নরেন্দ্র মোদী বলছেন, ২০২২ সালে ‘নতুন ভারত’ গড়বেন। রাহুল গাঁধীর পাল্টা কটাক্ষ, ২০৩০ সালে তো পৃথিবীতে চাঁদও নামাবেন মোদী!
ভোট এলেই মোদী বলেন উন্নয়নের ‘গুজরাত মডেল’-এর কথা। মোদী-রাজ্যের ছবি তুলে ধরে রাহুলের ব্যঙ্গ, সেই উন্নয়ন তো এখন পাগল হয়ে গিয়েছে!
ভোটের আগে মন্দির-মন্দিরে যাওয়া বেড়ে যায় মোদীর। রাহুলও এখন মন্দিরে-মন্দিরে ঘুরছেন। এমনকী গরুকেও খাওয়াচ্ছেন!
গুজরাতে রাহুল যখনই মোদীকে বিদ্রুপ-কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন, জনতা ফেটে পড়ছে হাততালিতে। আর তাতেই ভাঁজ বেড়েছে বিজেপির কপালে। এই অবস্থায় রাহুলের মোকাবিলায় আজ গুজরাতে হাল ধরেন খোদ বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। একই ভূমিকায় দিল্লিতে নামেন মোদী সরকারের মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। আর সব কিছু ছাপিয়ে ভোটমুখী গুজরাতে হিন্দুত্বকে উস্কে দিতে আজ আসরে নামানো হয় উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী তথা উগ্র হিন্দুত্বের অন্যতম মুখ যোগী আদিত্যনাথকে।
অমিত শাহের মতো যোগীরও নিশানায় ছিলেন রাহুলই। যোগী বলেন, ‘‘রাহুল যেখানেই যান, সেখানেই কংগ্রেস হারে। আর গুজরাতের উন্নয়ন নিয়ে এত কথা বলছেন, কিন্তু এই রাজ্যের বন্যার সময় তো ইতালি, আমেরিকা ঘুরেছেন তিনি।’’ কিন্তু যোগীকে তো এ সব বলার জন্য নামানো হয়নি। হিন্দুত্ব উস্কে দেওয়াও তাঁর কাজ। এ জন্যই তিনি বলেছেন, ‘‘মন্দিরে কী ভাবে বসতে হয়, সেটুকুও রাহুল জানেন না। মন্দিরে যেন নমাজ পড়তে বসেছেন!’’
কংগ্রেসকে আক্রমণ করতে গিয়ে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কৃষ্ণের তুলনাও করলেন যোগী। বললেন, ‘‘মোদী গুজরাত থেকে উত্তরপ্রদেশে এসে ভোটে জিতেছেন। ভগবান কৃষ্ণও উত্তরপ্রদেশ থেকে গুজরাতে এসেছিলেন।’’ তুললেন ইশরাত জহান প্রসঙ্গও। অস্বস্তিকর যে বিচারাধীন প্রসঙ্গটি সচরাচর তোলেন না বিজেপি নেতারা। ২০০৪-এ লস্কর জঙ্গি সন্দেহে গুজরাত পুলিশের হাতে ইশরাত ও তাঁর তিন সঙ্গীর মৃত্যুর বিষয়টি এখনও বিচারাধীন। ওই ঘটনায় অমিত শাহের পাশাপাশি নাম জড়িয়েছে মোদী-ঘনিষ্ঠ একাধিক শীর্ষ পুলিশ কর্তার। কিন্তু এ দিন লস্কর-অস্ত্রে কংগ্রেসকে বিঁধতে মরিয়া যোগী সেই ইশরাতের প্রসঙ্গই টেনে বলেন, ‘‘এঁরা ইশরাতের সমর্থক। বিনাশের এজেন্ট। গুজরাতকে কংগ্রেস-মুক্ত করতে হবে।’’
দিল্লিতে রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, ‘‘রাহুল গাঁধীকে বলতে চাই, প্রভু দর্শন করে ভোট হয় না। এখন তো দেখছি, কংগ্রেসের অন্য নেতারা তাঁকে আরতি করা শেখাচ্ছেন!’’ অন্য দিকে গুজরাতে অমিত শাহ বলেন, ‘‘রাহুল গাঁধী অমেঠীতেই উন্নয়ন করে দেখাতে পারেননি। গুজরাতের উন্নয়ন নিয়ে কোন মুখে কথা বলছেন?’’
কংগ্রেস বলছে, রাহুলকে নিশানা করতে গিয়ে বিজেপির শীর্ষ নেতারা যে ভাবে একজোট হয়ে আসরে নেমেছেন, তাতেই স্পষ্ট, বিজেপি কতটা ভয় পেয়েছে। গুজরাতে অমিত শাহের জনপ্রিয়তা নেই। আর মোদী-শাহকে দিয়ে যে কার্যসিদ্ধি হবে না, সেটি বুঝেই এখন মেরুকরণের লক্ষ্যে উত্তরপ্রদেশ থেকে আনা হয়েছে উগ্র হিন্দুত্বের মুখ যোগীকে।