দেশের বাইরে রাখা কালো টাকা ফিরিয়ে আনবেন বলে লোকসভা ভোটের প্রচারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু এই বিষয় নিয়ে আজ সুপ্রিম কোর্টে পূর্বতন ইউপিএ সরকারের পথেই হাঁটল মোদী সরকার। সর্বোচ্চ আদালতে সরকারের যুক্তি, দ্বৈত কর ব্যবস্থা আটকাতে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ভারতের যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি রয়েছে, তার বাধ্যবাধকতার কারণেই কালো টাকা সম্পর্কে সব তথ্য প্রকাশ্যে আনা সম্ভব নয়। প্রধান বিচারপতি এইচ এল দাত্তুর আদালতে অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতগি এমন যুক্তিও দিয়েছেন যে, বিদেশি ব্যাঙ্কে গচ্ছিত সব টাকাই কালো টাকা না-ও হতে পারে। তবে পাল্টা যুক্তি দিয়ে আইনজীবী রাম জেঠমলানী মন্তব্য করেছেন, “এমন কথা দোষীদের মুখে শোভা পায়, সরকারের মুখে নয়।”
আদালতে সরকারের অবস্থান জানার পরেই মোদী সরকারকে নিশানা করে কংগ্রেস। দলের নেতা অজয় মাকেন মন্তব্য করেছেন, “কালো টাকা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যখন কিছু করতেই পারবেন না, তা হলে ভোটের প্রচারে উনি এত বড় বড় কথা বলেছিলেন কেন?” কংগ্রেসের অভিযোগের জবাব দিতে নামেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। তাঁর পাল্টা দাবি, নরসিংহ রাও জমানায় জার্মানির সঙ্গে সরকার যে চুক্তি করেছিল, তার ফলেই কালো টাকা নিয়ে আদালতে মামলা চলাকালীন কারও নাম প্রকাশ করা যায় না।
তবে জেটলি জানান, সুইস ব্যাঙ্কে ভারতীয়দের টাকা রাখার বিষয়ে সে দেশের সরকার আরও তথ্য দিতে সম্মত হয়েছে। রাজস্বসচিব শক্তিকান্ত দাসের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সে দেশের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে জেটলিকে সব কিছু জানিয়েছেন। জেটলির
দাবি, সুইৎজারল্যান্ড অতীতে কোনও তথ্য দিতে উৎসাহ না দেখালেও এখন জানিয়েছে, যদি ভারতীয় তদন্তকারী সংস্থা সুইস ব্যাঙ্কে টাকা রেখেছেন, এমন কোনও বিশেষ ব্যক্তির সম্পর্কে তথ্যপ্রমাণ পায়, তা হলে সেই ব্যক্তি সম্পর্কে তথ্য আদানপ্রদান করতে সুইৎজারল্যান্ডেরও অসুবিধা নেই। পাশাপাশি, সে দেশের আয়কর কর্তৃপক্ষও ভারতীয় সংস্থার প্রশ্নের জবাব দিতে রাজি হয়েছেন।
কালো টাকা নিয়ে তথ্য দিতে দু’দেশের ভিতরে একটি চুক্তি করা নিয়েও কথা এগোচ্ছে বলে জেটলি জানিয়েছেন।