নরেন্দ্র মোদীকে স্বাগত জানাচ্ছেন রিলায়্যান্স ফাউন্ডেশনের কর্ণধার নীতা অম্বানী এবং তাঁর স্বামী মুকেশ অম্বানী। শনিবার মুম্বইয়ে একটি হাসপাতালের উদ্বোধনে। ছবি: পিটিআই
তিনি এলেন। বক্তৃতা দিলেন। কিন্তু দেখা হল না। মুম্বইয়ে হাসপাতাল উদ্বোধনে এলেও শিবসেনার সঙ্গে জোট সরকার গঠন নিয়ে কোনও আলোচনায় যোগ দিলেন না নরেন্দ্র মোদী। হাসপাতাল উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হলেও আসেননি শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে। শিবসেনার পক্ষ থেকে বোঝানোর চেষ্টা হয়েছে, এই সফরে রাজনৈতিক আলোচনা হওয়ার কথাই ছিল না। তাই উদ্ধব আর ওই অনুষ্ঠানে যাননি।
মহারাষ্ট্রে জোট গঠনেও যে নরেন্দ্র মোদীই শেষ কথা বলবেন তা ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট সকলকে বুঝিয়ে দিয়েছেন বিজেপি ও আরএসএস শীর্ষ নেতৃত্ব। আগামিকাল সাংসদদের জন্য মোদীর ভোজসভায় হাজির থাকবেন শিবসেনার সদস্যরাও। কিন্তু শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে মোদীর আলোচনার সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা চলছিল কয়েক দিন ধরে।
উদ্ধব সাংসদ নন, তাই আগামিকালের অনুষ্ঠানে তিনি নিমন্ত্রিত নন। আজ হাসপাতাল উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি বিভিন্ন স্তরের শীর্ষ ব্যক্তিত্বদের আমন্ত্রণ করেছিলেন নীতা ও মুকেশ অম্বানী। তাঁদের মধ্যে ছিলেন উদ্ধবও। তাই আজ মোদী-উদ্ধব বৈঠকের সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। কিন্তু প্রফুল্ল পটেল, দেবেন্দ্র ফডণবীস, রাজীব শুক্লের মতো এনসিপি, বিজেপি ও কংগ্রেসের অনেক নেতা উপস্থিত থাকলেও অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন না উদ্ধব। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের সম্ভাবনাও এড়িয়ে গিয়েছেন শিবসেনা প্রধান।
শিবসেনা অবশ্য জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী সামাজিক কারণে মুম্বইয়ে এসেছিলেন। এই সফরে রাজনৈতিক আলোচনা হওয়ার কথাই ছিল না।
কিন্তু বিজেপি সূত্রে খবর, গতকাল থেকে জোট গঠনের আলোচনায় নতুন সমস্যা দেখা দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রিত্ব ও উপ-মুখ্যমন্ত্রিত্বের দাবি ছেড়েছে শিবসেনা। কিন্তু তার পরেও বিজেপি তাদের যে সব দফতর দিতে চাইছে তা উদ্ধবের পছন্দ হচ্ছে না। মহারাষ্ট্রে বিজেপি-র প্রাধান্য মেনে নিলেও মোদী-অমিত শাহদের সব দাবি মানলে উদ্ধবের রাজনৈতিক অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়তে পারে। তাই আপাতত স্নায়ুর লড়াই জারি রাখছে তারা।
আগামী সপ্তাহের মধ্যে মুম্বইয়ে সরকার গঠনের কাজ সেরে ফেলতে চায় বিজেপি। সোমবার জোট আলোচনার জন্য মুম্বইয়ে যেতে পারেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। শিবসেনার সঙ্গে সমঝোতা না হলে সংখ্যালঘু সরকার গঠনের পক্ষপাতী দলের একটি অংশ। সেক্ষেত্রে রাজ্যপালের কাছ থেকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য সময়ে জোট সমীকরণ নিয়ে নতুন ভাবে ভাবা যাবে। চাপ দেওয়া যাবে শিবসেনাকেও। ইতিমধ্যেই বিজেপিকে বাইরে থেকে সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে শরদ পওয়ারের এনসিপি। পওয়ারের সমর্থন না নিলেও এই প্রতিশ্রুতিকে দর কষাকষির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চায় বিজেপি। স্নায়ুর লড়াইয়ে কে জেতে তার উপরেই নির্ভর করছে মহারাষ্ট্র রাজনীতির ভবিষ্যৎ।