Delhi High Court

স্বামীর সঙ্গে অশান্তি হলেও সন্তানকে বাবার বিরুদ্ধে উস্কাতে পারেন না মা: হাই কোর্ট

স্ত্রীর বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলে তাঁর কাছ থেকে বিচ্ছেদ চেয়ে আদালতে গিয়েছিলেন ওই যুবক। দিল্লি হাই কোর্ট মহিলাকে ভর্ৎসনা করেছে এবং যুবকের আবেদন মঞ্জুর করেছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২৪ ১৩:০২
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

দাম্পত্য জীবনে যতই অশান্তি হোক, সন্তানকে ব্যবহার করে তার প্রতিশোধ নিতে পারেন না মা। একটি মামলায় এমনটাই মন্তব্য করেছে দিল্লি হাই কোর্ট। আদালত জানিয়েছে, সন্তানকে তার বাবার বিরুদ্ধে উস্কানি দিতে পারেন না মা। তা আসলে মানসিক নির্যাতনের শামিল। মহিলার বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ তুলেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন যুবক। তাঁর আবেদনে সাড়া দিয়ে হাই কোর্ট বিবাহবিচ্ছেদ মঞ্জুর করেছে।

Advertisement

স্ত্রীর কাছ থেকে বিচ্ছেদ চেয়ে আদালতে গিয়েছিলেন ওই যুবক। পারিবারিক আদালত বিচ্ছেদের আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল। তার পর সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে যুবক দিল্লি হাই কোর্টে আবেদন জানান। বিচারপতি সুরেশ কুমার কাইত এবং বিচারপতি নীনা বনসল কৃষ্ণার ডিভিশন বেঞ্চ নিম্ন আদালতের নির্দেশ খারিজ করে দিয়েছে। যুবককে বিবাহবিচ্ছেদের অনুমতি দিয়েছে আদালত।

বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ, কোনও ব্যক্তি স্বামী হিসাবে খারাপ হতে পারেন। কিন্তু একই সঙ্গে তিনি বাবা হিসাবেও খারাপ হবেন, এটা ধরে নেওয়া উচিত নয়। দম্পতির মধ্যে যতই অশান্তি হোক, যতই মনের অমিল থাক, তার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁরা সন্তানকে একে অপরের বিরুদ্ধে ‘লড়াইয়ের হাতিয়ার’ হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন না।

Advertisement

আদালত আরও জানিয়েছে, স্বামীর নামে সন্তানের কাছে নিন্দা করে বাবা-মেয়ের সম্পর্ককে বিষিয়ে দেওয়া ঘোর মানসিক নির্যাতনের শামিল। একে সমর্থন করা যায় না। মায়ের এই আচরণ শিশুর পক্ষেও অমানবিক।

বস্তুত, দিল্লির ওই দম্পতি ১৯৯৮ সালে বিবাহিত জীবন শুরু করেছিলেন। তাঁদের দুই সন্তান রয়েছে। সম্প্রতি স্ত্রীর বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলে যুবক আদালতে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন জানান। তাঁর বিরুদ্ধে তাঁর স্ত্রীর অভিযোগ, যুবক পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। সেই খবর পেয়ে মহিলা তাঁদের ছোট মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে সংশ্লিষ্ট ভাড়া বাড়িতে যান। পুলিশকেও খবর দেন।

মহিলার বক্তব্য শুনে আদালত জানিয়েছে, এই ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। মহিলা শিক্ষিত হওয়া সত্ত্বেও নিজের আবেগকে বশে রাখতে পারেননি। স্বামীর বিরুদ্ধে ভুয়ো অভিযোগ এনেছেন তিনি। তাঁর অভিযোগের সপক্ষে প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সর্বোপরি, আট বছরের শিশুকন্যাকে এই দাম্পত্যকলহের সঙ্গে যুক্ত করা মহিলার উচিত হয়নি বলে জানিয়েছে আদালত।

আদালতের পর্যবেক্ষণ, মহিলার আচরণ প্রমাণ করে, তিনি আদৌ সম্পর্কে মানিয়েগুছিয়ে থাকতে আগ্রহী নন। তিনি গুরুতর কোনও কারণ ছাড়াই নিজের বিবাহিত জীবন থেকে সরে এসেছেন। সেই কারণেই বিবাহবিচ্ছেদের অনুমতি দিয়েছেন বিচারপতিরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন