জেট এয়ারওয়েজের সেই বিমানের কেবিন। ছবি- সংগৃহীত।
মাটি থেকে ৩৬ হাজার ফুট উপরে ককপিটে সতর্কবার্তা পেয়েছিলেন পাইলট। জেনেছিলেন, কাছাকাছি চলে এসেছে অন্য একটি বিমান!
উদ্বিগ্ন এয়ার ইন্ডিয়ার পাইলট যোগাযোগ করেন কলকাতার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)-এর সঙ্গে। কিন্তু কোথায় অন্য বিমান! কলকাতা বিমানবন্দরের এটিসি টাওয়ারের যে-মনিটরে বিমানের ছবি ফুটে ওঠে, সেখানে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানের কাছাকাছি তো অন্য বিমান নেই!
১৫ সেপ্টেম্বর ভুবনেশ্বর থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার এয়ারবাস-৩২০ দিল্লি যাচ্ছিল। সে তখন রায়পুরের মাথায়। মনিটর দেখাচ্ছে, তার সব থেকে কাছে আছে অস্ট্রেলিয়ার কোয়ান্টাসের বিমান। এবং নিয়ম মেনেই এক হাজার ফুট উপরে, ৩৭ হাজার ফুটে রয়েছে লন্ডন থেকে সিঙ্গাপুরগামী সেই বিদেশি বিমান। পরক্ষণেই কোয়ান্টাসের এয়ারবাস-৩৮০ বিমানের পাইলটও কলকাতার এটিসি-র সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তিনিও সতর্কবার্তা পেয়েছেন!
দু’টি বিমানের উপর-নীচে ব্যবধান এক হাজার ফুটের কম হয়ে গেলে তখনই এই ধরনের সতর্কবার্তা আসার কথা। প্রশ্ন উঠছে, দু’টি বিমানের মধ্যে উপর-নীচে ব্যবধান যেখানে এক হাজার ফুট বা তার বেশি, সেই অবস্থাতেও এই বার্তা এল কেন? কে বা কারা পাঠাল সেই বার্তা? এই নিয়ে তদন্তে নেমেছে ভারতের বিমান পরিবহণের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ)।
সে-দিন আরও বড় বিপদ হতে পারত বলে আশঙ্কা করছেন বিমানবন্দরের কর্তারা। কেননা কোয়ান্টাসের আধুনিক বিমানটি তখন ছিল স্বয়ংক্রিয় ‘অটো-পাইলট’ মোডে। সতর্কবার্তা পেয়ে বিপদ এড়াতে সেই অটো-পাইলটে ভর করে বিমানটি সটান উঠে যায় ৩৯ হাজার ফুট উপরে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সেই সময় ৩৮ হাজার বা ৩৯ হাজার ফুটে যদি অন্য কোনও বিমান থাকত, তা হলে বড় ধরনের সমস্যা হতে পারত।
কেন দু’টি বিমানে একসঙ্গে ভুল বার্তা এল? বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, দু’টি বিমানেই একসঙ্গে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়াটা ভীষণ কাকতালীয়! এক কর্তার কথায়, ‘‘বিমান যে-উচ্চতায় থাকে, অনেক ক্ষেত্রে বিমানের বাইরের বায়ুচাপে তারতম্য হলে সেটা বেশি দেখাতে পারে। এ ক্ষেত্রে তেমন কিছু ঘটে থাকতে পারে।’’
ডিজিসিএ সূত্রের খবর, এই ঘটনায় এয়ার ইন্ডিয়া ছাড়াও অস্ট্রেলিয়ার বিমান সংস্থা কোয়ান্টাস জড়িত। তাই সে-দেশের বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে চাওয়া হবে, সে-দিন কোয়ান্টাসের বিমানে কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিয়েছিল কি না।