রাহুল গাঁধী।—ফাইল চিত্র।
লোকসভায় বিতর্ক ছিল রাহুল গাঁধীর উপরে পাথর ছোড়া নিয়ে। কিন্তু সেই বিতর্কের মোড় ঘুরিয়ে দিয়ে উল্টে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ অভিযোগ তুললেন, দেশে তো বটেই বিদেশেও এসপিজি নিরাপত্তা ছাড়া সফর করেন তিনি। যা কার্যত আইনভঙ্গের সামিল। প্রশ্ন তোলেন দেশবাসীর কাছ থেকে কী লুকোতে এ ভাবে বিদেশ সফর করেন তিনি?
আজ লোকসভায় গুজরাতের বনসকণ্ঠায় রাহুলের গাড়ির উপরে হওয়া পাথর হামলার বিষয়টি তোলেন কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জ্জুন খড়্গে।
ওই ঘটনায় বিজেপির এক কর্মী গ্রেফতার হওয়ায় স্বভাবতই রাজনৈতিক ভাবে ফায়দা নিতে তৎপর ছিল কংগ্রেস। কিন্তু এই প্রথম সরকারের পক্ষ থেকে রাহুল গাঁধীর বিদেশ সফর ও সেখানে তিনি কী করেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কংগ্রেসের পরিকল্পনায় জল ঢেলে দেয় বিজেপি।
আরও পড়ুন: দিনভর নাটক শেষে জয় হল পটেলরই
বিরোধী হামলার জবাব দেওয়ার দায়িত্ব আজ কাঁধে তুলে নেন রাজনাথ সিংহ। পায়ে চোট লাগার পরে প্রায় মাসখানেক পরে আজই প্রথম লোকসভায় আসেন তিনি। কংগ্রেস সহ-সভাপতির নিরাপত্তার ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রাজনাথ বলেন, ‘‘রাহুল এসপিজি নিরাপত্তা পান। ঘটনার দিন থাবর হেলিপ্যাডে তাঁর জন্য বুলেটপ্রুফ গাড়ির ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও তিনি তাঁর ব্যক্তিগত সচিবের পরামর্শে সাধারণ গাড়িতে গিয়ে বসেন।’’ রাজনাথের ব্যাখ্যা, সাধারণ গাড়িতে থাকার জন্যই হামলার শিকার হন রাহুল। সরকারের দাবি, এই প্রথম নয়। গত দু’বছরে ১২১ বারের মধ্যে অন্তত ১০০টি ক্ষেত্রে রাহুল বুলেটপ্রুফ গাড়ি ব্যবহার করেননি।
এর পরেই রাহুলের বিদেশ যাত্রা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রাজনাথ। তিনি বলেন, ‘‘দু’বছরে ছ’বারে ৭২ দিন বিদেশে থেকেছেন রাহুল। কিন্তু তিনি এসপিজি নেননি। একা গিয়েছেন।’’ রাজনাথের প্রশ্ন, প্রাণের ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও কেন নিরাপত্তারক্ষী নেওয়া হয়নি? রাহুল কি মানুষের কাছ থেকে কিছু লুকোতে চাইছেন? তাঁর কথায়, ‘‘এ ভাবে নিরাপত্তা নিয়ে ছেলেখেলা করা আইনভঙ্গের সামিল।’’
পাল্টা দাবিতে কংগ্রেসের যুক্তি, রাহুল একজন জননেতা। তাই মানুষের কাছে পৌঁছতে গেলে কিছু ক্ষেত্রে নিয়মের বাইরে বেরোতেই হয়। রাহুল শিবিরের দাবি, বুলেটপ্রুফ গাড়িগুলির কাচ নামানো যায় না। তাই গাড়ির ভিতরের দমবন্ধ করা পরিস্থিতিতে রাহুল স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না। এই যুক্তি অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
দেশীয় সফরের ক্ষেত্রে কংগ্রেস এই যুক্তি দিলেও, বিদেশ সফরের প্রশ্নে মুখে কুলুপ দলের। কারণ মাঝে মধ্যেই রাহুলের বিদেশে চলে যাওয়া নিয়ে অস্বস্তি রয়েছে দলের মধ্যে।
তাই এ নিয়ে মন্তব্য এড়িয়ে যান কংগ্রেস নেতারা।