সংসদ চত্বরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে দেখেই এক সাংসদ বললেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী নমস্কার।’’ জিভ কেটে রাজনাথ বললেন, ‘‘আরে রামো রামো!’’
উত্তরপ্রদেশের ফল প্রকাশের পর আজই প্রথম লোকসভার অধিবেশন। সম্ভাব্য মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে উঠে এসেছে অনেক নাম। আর তাঁদের যাঁকে যেখানে দেখা যাচ্ছে, এ ভাবেই চলছে অভিনন্দনের পালা। যোগী আদিত্যনাথের কপালেও জুটে গেল ভূরি ভূরি শুভেচ্ছা। হাসিমুখে সেগুলি কবুলও করছেন তিনি। রাশভারি মুখে মন্ত্রী মনোজ সিন্হাও টিকি উঁচিয়ে ঘুরছেন। ‘না’ ‘না’ করে অভিবাদন কুড়োতে দেখা গেল তাঁকেও।
বিজেপি তো বটেই, এমনকী বিরোধী শিবিরেও এখন কোটি টাকার প্রশ্ন, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কে?
কোয়ম্বত্তূরে সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত আরএসএস নেতাদের সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠক করছেন। এক শীর্ষ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বললেন, ‘‘জাত-পাতের অঙ্ক মিলিয়ে করতে হলেই বিপদ। এক জনকে করলে অন্যরা রুষ্ট হবেন। ফলে জাতপাতের অঙ্ক মুছে দিয়ে সেরা বাছাই কানপুরের মহারাজপুরের ছ’বারের বিধায়ক সতীশ মাহানা। তাঁর ক্ষেত্রি সম্প্রদায়ের আধিক্য নেই রাজ্যে। সরকার চালানোর দক্ষতাই হবে আসল মাপকাঠি।’’ একই সূত্রে আট বারের বিধায়ক সুরেশ খন্নার নামও উঠছে আলোচনায়।
দলের একটি অংশের মতে, এত বড় জয়ের ভার সামলানোর ক্ষমতা আছে শুধু রাজনাথের। কিন্তু জনভিত্তি আছে, এমন ঠাকুর নেতার হাতে কি উত্তরপ্রদেশ ছাড়তে চাইবেন মোদী? রাজ্য সভাপতি কেশব প্রসাদ মৌর্য ওবিসি, মোদী নিজেও তাই। সে কারণে কোনও উচ্চবর্ণকে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চেয়ে আওয়াজ তুলছেন শ্রীকান্ত শর্মা, দীনেশ শর্মা, মহেশ শর্মারা। সতীশ মাহানাদের নাম ওঠায় অনেকের মতে, এর থেকে কায়স্থ সিদ্ধার্থনাথ সিংহ ঢের ভাল।
কিন্তু মোদী-অমিত শাহকে এখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার রদবদল নিয়েও ভাবতে হচ্ছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক ছেড়ে মনোহর পর্রীকর গেলেন গোয়ায়। অরুণ জেটলি আজ সেই মন্ত্রকের অতিরিক্ত দায়িত্ব নিলেও এক জন পূর্ণ মন্ত্রীকে বসাতে হবে ওই মন্ত্রকে। আবার মধ্যপ্রদেশের শিবরাজ সিংহ চৌহান, রাজস্থানের বসুন্ধরা রাজেকে কেন্দ্রে আনার ভাবনা আছে। সে ক্ষেত্রে মধ্যপ্রদেশে নরেন্দ্র সিংহ তোমর, নরোত্তম মিশ্র এবং রাজস্থানে রাজ্যবর্ধন রাঠৌর বা সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ ওম মাথুরের নাম নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে বিজেপি এবং সঙ্ঘের অন্দরে। এখন প্রশ্ন, শেষ হাসি হাসবে কে? জানেন না রাজনাথরা কেউই।