ফাঁসি রদ নিয়ে ইয়াকুব মেমনের আর্জি সোমবার শুনবে সুপ্রিম কোর্ট। ফাঁসির দিন পিছোতে পারে বলে জোর জল্পনা দেশ জুড়ে। এরই মধ্যে নয়া বিতর্ক গুপ্তচর সংস্থা র-এর প্রাক্তন অফিসার বি রামনের একটি লেখার সূত্রে। ইয়াকুবকে আদৌ ফাঁসি দেওয়া উচিত কি না, ফের মাথাচাড়া দিল প্রশ্ন।
কে এই বি রামন? মুম্বই বিস্ফোরণের ঠিক এক বছরের মাথায় পুলিশের হাতে আসে হামলার অন্যতম চক্রী ইয়াকুব। সেই অভিযানের মাথায় ছিলেন রামনই। ২০১৩-য় মারা যান তিনি। সংস্থার অতিরিক্ত সচিব হিসেবে চাকরি থেকে অবসর নেন নয়ের দশকের মাঝামাঝি। জীবদ্দশায় একটি বারের জন্যও মুখ খোলেননি। তবে ২০০৭-এ একটি ওয়েবসাইটের জন্য কলম ধরেন। লেখেন, ‘‘আর যাই হোক ইয়াকুবকে ফাঁসি দেওয়াটা বোধ হয় ঠিক হবে না।’’ এত দিন তা প্রকাশিত হয়নি। অনুমতি ছিল না রামনের। সম্প্রতি রামনের ভাইয়ের অনুমতি নিয়েই প্রকাশিত হয়েছে সেই লেখা।
২০০৭-এর জুনে ইয়াকুবকে মৃত্যুদণ্ড দেয় মুম্বইয়ের বিশেষ সন্ত্রাসদমন আদালত। ওয়েবসাইটির দাবি, তার পরেই এই লেখাটি লেখেন রামন। প্রকাশকের দাবি, ইয়াকুবের ফাঁসির আদেশ মন থেকে মানতে পারেননি রামন। রামনের কথায়, ‘‘প্রথম থেকেই তদন্তে সহযোগিতা করেছিল ইয়াকুব। নিজে তো বটেই, পরিবারের বেশ কয়েক অভিযুক্তকেও মামলা চলাকালীন কাঠগড়ায় এনেছিল। তাই সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়ার আগে সব খতিয়ে দেখা উচিত ছিল।’’
তবে ইয়াকুব যে অপরাধী, তা নিয়ে সন্দেহের লেশমাত্র ছিল না রামনের মধ্যে। বরং এই লেখায় তিনি কোনও ভাবে আদালত অবমাননা করছেন কি না, ধন্দ ছিল তাঁর। চক্রী ইয়াকুব পুরোপুরি রেহাই পাক, এমনটাও চাননি তিনি।
রামনের এই লেখার সূত্রেই উঠে এসেছে ইয়াকুবের গ্রেফতারি ঘিরে ধোঁয়াশাও। তদন্তকারীদের দাবি, ১৯৯৪-এ নয়াদিল্লি স্টেশনে গ্রেফতার করা হয় তাকে। ইয়াকুব অবশ্য বলে এসেছে, পুলিশের কাছে সেই ধরা দিয়েছে নেপালে। রামনের লেখাতেও নেপালের কাঠমান্ডু প্রসঙ্গ রয়েছে। তাঁর বক্তব্য— ‘‘করাচি থেকে ইয়াকুব প্রথমে কাঠমান্ডুতেই এসেছিল। চেয়েছিল আত্মসমর্পণ করতে।
কিন্তু আত্মীয়দের পরামর্শেই মন ঘুরে যায়। ফের পালাতে চায় ইয়াকুব। সন্দেহের বশে তখনই ধরা হয় তাকে। কাঠমান্ডু থেকে তার পর নয়াদিল্লি। সেখানেই সরকারি ভাবে গ্রেফতার করা হয় মেমনকে।’’