দীপক ভট্টাচার্য।
শ্রীনিকেতনের কৃষি-অর্থনৈতিক গবেষণা কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কর্মীদের বেতন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে লড়াইতে পাশে দাঁড়ালেন দীপক ভট্টাচার্য। কার্যত বিনা পারিশ্রমিকে মামলা লড়ে বিপদগ্রস্ত মানুষগুলির পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি।
সত্তরের দশকে সেনাবাহিনীর একই ব্রিগেডের ৫০ জন ভারতীয় জওয়ানকে পাকিস্তানের হয়ে চরবৃত্তির অভিযোগে একই দিনে সেনাবাহিনী থেকে বহিষ্কার করা হয়। এর মধ্যে সাত জন অভিযুক্ত জওয়ানের পাশেও রয়েছেন বাঙালি আইনজীবী দীপক ভট্টাচার্য। ওই সেনা জওয়ানদের মামলা চালানোর কড়ি না থাকলেও দীপকবাবু লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।
বর্তমানে দিল্লিনিবাসী এই আইনজীবী কর্মজীবনের শুরুতে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধান আইন উপদেষ্টা ছিলেন। তারপর সুপ্রিম কোর্টে স্বাধীন ভাবে ওকালতি শুরু করেন। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও আমেরিকা, ব্রিটেন, সিঙ্গাপুরে তিনি আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পাশাপাশি, সমাজসেবাও চালিয়ে যাচ্ছেন।
কেমন সেই সমাজসেবা?
১৯৫৪ সালে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রক ভারতের প্রায় সাতটি রাজ্যে কৃষি-অর্থনৈতিক গবেষণা কেন্দ্র তৈরি করে। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় তার অন্যতম। এই বিভাগের কর্মচারীরা ১৯৯৬ থেকে সরকার অনুমোদিত বেতন, পেনশন-সহ সব সুযোগ-সুবিধা পেতে শুরু করেন।। ২০০৯ পর্যন্ত সব ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু ২০০৯ থেকে সরকার সাহায্যের হাত তুলে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বভারতীও একপ্রকার বিনা নোটিসে সব সাহায্য তুলে দিয়ে বিভাগটি বন্ধ করে দেয়। রাস্তায় এসে দাঁড়ান কর্মীরা। এই বিভাগের কর্মী রাধারঞ্জন পট্টনায়েক বলেন, “নিম্ন আদালত থেকে উচ্চ আদালত, সেখান থেকে সুপ্রিম কোর্ট, পকেটে এক পয়সাও ছিল না। এই অবস্থায় দীপকবাবু আমাদের পাশে না থাকলে আমরা সবাই শেষ হয়ে যেতাম। এই লড়াই চলাকালীন আমাদের মধ্যে এক জন মারা গিয়েছেন, দু’জন প্রচণ্ড অসুস্থ আর আমার স্ত্রী মরণাপন্ন।’’ একই ভাবে কোনও সাক্ষ্যপ্রমাণ ছাড়া কোর্টমার্শালে বরখাস্ত হওয়া জওয়ানদেরও পাশেও দাঁড়িয়েছেন তিনি। প্রেসিডেন্সি ও সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের এই প্রাক্তন ছাত্র ইন্টারন্যাশনাল ল’ অ্যাসোসিয়েশনের স্থায়ী প্রবক্তা হিসেবে বার্লিন, রিও ডি’জেনেইরো-তে অংশ নিয়েছেন।