আয়কর দফতরের মুখোশ পরেই হানাদাররা ফাঁদ পাতছে। সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে প্রতারণার চেষ্টা করছে।
আজ এমনটাই সতর্কবার্তা জারি করেছে আয়কর দফতর। তাদের কাছে জমা পড়া অভিযোগ থেকে জানা গিয়েছে, করদাতাদের কাছে ভুয়ো ই-মেল আসছে। সেই ই-মেলে ফাইল পাঠিয়ে জানানো হচ্ছে কার কত আয়কর বাকি আছে। যে ই-মেল অ্যাড্রেস থেকে এই ভুয়ো বার্তা আসছে, সেটি হল ইনকামট্যাক্সইন্ডিয়া ডট গভ ডট ইন্ডিয়া অ্যাট জিমেল ডট কম (incometaxindia.gov.india@gmail.com)।
আয়কর দফতরের বক্তব্য, এমন ই-মেল অ্যাড্রেস থেকে সরকারি ই-মেল পাঠানো হয় না। আয়কর দফতর ই-মেলের মাধ্যমে কোনও ব্যক্তিগত তথ্য, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য, ক্রেডিট কার্ড সংক্রান্ত তথ্য, ডেবিট কার্ডের পিন সংখ্যা, নেট-ব্যাঙ্কিংয়ের পাসওয়ার্ড চেয়ে পাঠায় না। তথ্য-প্রযুক্তির ভাষায় এগুলি আসলে ‘ফিশিং মেল’। মূলত ব্যক্তিগত তথ্য চুরি এবং তা কাজে লাগিয়ে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কাজেই ওই ই-মেল ব্যবহার করা হয়। এই ই-মেলের সঙ্গে পাঠানো ফাইলটি খোলার চেষ্টা করলে তা থেকে কম্পিউটারে ভাইরাস চলে আসতে পারে। অথবা ওই ই-মেলে এমন কোনও সফ্টওয়্যার থাকতে পারে, যা কম্পিউটার বা ই-মেল থেকে তথ্য চুরি করে নেবে। ওই ই-মেলের জবাব দিতে গেলেও বিপদ হতে পারে। ই-মেলে দেওয়া কোনও লিঙ্কেও ক্লিক না করাই ভাল।
চলতি মাসেই আয়কর দফতর নির্দেশ জারি করেছে, যারা অনলাইনে আয়কর জমা দেন, তাদের একটি ই-মেল অ্যাড্রেস ও মোবাইল নম্বর নথিভুক্ত করতে হবে। ইতিমধ্যেই কেউ কেউ আয়কর দফতরের ওয়েবসাইটে তা নথিভুক্ত করিয়েছেন। ৩১ জুলাইয়ের আগে যারা অনলাইনে আয়কর রিটার্ন ফাইল করেছেন, তারা ইতিমধ্যেই আয়কর দফতরের ওয়েবসাইটে নিয়ে নিজেদের ই-মেল ও মোবাইল নম্বর নথিভুক্ত করেছেন। আয়কর দফতরের কর্তারা মনে করছেন, এই সুযোগকেই কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে প্রতারকরা। সাধারণ মানুষের ই-মেলে ভুয়ো বার্তা পাঠিয়ে তথ্য চুরির চেষ্টা শুরু হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রকের বক্তব্য, জিমেল, ইয়াহু ইত্যাদি অ্যাড্রেস থেকে আয়কর দফতর কোনও বার্তা পাঠায় না।এই ধরনের ই-মেল পেলে আয়কর দফতরের নিজস্ব ওয়েবসাইট (www.incometaxindia.gov.in)-এ গিয়ে ‘রিপোর্ট ফিশিং’-এ ক্লিক করতে হবে। সাধারণ মানুষকে সতর্ক করার পাশাপাশি কারা এই ধরনের প্রতারণা করার চেষ্টা করছে, তারও তদন্ত শুরু হয়েছে। সাইবার সুরক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের সংস্থা সার্ট-ইন (কম্পিউটার এমার্জেন্সি রেসপন্স টিম)-কে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সার্ট-ইনের কর্তাদের বক্তব্য, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার যত বাড়ছে, ততই সাইবার অপরাধের সংখ্যা বাড়ছে। চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে সার্ট-ইনের কাছে ৬২ হাজারের বেশি সাইবার হানার অভিযোগ এসেছে। ৯ হাজারেরও বেশি ভারতীয় ওয়েবসাইট হ্যাক করা হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই ধরনের হানা চলছে।