কর্তারা সংসদে, গিন্নিরা বিজেপির লেডিজ ক্লাবে

স্বামীরা সাংসদ হয়েছেন। গিন্নিরা কি শুধু হেঁসেলই সামলাবেন? নরেন্দ্র মোদী চান, দলীয় সাংসদদের স্ত্রী-রাও দেশ গড়ার কাজে সামিল হোন। মোদীর পরামর্শেই বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ আজ সকালে বিজেপির সংসদীয় দলের বৈঠকে প্রস্তাবটি তোলেন। এমনিতেই অবশ্য বহু সাংসদ যখন নিজের কেন্দ্রে রোদে-জলে ঘাম ঝরিয়ে ঘোরেন, তখন তাঁদের স্ত্রী-রা তার শরিক হন। আবার অনেকের স্ত্রী যানও না। মোদী কিন্তু চাইছেন, সব সাংসদ-পত্নীদের নিয়েই এ বারে একটি পৃথক মঞ্চ তৈরি করা হোক।

Advertisement

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৪ ০২:৪৪
Share:

স্বামীরা সাংসদ হয়েছেন। গিন্নিরা কি শুধু হেঁসেলই সামলাবেন? নরেন্দ্র মোদী চান, দলীয় সাংসদদের স্ত্রী-রাও দেশ গড়ার কাজে সামিল হোন। মোদীর পরামর্শেই বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ আজ সকালে বিজেপির সংসদীয় দলের বৈঠকে প্রস্তাবটি তোলেন।

Advertisement

এমনিতেই অবশ্য বহু সাংসদ যখন নিজের কেন্দ্রে রোদে-জলে ঘাম ঝরিয়ে ঘোরেন, তখন তাঁদের স্ত্রী-রা তার শরিক হন। আবার অনেকের স্ত্রী যানও না। মোদী কিন্তু চাইছেন, সব সাংসদ-পত্নীদের নিয়েই এ বারে একটি পৃথক মঞ্চ তৈরি করা হোক। তাঁরা এক ছাতার তলায় আসুন। আড্ডা, গল্প-গুজবের ফাঁকেই আদান-প্রদান হোক ভাবনার। তাঁরা সরকারের কর্মসূচির কথা শুনুন। যাতে স্বামীর কেন্দ্রে ফিরে গিয়ে তাঁরাও মানুষকে বোঝাতে পারেন সে সব।

বছর চারেক আগে বিজেপিতেই ‘কমল-সখী মঞ্চ’ বলে একটি গোষ্ঠী তৈরি করা হয়েছিল। প্রকাশ জাভড়েকরের স্ত্রী প্রাচী তার আহ্বায়ক ছিলেন। ‘এক দল, এক পরিবার’, এই ভাবনা থেকেই তখন সাংসদদের স্ত্রীদের একজোট করার পদক্ষেপ করা হয়েছিল। একসঙ্গে অনেক বার বসে আলাপ-আলোচনাও হয়েছিল। লালকৃষ্ণ আডবাণী-রাজনাথ সিংহ-নিতিন গডকড়ীর স্ত্রী, বর্তমান স্পিকার সুমিত্রা মহাজন, সুষমা স্বরাজ, সেই সময়ের মহিলা মোর্চার প্রধান ও বর্তমান মন্ত্রী স্মৃতি ইরানিরা বিভিন্ন বিষয়ে দলের অবস্থান নিয়ে নিজেরা কথাবার্তা বলেছেন। কিন্তু তখন বিজেপি ছিল বিরোধী শিবিরে। আজ সরকারে। ফলে দায়িত্ব অনেক বেড়েছে। সাংসদদের সংখ্যাও এখন অনেক। তাঁদের অনেকের স্ত্রী দিল্লি আসেন না। তাই এখন নতুন করে সকলকে একত্রিত করার চেষ্টা হবে।

Advertisement

বেঙ্কাইয়া নায়ডু বলছেন, সুষমার উদ্যোগে পুরনো ‘কমল-সখী মঞ্চ’কেই নতুন করে সক্রিয় করা হবে। যাতে সাংসদ-পত্নীদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। সকলে নিজেদের এক পরিবারের মানুষ বলে অনুভব করেন। নানা সময়ে সরকারের কর্মসূচির ব্যাপারেও তাঁদের জানানো হবে।

সরকারের বিভিন্ন বিভাগে অফিসারদের স্ত্রীদের নিয়ে পৃথক গোষ্ঠী বানানোর চল অবশ্য আগে থেকেই রয়েছে। সে রেল মন্ত্রকের অফিসারই হোন বা সেনার। বিজেপির এই মঞ্চও আগাগোড়া মহিলাদের নিয়ে। লেডিজ ক্লাবই বলা যায়। যে সাংসদরা এ বারে প্রথম জিতে এসেছেন, তাঁরা অনেকেই দলের এই অভিনব উদ্যোগে উচ্ছ্বসিত। বৈঠকের পরে তাঁদের নিজেদের মধ্যে আলোচনার বিষয়ও ছিল এটা। সুষমার মুখে এই প্রস্তাব শোনার পর অনেকেই নিজের স্ত্রীকে ফোন করে ফেলেছেন দিল্লি আসার জন্য। কারণ, এখনও এক মাস চলবে সংসদের অধিবেশন। তার মধ্যে স্ত্রীদের নিয়ে প্রথম বৈঠকের আয়োজন হয়েও যেতে পারে।

কেবল আক্ষেপ করছেন মহিলা সাংসদরা। অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে প্রথম বার সাংসদ হয়েছেন গীতা কোথাপল্লি। হাসতে হাসতে তিনি বললেন, “এ তো রীতিমতো অবিচার! পুরুষ সাংসদদের স্ত্রীরা এতে সামিল হতে পারবেন। মহিলা সাংসদদের স্বামীদের কী হবে?” রসিকতা করে বেঙ্কাইয়া বলেন, “তাঁরাও দরকার হলে আসতে পারেন, যদি স্বচ্ছন্দ বোধ করেন!”

প্রশ্ন একটাই। উদ্যোগের হোতা নরেন্দ্র মোদী কী করবেন? প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী-ও কি সামিল হবেন এই আড্ডায়? এখনও পর্যন্ত যাঁকে রেস কোর্স রোডের ত্রিসীমানায় দেখাই যায়নি!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন