ভারতে নরেন্দ্র মোদী-সমর্থকদের প্রচারের সঙ্গে ভুয়ো খবর ছড়ানোর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে বলে ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন (বিবিসি)-এর এক সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে। মোদীর সমর্থকদের তরফে প্রচারিত খবর অনেক ক্ষেত্রেই টুইটারে খবরের উৎস বলেও জানানো হয়েছে সমীক্ষায়।
কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা কেন্দ্রের প্রধান শাসক দল সম্পর্কে এই অভিযোগই করেন। কংগ্রেসের অভিযেক মনু সিঙ্ঘভিও আজ একই কথা বলেন। আর সমীক্ষা সম্পর্কে বিজেপি-র মুখপাত্র সুধাংশু ত্রিবেদীর বক্তব্য, ‘‘যারা দেশভাগকে সমর্থন করেছে এবং রাষ্ট্রকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, এগুলো তারাই ছড়ায়। তারাই বিজেপিকে দুষছে। আমরা সাচ্চা জাতীয়তাবাদী। আমাদের ভুয়ো খবরের দরকার হয় না।’’
ভুয়ো খবরের উৎস নিয়ে ভারত, কেনিয়া এবং নাইজিরিয়ায় সমীক্ষা চালিয়েছিল বিবিসি। তাতে দেখা গিয়েছে, ভারতে জাতীয়তাবাদ বা দেশের প্রচারের হিড়িকে নাগরিকেরা অসংখ্য ভুয়ো খবর ‘শেয়ার’ করেন, তথ্য যাচাইয়ের প্রয়োজনীয়তাই বোধ করেন না। যদিও হিংসা ছড়াতে পারে, এমন খবর ‘শেয়ার’ করার বিষয়ে তাঁরা যথেষ্ট সতর্ক।
জাতীয়তাবাদের ‘তাগিদে’ মূলত খেমন ভুয়ো খবর ছড়ানো হয়? সমীক্ষা বলছে, ‘ভারতের উন্নয়ন, হিন্দু শক্তি এবং হিন্দু গৌরব পুনরুদ্ধার সংক্রান্ত খবর থাকে বেশি। নেটিজেনরা এ সব খবর শেয়ার করার সময় মাথাতেই রাখেন না যে খবরগুলো ঠিক, না ভুল। বরং তাঁরা মনে করেন যে এই সব খবর দিয়ে তাঁরা দেশ গঠনে সাহায্য করছেন!’’ কেনিয়ায় দুর্নীতি এবং প্রযুক্তি সংক্রান্ত আর নাইজিরিয়ায় হিংসা-সংক্রান্ত ভুয়ো খবর বেশি ছড়ায়।
টুইটারের সহ-প্রতিষ্ঠাতা তথা সিইও জ্যাক ডরসিও আজ নয়াদিল্লিতে একটি অনুষ্ঠানে বলেন, ‘‘পরিকল্পিত ভাবে ভুল তথ্য ছড়ানো প্রবণতা পুরোপুরি আটকানো মুশকিল। তবে ভারতে লোকসভা নির্বাচনের আগে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স) সাহায্য নিয়ে এ ধরনের খবর আটকানোর চেষ্টা হবে।’’ জ্যাক এ দিন রাহুল গাঁধীর সঙ্গে দেখা করেন। ভুয়ো খবরের বিপদ নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে রাহুল নিজেই টুইট করেছেন। তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের সঙ্গেও জ্যাকের দেখা করার কথা।
ভারতে ফেসবুকের এক শীর্ষ আধিকারিক মনীশ খান্ডুরিও এক আলোচনাচক্রে বলেন, ‘‘পর্নোগ্রাফি বা হিংসাত্মক খবর-ছবি আটকানো সহজ। কিন্তু কেউ যদি বলেন খবরটি কোনও দলের ভুয়ো প্রচার, সেটা ব্যক্তিগত ব্যাখার বিষয়। ফেসবুক এ ক্ষেত্রে কিছু করতে পারে না।