অশালীন মন্তব্য, বিতর্কে যশবন্ত

প্রকাশ্যে আপত্তিকর শব্দ ব্যবহার করা যেন বর্তমান রাজনীতির অঙ্গ হয়ে উঠেছে। পশ্চিমবঙ্গের সাংসদ তাপস পালের পরে এ বার ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিন্হা। আজ রাঁচিতে প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ মুখ্যমন্ত্রীর দৌড়ে থাকা সম্ভাব্য প্রার্থীদের ‘চুতিয়া’ বলে মন্তব্য করলেন। যে ঘটনাকে ঘিরে আজ সন্ধে থেকেই রাজনৈতিক মহলে, বিশেষ করে বিজেপির অন্দরে বিতর্কের ঝড় বইছে।

Advertisement

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

রাঁচি শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৪ ০২:৩৫
Share:

প্রকাশ্যে আপত্তিকর শব্দ ব্যবহার করা যেন বর্তমান রাজনীতির অঙ্গ হয়ে উঠেছে। পশ্চিমবঙ্গের সাংসদ তাপস পালের পরে এ বার ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিন্হা। আজ রাঁচিতে প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ মুখ্যমন্ত্রীর দৌড়ে থাকা সম্ভাব্য প্রার্থীদের ‘চুতিয়া’ বলে মন্তব্য করলেন। যে ঘটনাকে ঘিরে আজ সন্ধে থেকেই রাজনৈতিক মহলে, বিশেষ করে বিজেপির অন্দরে বিতর্কের ঝড় বইছে।

Advertisement

সপ্তাহ দুয়েক আগে, ঝাড়খণ্ড বিদ্যুৎ পর্ষদের এক জেনারেল ম্যানেজারকে নিগ্রহ করার অভিযোগে যশবন্ত তখন জেলে। জামিন না নিতে চাওয়ায় দলের প্রবীণ নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী এসেছিলেন যশবন্তকে বোঝাতে। সে সময় এক প্রশ্নের উত্তরে আগামী দিনে এ রাজ্যের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে যশবন্তকে উপযুক্ত বলে মন্তব্য করেন আডবাণী। তারপর থেকেই ‘মুখ্যমন্ত্রী বিতর্ক’ তাড়া করছে হাজারিবাগের এই প্রাক্তন সাংসদকে।

আজ রাঁচিতে বণিকসভার একটি বৈঠকে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী হিসেবে যশবন্ত ছিলেন প্রধান অতিথি। নিজের বক্তব্যের ফাঁকে তিনি আচমকাই বলতে শুরু করেন, “ঝাড়খণ্ডে উন্নয়নের বিষয়ে ভাবা পাপ। এখানে শুধুই রাজনীতি হয়।” পোডিয়ামে রাখা বৈদ্যুতিন মাধ্যমের একটি বুম হাতে তুলে নিয়ে যশবন্ত বলেন, “মিডিয়া মু মে মাইক ডালকে পুছতা হ্যায়, মুখ্যমন্ত্রী কৌন বনেগা? কোই ভি চুতিয়া বনে, মুঝে ক্যায়া ফরক পড়তা হ্যায়!” হিন্দি ভাষায় ‘চুতিয়া’ শব্দের অর্থ বোকা। তবে সাধারণ ভাবে গালিগালাজ হিসেবেই এই শব্দটির ব্যবহারের চল বেশি।

Advertisement

আডবাণী এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে যশবন্তের নাম উত্থাপনের পরেই ঝাড়খণ্ড বিজেপির মধ্যে বিতর্ক দানা বাঁধে। অর্জুন মুণ্ডার বদলে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আগামী বিধানসভা নির্বাচনের পরে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে অন্য কাউকে নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করছে কিনা তা নিয়েও আলোচনা শুরু হয়। খোদ মুণ্ডাও আডবাণীর ঘোষণার বিরুদ্ধে মুখ খোলেন। মুণ্ডা-যশবন্তের রাজনৈতিক লড়াইও প্রকাশ্যে চলে আসে। যশবন্তের আজকের মন্তব্য মুন্ডার উদ্দেশে কিনা তা নিয়েও নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে। যশবন্তের এই মন্তব্য নিয়ে অর্জুন মুন্ডা বলেন, “আমি কলকাতায় আছি। উনি ঠিক কী বলেছেন জানি না। তবে যে কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বেরই ভাষার ব্যাপারে শালীনতা বজায় রাখা উচিত।” রাঁচির বিজেপি বিধায়ক তথা বিধানসভার প্রাক্তন অধ্যক্ষ চন্দ্রেশ্বরপ্রসাদ সিংহ বলেন, “যশবন্ত সিন্হা বড় নেতা। ঝাড়খণ্ডের যা অবস্থা তাতে ওঁর বিরক্তি স্বাভাবিক। তবে উনি ঠিক কী বলেছেন, তা না শুনে মন্তব্য করব না। যদিও প্রাক্তন স্পিকার হিসেবে বলতে পারি, গণতন্ত্রে যে কোনও রাজনীতিবিদেরই শব্দ চয়নের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা উচিত।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন