আন্দোলনের আঁচ ছড়াতে বাজারের ভিড়ে মিশলেন মুক্ত লৌহমানবী।
হাতের নাগালে ইরম শর্মিলা চানুকে দেখে উচ্ছ্বাস ছড়াল ইম্ফলের মহিলা পরিচালিত ‘ইমা কাইথেল’-এ। আসাম রাইফেলস-এর পুরনো অফিস কাংলা ফোর্টের ঢিল ছোঁড়া দুরত্বের ওই বাজারে আজ আম-আদমির ভালবাসায় ভাসলেন চানু। তিনি বললেন, “আপনারা আমার হাত শক্ত করুন। আফস্পা প্রত্যাহার করা হলে আপনাদের সঙ্গে বসেই খেতে চাই। তখন সম্মান নিয়ে বাঁচব।”
মণিপুরের মহিলা-মহলে চানুর জনপ্রিয়তা আকাশ-ছোঁয়া। তাঁরাই চানুর নাম দিয়েছেন ‘লৌহমানবী’। বন্দি থাকাকালীন তাঁর সঙ্গে সহজে দেখা করার উপায় ছিল না। মুক্তি পেয়েই তাই চানু সিদ্ধান্ত নেন প্রথমেই তিনি যাবেন মহিলাদের ‘ইমা কাইথেল’-এ।
এ দিন সকালে পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে অনুগামী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন চানু। তিনি জানিয়ে দেন, সরকার ফের তাঁকে হাসপাতালে পাঠানোর আগে যতটা সম্ভব জন-সমর্থন বাড়িয়ে নিতে হবে। এর পরেই চানু ইম্ফলের বীর টিকেন্দ্রজিৎ রোডের ওই বাজারে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পরমপত থেকে গাড়িতে বাজারের সামনে পৌঁছন লড়াকু নেত্রী। খবর পেতেই বাজারের দোকানদার, আশপাশের এলাকার মানুষ ভিড় জমান। গাড়ি থেকে নামতেই শুরু হয় জয়ধ্বনি। ‘ইমা কাইথেল’-এ ঢুকে প্রথমে ‘কেইথেল লাইরেম্বি’র মন্দিরে যান চানু। তার পর দোকানের সারির মধ্যে দিয়ে হাঁটা শুরু। মুখে কিছু বলতে হয়নি। ক্রেতা-বিক্রেতারা মালা, উত্তরীয় পরিয়ে তাঁকে বরণ করে নেন। ইংরেজি ও মেইতেই ভাষায় স্লোগান ওঠে ‘লঙ লিভ শর্মিলা’।
শরীর এখনও দুর্বল। কিছুটা এগিয়েই একটি দোকানের সিঁড়িতে বসে পড়েন চানু। তিনি বলেন, “মানুষের ভালবাসায় আমি মুগ্ধ। আফস্পা যে দিন প্রত্যাহার করা হবে, সে দিনই আমাদের উৎসব।” ভিড়ের দিকে তাকিয়ে চানু বললেন, “অন্যায়ের শেষ না-হওয়া পর্যন্ত আপনাদের সঙ্গে নিয়েই আন্দোলন চালাতে চাই। আফস্পা প্রত্যাহারে সরকারকে বাধ্য করতেই হবে।”
ফের তাঁর গাড়ি এগোয় অনশনস্থলের দিকেই।