সার্ক সম্মেলন

মোদীর পাক সফর নিয়ে জল্পনা

নাম না করে সোমবার জি-২০ সম্মেলনে পাকিস্তানকে সন্ত্রাস নিয়ে বিঁধেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার পরেই আজ কিছুটা নাটকীয় ভাবে ইসলামাবাদে নিযু্ক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার গৌতম বাম্বাওয়ালে ইঙ্গিত দিলেন, নভেম্বরে সার্ক সম্মেলনে যোগ দিতে পাকিস্তানে যেতে আগ্রহী প্রধানমন্ত্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:১১
Share:

নাম না করে সোমবার জি-২০ সম্মেলনে পাকিস্তানকে সন্ত্রাস নিয়ে বিঁধেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার পরেই আজ কিছুটা নাটকীয় ভাবে ইসলামাবাদে নিযু্ক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার গৌতম বাম্বাওয়ালে ইঙ্গিত দিলেন, নভেম্বরে সার্ক সম্মেলনে যোগ দিতে পাকিস্তানে যেতে আগ্রহী প্রধানমন্ত্রী। গতকাল করাচিতে বিদেশনীতি সংক্রান্ত একটি অনুষ্ঠানে হাইকমিশনারের বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে একটি পাক সংবাদপত্র জানিয়েছে, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আগামী নভেম্বরে ইসলামাবাদে প্রস্তাবিত সার্ক সম্মেলনে যোগ দিতে আগ্রহী।’’ তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে হাইকমিশনারের ওই মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পর, আজই দিল্লিতে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বিকাশ স্বরূপ টুইট করে বলেছেন, ‘‘এই ধরনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া ও ঘোষণা করা এত তাড়াতাড়ি হয় না।’’

Advertisement

কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, পাকিস্তান প্রশ্নে দ্বিমুখী রণকৌশল নিচ্ছে ভারত। জল মাপতেই বাম্বাওয়ালে ওই মন্তব্য করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। গত দু’মাসে কাশ্মীর প্রশ্নে পাক-ভারত সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে। এই পরিস্থিতিতে বাম্বাওয়ালের মাধ্যমে ওই মন্তব্য করে ভারত যে আলোচনার রাস্তা খোলা রাখতে চাইছে, সেটাই বোঝাতে চেয়েছে নয়াদিল্লি। ওই মন্তব্য নিয়ে পাক রাজনীতিতে কী প্রতিক্রিয়া হয়, নওয়াজ শরিফের সরকার কী করে, তা বুঝেই পরবর্তী পদক্ষেপ করতে চাইছে সাউথ ব্লক। তা ছাড়া সার্ক সম্মেলন সফল করতে মোদী নিজেই আগ্রহী। তাই মোদী যে ইসলামাবাদে যেতে চান, এক দিকে সেই বার্তা দিয়ে রাখলেন বাম্বাওয়ালে। অন্য দিকে বিকাশ স্বরূপের টুইটের ব্যাখ্যা করে বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, নভেম্বরে পরিস্থিতি কী রকম থাকে, তার উপর নির্ভর করবে মোদী সে দেশে যাবেন কি না। গত কাল জি-২০ সম্মেলনে নাম না করে উপমহাদেশে সন্ত্রাস চালানোর জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছিলেন মোদী। করাচির অনুষ্ঠানেও সেই কথার প্রতিধ্বনি শোনা গিয়েছে গৌতম বাম্বাওয়ালের কথায়। সন্ত্রাসে দীর্ণ পাকিস্তান ভারতের মাটিতে সন্ত্রাসে মদত দিলে আখেরে ইসলামাবাদকেই ফল ভুগতে হবে বলেও হাঁশিয়ারি দিয়েছেন গৌতম। তাঁর কথায়,‘‘কাঁচের ঘরে যারা বাস করে তাদের অন্যের ঘরে ঢিল ছোঁড়া উচিত নয়।’’ কাশ্মীর প্রশ্নে পাকিস্তানের অতি-সক্রিয়তা নিয়ে কটাক্ষ করতে গিয়ে এ প্রসঙ্গে বালুচিস্তান নিয়ে ইসলামাবাদের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেছেন বাম্বাওয়ালে। তাঁর কথায়, ‘‘পাকিস্তানের উচিত অন্যের সমস্যায় মাথা গলানোর আগে নিজের সমস্যার সমাধান করা।’’

দু’দিনের কাশ্মীর সফরের পর আজ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে উপত্যকার পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। পরে দুপুরে মৌলবীদের একটি প্রতিনিধি দল কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে রাজনাথের সঙ্গে দেখা করেন। বৈঠকের পর হুরিয়তের ভূমিকার তীব্র নিন্দা করে প্রতিনিধি দলের সদস্য আনসার রাজ বলেন, ‘‘যাঁরা (হুরিয়ত নেতারা) পাকিস্তান জিন্দাবাদ বলে স্লোগান দেন, তাঁদের সঙ্গে কীসের আলোচনা?’’ একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, প্রতিনিধিদলের সদস্যদের হুরিয়তদের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়াই উচিত হয়নি। আনসারের কথায়, ‘‘প্রয়োজনে কেন্দ্রের নেতৃত্বে দেশের সব দরগার ইমামদের একটি দল গড়া হোক। যারা কাশ্মীরে শান্তি ফেরাতে কেন্দ্রকে সাহায্য করবে। স্থানীয় মানুষকে বার্তা দেবে যে, কাশ্মীর ভারতেরই অঙ্গ।’’

Advertisement

দু’মাস ধরে চলা অশান্তি থামাতে এ বার হুরিয়তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে কেন্দ্র। হুরিয়ত নেতারা প্রতিনিধি দলের সদস্যদের ফিরিয়ে দেওয়ার পর তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে সরকারের অন্দরমহলেই। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে বলা হয়েছে, হুরিয়ত নেতারা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা সরকারের পয়সায় নিরাপত্তা, চিকিৎসা বা যে বিদেশ সফরের যে সুবিধে পেয়ে থাকেন, তাতে কাঁটছাঁট করার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে কেন্দ্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন