National News

সিব্বল কেন লন্ডনে হ্যাকারের অনুষ্ঠানে, ইভিএম কাণ্ডে অস্বস্তিতে কংগ্রেস

বিজেপির মুখপাত্র রবিশঙ্কর প্রসাদ মঙ্গলবার বলেন, ‘‘আমি প্রায় সাড়ে চার বছর কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী ছিলাম। ওই ব্যক্তির নাম কখনও শুনিনি। উনি মার্কিন নাগরিক দাবি করেছেন, আবার মুখ ঢাকা। ফলে গোটাটাই সাজানো নাটক।’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৯ ১৯:১১
Share:

লন্ডনে ইভিএম হ্যাকাথন ঘিরে রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে। —ফাইল চিত্র

লন্ডনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) হ্যাকাথনের জের। স্বঘোষিত হ্যাকার সৈইদ শুজার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করল ভারতের নির্বাচন কমিশন। দিল্লি পুলিশকে এফআইআর দায়েরের আর্জি জানিয়ে চিঠি দিয়েছে কমিশন। অন্য দিকে ইভিএম নিয়ে তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক তরজা। কারচুপির অভিযোগ ওঠায় যেমন প্রশ্নের মুখে বিজেপি, তেমনই লন্ডনে স্বঘোষিত হ্যাকারের অনুষ্ঠানে কপিল সিব্বল কেন হাজির ছিলেন, এই প্রশ্নে যেমন অস্বস্তিতে কংগ্রেসও। সিব্বলের লন্ডন সফরের দায় ঝেড়ে অস্বস্তি ঢাকার চেষ্টা করছে কংগ্রেস। অন্য দিকে বিজেপি-ও কারচুপির অভিযোগ উড়িয়ে সিব্বল ইস্যুতেই তোপ দেগেছে।

Advertisement

সোমবার লন্ডনে একটি সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করে লন্ডনের ইন্ডিয়ান জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন। সেই অনুষ্ঠানেই মার্কিন নাগরিক সৈইদ শুজা নিজেকে হ্যাকার বলে দাবি করে অভিযোগ তোলেন, ভারতের ভোটে ব্যাবহৃত ইভিএম-এর তথ্যে কারচুপি করা সম্ভব। কারচুপি হাতেনাতে পরীক্ষা করেও দেখানো হয় বলেও দাবি। শুজা আরও দাবি করেন, ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে ইভিএম-এ কারচুপি হয়েছিল। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গোপীনাথ মুন্ডে দুর্ঘটনায় মারা যাননি, ইভিএম কারচুপির বিষয়টি জেনে যাওয়ায় তাঁকে খুন করা হয়েছিল বলেও দাবি করেন তিনি।

এই সাংবাদিক বৈঠকের পরই তোলপাড় পড়ে যায় ভারতে। সোমবার নির্বাচন কমিশনের তরফে কারচুপির অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। কমিশনের টেকনিক্যাল এক্সপার্ট কমিটির সদস্য তথা আইআইটি ভিলাই-এর ডিরেক্টর রজন মুনা বলেন, ‘‘স্বয়ংক্রিয় এই ভোটযন্ত্রে তারবিহীন বা অন্য কোনও প্রযুক্তিতে তথ্য বিকৃত করা সম্ভব নয়।’’ সইদ শুজার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেয় কমিশন। এর পর মঙ্গলবারই দিল্লি পুলিশকে চিঠি দিয়ে এফআইআর দায়ের করার কথা বলেছে কমিশন।

Advertisement

আরও পডু়ন: রাজীব গাঁধীর ‘১৫ পয়সা’ তত্ত্ব তুলে কংগ্রেসকে বিঁধলেন মোদী

অন্য দিকে তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক তরজা। শুজা দাবি করেছিলেন, ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটে ইভিএম সরবরাহকারী বিশেষজ্ঞ দলে তিনি ছিলেন। বিজেপির মুখপাত্র রবিশঙ্কর প্রসাদ মঙ্গলবার বলেন, ‘‘আমি প্রায় সাড়ে চার বছর কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী ছিলাম। ওই ব্যক্তির নাম কখনও শুনিনি। উনি মার্কিন নাগরিক দাবি করেছেন, আবার মুখ ঢাকা। ফলে গোটাটাই সাজানো নাটক।’’ তিনি এ দিন আরও বলেন, ‘‘এটা কংগ্রেসের পৃষ্ঠপোষকতায় সাংবাদিক সম্মেলন। ২০১৪ সালে জনগণের রায়কে অপমান করার জন্য কংগ্রেসের অপচেষ্টা।’’

গোপীনাথ মুন্ডে প্রসঙ্গে রবিশঙ্কর বলেন, এইমসের চিকিৎসক স্পষ্ট জানিয়েছিলেন দুর্ঘটনায় গলায় আঘাত পেয়েই মৃত্যু হয় গোপীনাথ মুন্ডের। সেটা কীভাবে খুন হতে পারে?’’ আবার ইভিএম হ্যাক করা হলে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়েও বিজেপি জিতত। কংগ্রেস কীভাবে জিতল? প্রশ্ন কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রীর।

আরও পড়ুন: মমতা নাকি মায়াবতী, প্রধানমন্ত্রী পদে কাকে পছন্দ? অখিলেশ বললেন...

উল্টো দিকে কপিল সিব্বলের উপস্থিতি নিয়ে চাপে কংগ্রেসও। তবে সিব্বল ‘ব্যক্তিগত উদ্যোগে’ লন্ডনে গিয়েছিলেন এবং এর সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই বলে দায় এড়ানোর চেষ্টা করেছে কংগ্রেস। কপিল সিব্বল নিজেও সাফাই দিতে ত্রুটি রাখেননি। তাঁর দাবি, লন্ডনে ইন্ডিয়ান জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি আশিস রায় তাঁকে জানিয়েছিলেন, সব রাজনৈতিক দলকেই আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। সেই কারণেই তিনি গিয়েছিলেন। যদিও তাতেও চিড়ে ভেজেনি। রবিশঙ্কর প্রসাদ কপিল সিব্বলের সফরকে কংগ্রেসের দলীয় সফর হিসেবেই প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেসের হয়েই লন্ডনে ওই সাংবাদিক সম্মেলনের তদারকি করতে গিয়েছিলেন সিব্বল।’’

কংগ্রেস মুখপাত্র অভিষেক মনু সিংভি বলেন, আমরা ইভিএম কারচুপির অভিযোগ সমর্থনও করছি না, আবার উড়িয়েও দিচ্ছি না। কিন্তু এরকম গুরুতর অভিযোগ যখন উঠেছে, তখন স্বতন্ত্র কোনও সংস্থাকে দিয়ে এই ঘটনার তদন্ত হওয়া উচিত।

(ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন