের বিপদসীমা ৪৯৫ ফুট। বৃষ্টি একই ভাবে চলতে থাকলে জলস্তর বিপদসীমা ছুঁয়ে যেতে পারে। পাঞ্চেত থেকে ২০ হাজার কিউসেক ও তেনুঘাট থেকে ৩০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। পাঞ্চেত বাঁধের জলস্তর বেড়ে ৪১৯ ফুটের মতো হয়েছে। এই বাঁধের বিপদসীমা ৪২৫ ফুট। তেনুঘাটের জলস্তর বিপদসীমা ছুঁয়েছে বলে জানিয়েছেন মাইথন বাঁধের সুপারিন্টেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার।

টানা বৃষ্টিতে ফুঁসছে সুবর্ণরেখাও। জামশেদপুরের কাছে সুর্বণরেখার উপরে চান্ডিল বাঁধের জলস্তর বাড়ায় দু’টি গেট খোলা হয়েছে। জল ছাড়া হচ্ছে গালুডি বাঁধ থেকেও। সুবর্ণরেখার উপকূলবর্তী জামশদেপুরের মানগো, সোনারি, কদমার বেশ কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন