মোদীর জন্মদিনে আসছেন জিনপিং

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্মদিনে, তাঁর শহরকেই ভারত সফরের প্রথম গন্তব্য হিসেবে বেছে নিলেন চিনের প্রেসিডেন্ট সি জিনপিং। ১৭ সেপ্টেম্বর মোদীর জন্মদিনে আমদাবাদ শহরে আসছেন তিনি। সেখানে একদফা বৈঠকের পাশাপাশি সাবরমতীর তীরে নৈশভোজ সারবেন দু’জনে। পর দিন নয়াদিল্লি পৌঁছানোর কথা জিনপিং-এর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:৪০
Share:

সি জিনপিং

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্মদিনে, তাঁর শহরকেই ভারত সফরের প্রথম গন্তব্য হিসেবে বেছে নিলেন চিনের প্রেসিডেন্ট সি জিনপিং। ১৭ সেপ্টেম্বর মোদীর জন্মদিনে আমদাবাদ শহরে আসছেন তিনি। সেখানে একদফা বৈঠকের পাশাপাশি সাবরমতীর তীরে নৈশভোজ সারবেন দু’জনে। পর দিন নয়াদিল্লি পৌঁছানোর কথা জিনপিং-এর। সংশ্লিষ্ট শিবিরের জল্পনা, প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে চিনের পক্ষ থেকে একাধিক কূটনৈতিক উপহার নিয়ে আসতে চলেছেন চিনা প্রেসিডেন্ট।

Advertisement

এশিয়ার বড় দু’টি দেশের এই শীর্ষ বৈঠককে সফল করতে দু’পক্ষই চেষ্টার ত্রুটি রাখছে না। চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। ইতিমধ্যেই একটি বিষয় স্পষ্ট, সীমান্ত সমস্যা এবং অনুপ্রবেশের মতো কৌশলগত দিকগুলি নিয়ে আলোচনা হবে ঠিকই, কিন্তু অর্থনীতিই হয়ে উঠতে চলেছে বৈঠকের মূল কথা। ভারতে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে চিনা বিনিয়োগ, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভারতীয় রফতানির পরিমাণ বাড়ানো, গুজরাত এবং মহারাষ্ট্রে শিল্প পার্ক গড়ে তোলা-সহ বেশ কিছু বিষয়ে চুক্তি সই হওয়ার কথা রয়েছে। কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী নির্মলা সীতারমন যথেষ্টই আশাবাদী চিনা প্রেসিডেন্টের আসন্ন সফরটিকে নিয়ে। জানাচ্ছেন, “আমরা আশা করছি একটি বিরাট অঙ্কের চিনা বিনিয়োগ হবে। এটা নিছক অনুমান নয়, আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট ইতিবাচক তথ্য রয়েছে এই বিষয়ে।”

চিনা নেতৃত্বের সামনে ভারতের বাণিজ্য-ঘাটতির বিষয়টি যে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে তোলা হবে তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে বাণিজ্যমন্ত্রীর কথায়। মোদীর ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ নীতির সূত্র ধরে নির্মলা এ দিন বলেন, “এই বিপুল বাণিজ্য-ঘাটতি তো এমনি-এমনি কমে যাবে না। আমরা বেজিংকে বলব যে, তাদের দেশের সস্তা পণ্য এখানে না-পাঠিয়ে, ভারতের মাটিতেই তাঁরা কারখানা তৈরি করুন। এখানেই উৎপাদন করুন। ভারতের বিরাট বাজার তো রয়েছেই, পাশাপাশি অন্যান্য দেশে তা রফতানি করতে চাইলে, সেটাও এখান থেকে করা যেতে পারে। তা হলে ভারতের অর্থনীতিও উপকৃত হবে।”

Advertisement

দু’সপ্তাহ আগে জাপান সফরে গিয়ে জলে-জমিতে চিনের আগ্রাসী নীতি নিয়ে সরব হয়েছিলেন মোদী। সম্প্রতি অরুণাচলের প্রসঙ্গে তুলে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজও মনে করিয়ে দিয়েছেন ভারত যেমন অখণ্ড চিন-নীতি মেনে চলে, তেমনই চিনকেও মনে রাখতে হবে, অরুণাচলপ্রদেশ ভারতেরই অঙ্গরাজ্য। তবে চিনের সঙ্গে একাধিক বিষয়ে চাপের কূটনীতি বজায় রেখে চললেও, ভারতের লক্ষ্য, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ককে আরও অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। মোদীর সঙ্গে চিনা নেতৃত্বের ব্যক্তিগত সম্পর্ক যথেষ্ট ভাল। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময়ও একাধিক বার তিনি বেজিংয়ে গিয়েছেন। গুজরাতে এর আগে একাধিক ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করেছে বেজিং। এই বছরের গোড়াতেই বডোদরায় চিনের তৈরি ‘গ্রিন এনার্জি পার্ক’-এর উদ্বোধন হয়েছে।

মোদী সরকারের ১০০তম দিনটিকে নিয়ে কোনও উৎসব-উচ্ছ্বাস দেখানোয় আপত্তি ছিল মোদীর। ওই দিনটি তিনি কাটিয়েছিলেন জাপানে, সে দেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আরও জোরদার করার চেষ্টায়। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে নিজের প্রথম জন্মদিনকে ঘিরেও কোনও উৎসব চান না মোদী। তাঁর জন্মদিনের উৎসবে না মেতে দলের কর্মীদের জম্মু-কাশ্মীরে ত্রাণের কাজে মন দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মোদী। নিজে তিনি জন্মদিনটি কাটাবেন চিনের সঙ্গে সম্পর্কে নতুন এক পর্বের সূচনা ঘটানোর চেষ্টায়। চিনা প্রেসিডেন্টের প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরটিকে বাণিজ্যিক ভাবে সফল করার জন্য তাই মোদী ও তাঁর সরকার এখন বিশেষ ভাবে সক্রিয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন