১৬ দিনের সন্তান কোলে বিয়ে করলেন মা!

জেদ ছিল একটাই— অপমান, বাধা সহ্য করেও সন্তানের জন্ম দেবেন। সোমবার রাতে জামশেদপুরের সাকচির একটি মন্দিরে বিয়ের পর ১৬ দিনের সদ্যোজাতকে কোলে নিয়ে সেই কাহিনিই শোনালেন চন্দ্রাবতীনগরের বাসিন্দা নেহা শর্মা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রাঁচী শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৭ ১২:১৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

এমন গল্প নিয়ে বার বার সিনেমা লিখেছে বলিউড। চোখের সামনে তা-ই দেখল জামশেদপুর।

Advertisement

প্রেমের জেরে গর্ভবতী হয়েছিলেন তরুণী। বিয়েতে অস্বীকার করেন বিত্তবান প্রেমিক। বাপের বাড়ি থেকে মেয়েটিকে বের করে দেন পরিজনরা। অসহায় তরুণী আশ্রয় নেন ফুটপাতের ঝুপড়িতে। কারও কটুক্তিতে কান দেননি। জেদ ছিল একটাই— অপমান, বাধা সহ্য করেও সন্তানের জন্ম দেবেন। সোমবার রাতে জামশেদপুরের সাকচির একটি মন্দিরে বিয়ের পর ১৬ দিনের সদ্যোজাতকে কোলে নিয়ে সেই কাহিনিই শোনালেন চন্দ্রাবতীনগরের বাসিন্দা নেহা শর্মা। তিনি জানান, সন্তানের জন্মের পর প্রেমিক আকাশ কুমার যখন বিয়েতে রাজি হননি, তখন থানায় গিয়ে নালিশ ঠোকেন। পুলিশের চোখরাঙানিতে কাজ হয়। বিয়ের পিঁড়িতে বসেন আকাশ। গর্ভবতী হওয়ার পর আত্মীয়, পরিজনদের কাউকে পাশে পাননি নেহা। ভয় পাননি। তিনি বলেন, ‘‘সন্তানকে লুকানোর চেষ্টা কখনও করিনি।’’

পুলিশ জানায়, বছর চারেক ধরে সম্পর্ক ছিল নেহা, আকাশের। আচমকা গর্ভবতী হন নিম্নবিত্ত পরিবারের ওই তরুণী। মেয়েকে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দেন তাঁর বাবা-মা। ফুটপাতের ঝুপড়িতে নেহার থাকার ব্যবস্থা করেন জামশেদপুরের এমজিএম হাসপাতালের টেকনিশিয়ান আকাশ।

Advertisement

১৬ দিন আগে সেই হাসপাতালেই সন্তানের জন্ম দেন নেহা। অভিযোগ, বিয়েতে রাজি হচ্ছিলেন না আকাশ। পিতৃত্ব মানতেও অস্বীকার করেন। সন্তানকে নিয়ে ঝুপড়িতে ফেরার পরে পড়শিদের অপমানের মুখে পড়েন নেহা। তিনি বলেন, ‘‘ঠিক করি বিচার চাইতে পুলিশের কাছে যাব। থানায় গিয়ে সব কিছু জানাই।’’ ডাক পড়ে আকাশের। পুলিশ জানায়, বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন আকাশের পরিজনরা। ৫ লক্ষ টাকা দিয়ে নেহার মুখ বন্ধের প্রস্তাবও দেওয়া হয়। মানতে চাননি নেহা।

জেলে যাওয়ার ভয়েই কি বিয়ে করলেন? আকাশের উত্তর, ‘‘আমার আপত্তি ছিল না। বাড়ির অমতে বিয়ে করতে পারছিলাম না। কিন্তু শেষে জিতল নেহাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন