উবেরের দাবি, তারা ট্যাক্সি পরিবহণ বা রেডিও ট্যাক্সি সংস্থা নয়। বরং যাত্রী ও গাড়ির মধ্যে প্রযুক্তির মাধ্যমে যোগাযোগের সুতো বেঁধে দেওয়াই তাদের কাজ। যা সুষ্ঠু ভাবে করতে ভারতে তাদের মতো প্রযুক্তি নির্ভর সংস্থার জন্য আলাদা আইনি বন্দোবস্তের দাবি জানাল উবের ট্যাক্সি। সংস্থার অন্যতম কর্তা নীরজ সিঙ্ঘলের মতে, আর পাঁচটি পরিবহণ সংস্থার ধাঁচে তাঁদের ফেললে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়তে পারে প্রযুক্তির ব্যবহার।
নীরজের দাবি, যাত্রী সুরক্ষা উবেরের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যে কারণে স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে জোট বেঁধে নিরাপত্তাজনিত বিভিন্ন ব্যবস্থা নিচ্ছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে এ দেশে ব্যবসা বাড়ানোর লক্ষ্যে যথাযথ আইনি অনুমোদন ঝুলিতে পুরতে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির সঙ্গে আলোচনাও চলছে বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, গত বছর দিল্লিতে এক উবের-ট্যাক্সিচালকের বিরুদ্ধে যাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল। তারপর সেখানে তখন ওই পরিষেবা নিষিদ্ধ হয়। যা ছাপ ফেলে উবেরের ব্যবসায়।
শুক্রবার কলকাতায় নীরজ দাবি করেন, দিল্লির ঘটনার পরে জোরদার করা হয়েছে তাঁদের ব্যবসায় যুক্ত গাড়িগুলির চালকদের খুঁটিনাটি যাচাইয়ের ব্যবস্থা। যাত্রীর মোবাইলে গাড়ি ও চালকের যাবতীয় তথ্য যেমন থাকছে, তেমনই বিপদে পড়লে পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে জরুরি বার্তা পৌঁছানোর ব্যবস্থাও থাকছে ফোনে সংস্থাটির অ্যাপে (অ্যাপ্লিকেশন)। তা ছাড়া, গাড়ির গতিবিধি নজরদারির ব্যবস্থা সংস্থার তথ্যভাণ্ডারেও থাকে।
মার্কিন সংস্থাটি যে পদ্ধতিতে ব্যবসা করে, তার ভিত্তি নিয়েই গোল বেধেছে ভারতে। নীরজের দাবি, তাঁরা কখনও ট্যাক্সি-পরিবহণ ব্যবসায় যুক্ত নন বা রেডিও-ট্যাক্সি সংস্থা নন। বাস্তবে একটি প্রযুক্তি সংস্থা, যারা যাত্রী ও গাড়ির মধ্যে সমন্বয় গড়ে দেওয়ার জন্য প্রযুক্তির সাহায্যে একটি মঞ্চ গড়েছেন। দু’তরফের মধ্যে যোগসূত্র ঘটিয়ে দেওয়াই তাঁদের ব্যবসার ভিত্তি। কিন্তু এ দেশে সংস্থাটিকে পরিবহণ সংস্থা হিসেবেই ধরা হচ্ছে। যদিও সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, সংস্থাটি দিল্লি-সরকারের কাছে রেডিও-ট্যাক্সি সংস্থা হিসেবেই ব্যবসা চালানোর অনুমোদন চেয়েছে। এ নিয়ে অবশ্য কিছু বলতে চাননি নীরজ।
তবে তিনি জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে বিধাননগর পুলিস কমিশনারেট উবেরকে প্রযুক্তি সংস্থা হিসেবেই অনুমোদন দিয়েছে। তাঁরা এ দেশের নিয়মকানুন মেনে চলার কথা বললেও, সংস্থার ব্যবসার পদ্ধতির সঙ্গে মানানসই কোনও আইন না থাকার ফল যে ভুগতে হচ্ছে, তা পরোক্ষে বুঝিয়ে দেন নীরজ। তাঁর মতে, তাঁদের মতো প্রযুক্তি সংস্থার জন্য আলাদা বিধি থাকলে এই প্রযুক্তির সুফল আরও সহজে ছড়াবে।
নীরজ জানান, আপাতত কলকাতা- সহ দেশের ১১টি শহরে এই ব্যবসা চালাচ্ছেন তাঁরা। যাত্রী সফর বৃদ্ধির হার প্রায় ৪০%। আগামী দিনে আরও নতুন শহরে পা রাখতে চান তাঁরা।