সাড়ে দশ হাজার শাড়ি!
সাড়ে সাতশো চটি!
আর পাঁচশো ওয়াইন গ্লাস!
তামিলনাড়ুর রাজনীতির সঙ্গে এগুলোর ভবিষ্যৎও এখন অনিশ্চিত। কারণ এই বহুমূল্য শাড়ি, জুতো এবং ওয়াইন গ্লাসের মালকিন ‘আম্মা’ যে আর নেই!
১৯৯৬ সালে অভিযান চালিয়ে জয়ললিতার বাড়ি থেকে হিসাব-বহির্ভূত সম্পত্তি উদ্ধার করে আয়কর দফতর। উদ্ধার হওয়া সেই সম্পত্তির মধ্যেই ছিল আম্মার শাড়ি, চটি এবং ওয়াইন গ্লাস। ২০০২ সালে আয়কর দফতর ওই সম্পত্তি সরকারের হাতে তুলে দিয়েছিল।
হিসাব-বহির্ভূত সম্পত্তি রাখার অভিযোগে এডিএমকে নেত্রীর বিরুদ্ধে মামলাও করা হয়েছিল। এখন তাঁর মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই সেই বিতর্কও ঝিমিয়ে আসছে। কিন্তু তাঁর অগুন্তি শাড়ি, জুতো এখনও কর্নাটকের আদালতের হেফাজতে রয়েছে। ওই সব সম্পত্তির কী হবে, তা নিয়ে নাজল্পনা শুরু হয়েছে দলের অন্দরে।
কর্নাটকের অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল এ এস পোন্নান্না জানিয়েছেন, আদালতে যদি অভিযুক্তরা দোষী সাব্যস্ত হন, তা হলে উদ্ধার হওয়া ওই সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে তামিলনাড়ু সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হবে। আর অভিযুক্তরা নির্দোষ প্রমাণিত হলে ওই সম্পত্তি তামিলনাড়ুতে আসল দাবিদারের কাছে পৌঁছে যাবে।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, জয়ললিতা তো মারা গিয়েছেন, তাঁর ওই শাড়ি-জুতো কে পাবেন। এই নিয়ে জোর গুঞ্জন শুরু হয়েছে দলে। এডিএমকে-র এক নেতার আশা, আম্মার ওই সব সম্পত্তির ভবিষ্যৎ কী, তা নিয়ে খুব শীঘ্রই রায় দেবে সুপ্রিম কোর্ট। যাতে আম্মার সব জিনিসপত্র কোনও সংগ্রহশালায় রাখা যায়। আগামী বছর জুন মাসেই এই সংক্রান্ত রায় দেবে সুপ্রিম কোর্ট।
এ দিকে, কর্নাটকের বিশেষ সরকারি আইনজীবী জানিয়েছেন, যে হেতু এই মামলায় একাধিক লোকের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তাই মামলাটি চলবে। জয়ললিতার মৃত্যু প্রসঙ্গে একটি মেমো দাখিল করবে কর্নাটক সরকার।
জয়ললিতার ওই সব সম্পত্তির সঙ্গে সঙ্গে বেসামাল তামিলনাড়ুর রাজনীতিও। নেত্রীর মৃত্যুর পরে রাজ্যপাট কে সামলাবেন, তা নিয়ে সরগরম হয়ে উঠেছিল গোটা রাজ্য। দলের মুখ কে হবেন, তা নিয়েও জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। জয়ললিতার মৃত্যুর পর থেকেই মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন পনীরসেলভম এবং লোকসভার স্পিকার এম থাম্বিদুরাই। থাম্বিদুরাই হচ্ছেন গৌন্দার সম্প্রদায়ের। এডিএমকে-তে এই সম্প্রদায়ের প্রভাব যথেষ্ট। কিন্তু শশিকলা এবং পনীরসেলভম যে হেতু একই সম্প্রদায়ের, তাই থাম্বিদুরাইয়ের থেকেও মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিলেন পনীরসেলভম। আম্মার বিদায়ের পরে তাঁর ঘনিষ্ঠ বান্ধবী শশিকলার নির্দেশেই পনীরসেলভম মুখ্যমন্ত্রী পদে এসেছেন। এর সঙ্গে জয়ললিতা যখন বেঁচেছিলেন, তখন তাঁর অনুপস্থিতিতে পনীরসেলভমকেই তিনি মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসিয়েছিলেন। ফলে মুখ্যমন্ত্রীর পদের দাবিদার হিসেবে পনীরসেলভমের পাল্লা সব দিক থেকেই ভারী ছিল।
তবে ভবিষ্যতে এ নিয়ে দলের মধ্যে যে একটা সূক্ষ্ম চিড় থাকবে, তা স্বীকার করে নিচ্ছেন অনেকেই!