অসমে জিতেই পাল্টা তোপ বিজেপি শিবিরের

বিজেপির ক্ষতে প্রলেপ দিল অসম। দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পর অসমের পুরভোটের ফলাফলের দিকে নজর ছিল দলের শীর্ষ নেতৃত্বের। সে রাজ্যের বেশিরভাগ জায়গায় জনমত তাঁদের দিকে যাচ্ছে বুঝে আজ দুপুরে তড়িঘড়ি নয়াদিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলন করলেন উৎফুল্ল দলীয় হাইকম্যান্ড। তাঁরা দাবি জানালেন, অসমের ফলাফলে স্পষ্ট হল, দিল্লি হাতছাড়া হলেও দেশের অন্য প্রান্তে বিজেপির পায়ের নীচের জমি এখনও মজবুত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি ও গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৪:২৮
Share:

জয়ের মেজাজ। অসম পুরভোটের ফলপ্রকাশের পর বিজেপি-অনুগামীদের উৎসব। ডিব্রুগড়ে। ছবি: পিটিআই।

বিজেপির ক্ষতে প্রলেপ দিল অসম।

Advertisement

দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পর অসমের পুরভোটের ফলাফলের দিকে নজর ছিল দলের শীর্ষ নেতৃত্বের। সে রাজ্যের বেশিরভাগ জায়গায় জনমত তাঁদের দিকে

যাচ্ছে বুঝে আজ দুপুরে তড়িঘড়ি নয়াদিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলন করলেন উৎফুল্ল দলীয় হাইকম্যান্ড। তাঁরা দাবি জানালেন, অসমের ফলাফলে স্পষ্ট হল, দিল্লি হাতছাড়া হলেও দেশের অন্য প্রান্তে বিজেপির পায়ের নীচের জমি এখনও মজবুত। প্রদেশ বিজেপি সভাপতি সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্য বলেন, “রাজনীতি কোনও খেলার ময়দান নয়। পুরভোটের ফলাফল রাজ্যবাসীর রাজনৈতিক সচেতনতার প্রমাণ দিয়েছে।”

Advertisement

রাজধানী দিল্লিতে বিজেপির পাশে দাঁড়াননি শহরবাসী। বিধানসভা ভোটে তাই আপ-এর কাছে পরাজিত হয় তারা। তা নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর শিবিরের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দাগছিল বিরোধীরা।

অসমের পুরসভা ও টাউন কমিটির নির্বাচনের ফল দেখে পাল্টা জবাবের পথে এগোয় বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সাংবাদিক সম্মেলনে দাবি করা হয় নাগরিকরা বিজেপি-বিমুখ নন, অসমের পুরভোট তার প্রমাণ। সিদ্ধার্থবাবু বলেন, “দিল্লিতে আমাদের কিছু ভুল হয়েছিল। অরবিন্দ কেজরীবালের আপ নতুন রণকৌশল নিয়েছিল। আমরা সে সব থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে এগোব।”

২০১৬ সালে রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের আগে পুরভোটকে ‘সেমি ফাইনাল’ হিসেবে দেখছিল রাজনৈতিক দলগুলি। দিল্লির ভোটের আগে বিজেপির ইস্তাহারে উত্তর-পূর্বের বাসিন্দাদের ‘অভিবাসী’ বলে চিহ্নিত করায় ক্ষোভ ছড়িয়েছিল। তাতে আশায় ছিল কংগ্রেস। কিন্তু ফলাফলের পর ওই শিবিরে কিছুটা হতাশা ছড়াল। সন্ধে সাড়ে ৭টা পর্যন্ত হিসেব অনুযায়ী, অসমের বিভিন্ন পুরসভা ও টাউন কমিটিতে বিজেপি ৩৪০টি, কংগ্রেস ২৩২, অসম গণ পরিষদ ৩৯, এআইইউডিএফ ৮, সিপিআইএম ও বিপিএফ ১টি করে এবং নির্দলরা ৭৭টি আসন পেয়েছে।

ধুবুরি পুরসভায় ১৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১০টি ওয়ার্ড দখল করেছে বিজেপি। কংগ্রেস দখল করেছে মাত্র দু’টি ওয়ার্ড। অগপ জয়ী হয়েছে ১টি ওয়ার্ডে। ৩টি ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছে নির্দল প্রার্থীরা। ধুবুরির চারটি টাউন কমিটিও কার্যত দখলে নিয়েছে বিজেপি। গত বারের পুর-নির্বাচনে কংগ্রেস প্রায় ৮০ শতাংশ আসন দখল করেছিল। এ বার বিজেপি এগিয়ে থাকলেও, কংগ্রেস বিনা যুদ্ধে জমি ছাড়েনি।

তবে গত বারের থেকে খারাপ ফলের জন্য কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে দায়ী করছেন দলের একাংশ নেতা-কর্মী। প্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, “ক্ষমতা দখলের জন্য গগৈ বনাম হিমন্ত শিবিরের কাজিয়ায় মানুষ বিরক্ত। মন্ত্রিসভা ঢেলে সাজানোর সময় এমন কয়েক জনকে সামিল করা হয়েছে, যাঁদের যোগ্যতা নিয়ে দলের ভিতরেই সন্দেহ রয়েছে।” মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ অবশ্য এতে দমছেন না।

এ দিকে, কংগ্রেসের দুর্নীতি এবং বিজেপির বিভেদনীতির বিরুদ্ধে অন্য রাজনৈতিক দলগুলিকে একজোট হয়ে ‘তৃতীয় মোর্চা’ গঠনের ডাক দিয়েছেন অসম গণ পরিষদের কার্যনির্বাহী সভাপতি অতুল বরা। কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির সভাপতি অখিল গগৈ জানিয়েছেন, তিনি তৃতীয় মোর্চা গঠনের দায়িত্ব নিতে তৈরি।

বিজেপি নেতা সিদ্ধার্থবাবুর কথায়, “যে সব বিদ্বজ্জন রাজনৈতিক দলের সমালোচনা করেন, তাঁরা ময়দানে এলে টের পাবেন মানুষ কোন পক্ষে রয়েছেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন