প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
সাতাশ বছর আগে গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে দিল্লিতে তিন বার মুখ্যমন্ত্রী বদল করতে হয়েছিল বিজেপিকে। মদনলাল খুরানার পরে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসেছিলেন সাহেব সিংহ বর্মা। এ বার দিল্লিতে বিজেপির বিরাট জয়ের পরে বাবার ছেড়ে যাওয়া আসনে বসতে পারেন কি না সাহেব-পুত্র প্রবেশ বর্মা— তা নিয়ে রাজধানীর রাজনীতিতে এখন জল্পনা চলছে।
আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি বিকেলে নয়াদিল্লির মন্ত্রিসভার শপথের আয়োজন করা হচ্ছে ধুমধাম করে। তবে মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, সেই নাম নিয়ে এখনও ধোঁয়াশার বাতাবরণ রয়েছে বিজেপিতে। দলীয় সূত্রের খবর, বিধানসভা ভোটে জয়ী ৪৮ জন বিধায়কের মধ্যে ১৫টি নাম চিহ্নিত হয়েছে। বিধানসভার স্পিকার থেকে শুরু করে মন্ত্রিসভা— এই নামগুলি থেকেই বেছে নেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, তা ঠিক করতে বিজেপির পরিষদীয় দলের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল আজ। কিন্তু তা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিজেপি সূত্রের খবর, আগামিকাল সেই বৈঠক বসতে পারে। সম্ভবত ১৯ ফেব্রুয়ারিতে মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করা হবে। বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা অবশ্য বলছেন, “দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ঠিক করাটা একেবারেই কঠিন কাজ নয়। নেতৃত্ব যখন বৈঠকে বসবেন, পনেরো মিনিটের মধ্যেই নাম ঠিক হয়ে যাবে।”
মুখ্যমন্ত্রীর দৌড়ে এগিয়ে প্রয়াত সাহেব সিংহ বর্মার পুত্র, প্রাক্তন সাংসদ প্রবেশ বর্মা। এ বার নয়াদিল্লি বিধানসভা কেন্দ্রে তিনি হারিয়েছেন আপের শীর্ষ নেতা তথা দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালকে। সেই হিসেবে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সির জন্য তাঁর দাবি অনেকটাই। প্রবেশ অবশ্য বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, সেই ব্যাপারটা আমাদের পরিষদীয় দল ঠিক করে। তারপর কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সিলমোহর দেন। ফলে দলের সিদ্ধান্ত সবাইকে মেনে নিতে হয়।” একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে সাহেব-পুত্র বলেন, “আমি আধ্যাত্মিক ভাবনার মানুষ। কোনও কিছুতেই খুব বেশি আনন্দিত কিংবা খুব বেশি দুঃখিত হই না। দল যা সিদ্ধান্ত নেবে আনন্দের সঙ্গে সেটাই মেনে নেব।”
প্রবেশের সঙ্গে সম্ভাব্য মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বিজেপি শিবিরে আরও কিছু নাম নিয়ে জোরদার আলোচনা চলছে। তালিকায় আছেন রোহিনী কেন্দ্র থেকে জেতা দলের প্রাক্তন প্রদেশ সভাপতি ও বিধানসভার প্রাক্তন বিরোধীদলনেতা বিজেন্দ্র গুপ্ত। রয়েছেন ব্রাহ্মণ মুখ বলে পরিচিত আরএসএস ঘনিষ্ঠ প্রাক্তন প্রদেশ সভাপতি সতীশ উপাধ্যায়। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনের প্রাক্তন সভাপতি, বিজেপিতে পঞ্জাবি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি স্থানীয় নেতা আশিস সুদও দৌড়ে আছেন। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা থাকায় মুখ্যমন্ত্রিত্বের দৌড়ে তাঁর নাম উঠে এসেছে। সঙ্ঘের ঘনিষ্ঠ নেতা জিতেন্দ্র মহাজনকে নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনের প্রাক্তন সভানেত্রী রেখা গুপ্তের নামও বিশেষ ভাবেআলোচিত হচ্ছে।
ফলে কেজরীওয়ালকে হারানোর পুরস্কার শেষপর্যন্ত প্রবেশ পান কি না, তা নিয়েই বিজেপিতে চলছে জল্পনা।