মোদীকে গেম নিয়ে প্রশ্নের পরেই কটূক্তির শিকার শিক্ষিকা

মধুমিতার প্রশ্নের জবাবে মোদী দু’টি অনলাইন গেমের নাম নিয়ে মজা করে করে বলেছিলেন, ‘‘পাবজিওয়ালা (পিইউবিজি) হ্যায় কেয়া? ইয়া ফোর্টনাইট?’’

Advertisement

অনমিত্র সেনগুপ্ত

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:০৪
Share:

নরেন্দ্র মোদীকে প্রশ্ন করে নেটিজেনদের আক্রমণের মুখে মধুমিতা। বিড়ম্বনায় পড়েছে ১৫ বছরের ছেলেও। ছেলের মোবাইল গেমে আসক্তি নিয়ে কাল ‘পরীক্ষা পে চর্চা’ অনুষ্ঠানে মোদীকে প্রশ্ন করেছিলেন রাজধানীর বেসরকারি স্কুলের ইংরেজি শিক্ষিকা মধুমিতা সেনগুপ্ত। বিপত্তির শুরু সেখান থেকেই।

Advertisement

সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউ বলছেন, ফালতু প্রশ্ন। এ সব মোদীকে জানানোর কী দরকার? এক জন শিক্ষিকা হিসাবে সমাধান তো আপনারই জানার কথা। কারওর মন্তব্য, অল্প বয়সিদের হাতে মোবাইল দিলে এমনই হয়। অনেকের অভিযোগ, প্রশ্নোত্তর পর্ব গোটাটাই সাজানো। এক জন বাঙালি কী ভাবে শুদ্ধ হিন্দিতে প্রশ্ন করেন, তা নিয়েও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন অনেকে।

মধুমিতার প্রশ্নের জবাবে মোদী দু’টি অনলাইন গেমের নাম নিয়ে মজা করে করে বলেছিলেন, ‘‘পাবজিওয়ালা (পিইউবিজি) হ্যায় কেয়া? ইয়া ফোর্টনাইট?’’

Advertisement

বিষয়টি শেষ পর্যন্ত মজার গণ্ডিতে আটকে থাকেনি। অনুষ্ঠানের পরেই মধুমিতার উপর মিম ঘুরতে থাকে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তিনি বলেন, ‘‘বাড়ি ঢুকতেই ছেলে মিম দেখিয়ে বলে, মা দ্যাখো কী কাণ্ড করেছো। অস্বস্তিতে পড়ে যাই।’’ ২৪ ঘণ্টায় মধুমিতার টুইটার এবং ব্যক্তিগত ও স্কুলের ফেসবুক পাতা ভরে উঠেছে নানা কটূকাটব্যে। টুইটারে ফলোয়ার বেড়েছে এক লাফে। ছাড় পায়নি দশম শ্রেণিতে উঠতে চলা ছেলেও। স্কুলে ‘পাবজিওয়ালা’ ডাক শুনতে হয়েছে তাকে। তবে ছেলে এখন গেম খেলা অনেক কমিয়েছে বলে জানান মা।

চলতি সমস্যায় পরিবার ছাড়াও পাশে পেয়েছেন স্কুল, ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের। পাশে পেয়েছেন প্রাক্তনীদের। মধুমিতা বলেন, ‘‘ছেলেও বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে না। খেলার ছলে বিষয়টি নিয়েছে।’’ নেটিজেনরা সমালোচনায় সরব হওয়ায় অবাক মধুমিতা। তিনি বলেন, ‘‘বহু অভিভাবক ওই সমস্যার কথা আমাদের জানান। ছেলেকেও মোবাইলে বুঁদ হয়ে থাকতে দেখেছি। সকলের কথা ভেবেই প্রধানমন্ত্রীকে এটা জানিয়েছিলাম। কিন্তু হল উল্টো।’’ মনোচিকিৎসক জয়রঞ্জন রাম বলেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেকে লুকিয়ে রেখে কাউকে হেনস্থা করার সুযোগ থাকে। তা ছাড়া অনেকে ভাবেন অন্যরা যখন কটূক্তি করছেন, আমিও করি!’’

সাজানো প্রশ্নোত্তরের অভিযোগের জবাবে মধুমিতা জানান, মূল অনুষ্ঠানের আগে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষিক, অভিভাবক ও ছাত্রদের নিয়ে একটি অনলাইন প্রতিযোগিতা হয়। তাতে অনলাইন গেমের কুফল নিয়ে প্রশ্ন করে অভিভাবক শ্রেণিতে নির্বাচিত হন মধুমিতা। প্রশ্নের মাধ্যম হিসাবে বাছা হয় হিন্দিকে। শুদ্ধ হিন্দিতে প্রশ্নে করার জন্য নেটিজেনদের আক্রমণের শিকার কেন হতে হচ্ছে, তার কোনও উত্তর নেই দেড় দশক ধরে রাজধানীর ওই বাসিন্দার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন