কী পাচ্ছি, বুঝেই সায় ‘আরব শর্তে’

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সদ্যসমাপ্ত সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, ওমান  এবং প্যালেস্তাইন সফরে এই বার্তাই দেওয়া হয়েছে ভারতকে। কূটনৈতিক শীর্ষ সূত্রের খবর, জাতীয় স্বার্থ বিবেচনা করে এই প্রস্তাবে রাজি দিল্লি। ধীরেসুস্থে বিষয়টি নিয়ে ‘ব্যাক চ্যানেল’ কূটনীতি শুরু করতে চলেছে মোদী সরকার।

Advertisement

অগ্নি রায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:১০
Share:

ছবি: এএফপি।

সব রকম ভাবে পাশে রয়েছে আরব দেশগুলি। বিনিময়ে দিল্লিকেও আরব দুনিয়ায় শান্তি ফেরানোর জন্য সক্রিয় হতে হবে। ইজরায়েল এবং প্যালেস্তাইনের মধ্যে শত্রুতা কমাতে কার্যকরী ভূমিকা নিতে হবে।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সদ্যসমাপ্ত সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, ওমান এবং প্যালেস্তাইন সফরে এই বার্তাই দেওয়া হয়েছে ভারতকে। কূটনৈতিক শীর্ষ সূত্রের খবর, জাতীয় স্বার্থ বিবেচনা করে এই প্রস্তাবে রাজি দিল্লি। ধীরেসুস্থে বিষয়টি নিয়ে ‘ব্যাক চ্যানেল’ কূটনীতি শুরু করতে চলেছে মোদী সরকার। মোদীর এ বারের সফর থেকে দু’টি বড় লাভ ঘরে তুলেছে দিল্লি। অর্থনীতির অঙ্কে আবু ধাবি জাতীয় তেল সংস্থা (অ্যাডনক)-র থেকে ম্যাঙ্গালুরুর তেল ভাণ্ডার ভরার আশ্বাস এবং অ্যাডনক-এর তৈলক্ষেত্রে ১০ শতাংশ মালিকানা প্রাপ্তি। কূটনীতির খাতায় জমা পড়েছে, ওমানের দুকাম বন্দরে সামরিক ঘাঁটি তৈরির অনুমতি পাওয়া। সে কারণেই প্যালেস্তাইন-ইজরায়েল দ্বন্দ্ব কমাতে সক্রিয় হওয়ার আশ্বাস দিয়েছে দিল্লি।

প্রধানমন্ত্রীর সফর শুরুর ঠিক আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফোন করেন মোদীকে। সম্প্রতি রাষ্ট্রপুঞ্জে প্যালেস্তাইনের স্বার্থবিরোধী প্রস্তাব আনা ট্রাম্প সে দিন মোদীকে জানান, আপাতত প্যালেস্তাইনকে আর খোঁচানো হবে না।

Advertisement

আঞ্চলিক রাজনীতির অঙ্কে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। ইজরায়েলের সঙ্গে মোদী সরকারের সুসম্পর্কের কারণেই ভারতকে এমন অনুরোধ করা হয়েছে বলে মনে করছে কূটনৈতিক শিবির। আরব বিশ্বের কাছে প্যালেস্তাইন এমন একটি বিষয়, যেখানে শান্তিপ্রক্রিয়ায় এক পা এগোতে পারলেই গোটা অঞ্চলের জনমত ভারতের দিকে ঘুরবে বলে মনে করে সাউথ ব্লক। বিনিময়ে আরব দুনিয়া থেকে বিপুল সুযোগ-সুবিধা তো মিলবেই, মুসলিম বিশ্বে ইসলামাবাদকে একঘরে করার চেষ্টাতেও সাফল্য পাবে দিল্লি।

নয়াদিল্লির হিসেবের মধ্যে রয়েছে, গত বছর যে পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা আয় হয়েছে (৬৯০০ কোটি মার্কিন ডলার), তার বেশির ভাগটাই এসেছে আরব দুনিয়া থেকে। এ বারের সফরে আবু ধাবি জাতীয় তেল সংস্থার সঙ্গে মোদীর বৈঠকে ঠিক হয়েছে, ম্যাঙ্গালুরুর তেল ভাণ্ডার ভরে দেবে ওই সংস্থা। যার পরিমাণ ৭.৫ লক্ষ টন। এখন বাইরে থেকে তেল না এলে ভারতের ৬৬ দিন চলে যায়। ওই তেল পাওয়া গেলে সেটা বেড়ে হবে ৭৬ দিন। দ্বিতীয়ত, অ্যাডনক-এর তৈলক্ষেত্রে ১০ শতাংশ মালিকানা কিনবে রাষ্ট্রায়ত্ত ওএনজিসি। ওয়াকিবহাল শিবির বলছে, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে মোদীর বড় ভরসা পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলিই।

মোদীর সফরে বড় কূটনৈতিক উপহারও মিলেছে। ওমানের দুকাম বন্দরে সামরিক ঘাঁটি তৈরির অনুমতি মেলায় সমুদ্রপথে চিনের কৌশলগত বিস্তার অনেকটাই ঠেকানো যাবে। মোদীর ওমান সফরের পরে অনেকটাই আত্মবিশ্বাসী বিদেশ মন্ত্রক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন