চলন্ত ট্রেন থেকে উধাও হয়ে গিয়েছেন গার্ড। চব্বিশ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও দীনেশ গোপ নামে ওই গার্ডের খোঁজ মেলেনি। পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনের নরগঞ্জ স্টেশনের কাছে ওই ঘটনার পরে রেল কর্মীদের মধ্যে ছড়িয়েছে আতঙ্ক। মাওবাদী প্রভাবিত ওই এলাকায় গার্ড-নিখোঁজের ঘটনার পরে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা রেলকর্মীদের একাংশ ওই এলাকায় পুলিশি প্রহরায় ট্রেন চালানোর দাবি তুলেছেন।
বৃহস্পতিবার রাতে জসিডি ছেড়ে কিউলের পথে খানিক এগিয়েছিল যাত্রিবাহী ওই ট্রেনটি। সিগন্যালিংয়ের সমস্যা থাকায় চালক ওয়াকিটকিতে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলেন ট্রেনের গার্ডের সঙ্গে। বার কয়েক চেষ্টা করেও সাড়া মেলেনি। ইতিমধ্যে ট্রেনটি নরগঞ্জ স্টেশনে পৌঁছয়। কিন্তু সেখানে আধ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার পরেও ট্রেন ছাড়ার কোনও সঙ্কেত না পেয়ে চালক নিজেই নামেন গার্ডের খোঁজে। কিন্তু গার্ডের ঘরে উঁকি মেরে তিনি দেখেন, কেউ নেই। আশপাশে খোঁজ করেও টর্চের আলোয় কিছুই নজরে পড়েনি তাঁর। এর পরেই জিআরপি থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন চালক। পরে ওই স্টেশন থেকে নতুন গার্ড নিয়ে ট্রেনটি ছাড়ে।
শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হয় তল্লাশি। পুলিশের সন্দেহ ছিল, চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে গিয়েছেন দীনেশবাবু। বেলার দিকে দীনেশবাবুর মোবাইলও সুইচড অফ হয়ে যায়। পুলিশ জানায়, সকালে ফোনটি খোলা ছিল। টাওয়ারের সন্ধান করে তখন নরগঞ্জের আশপাশেই তাঁর উপস্থিতিও টের পায় পুলিশ। শুক্রবার দিনভর পুলিশ ও রেল কর্তারা জসিডি পর্যন্ত তল্লাশি করলেও গার্ডের খোঁজ মেলেনি।
এ দিন সকালে মধুপুর স্টেশনে রেলকর্মীরা ওই গার্ডের দ্রুত উদ্ধারের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে যান আসানসোলের অতিরিক্ত ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার মহম্মদ ইশাক খান ও আরপিএফের সিনিয়র সিকিওরিটি কমিশনার অমরেশ কুমার। তাঁরা ওই গার্ডকে খোঁজার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ ওঠে। মহম্মদ ইশাক বলেন, “ওই রেলকর্মীকে খুঁজে বের করার সব রকম চেষ্টা করা হচ্ছে।” এ দিন জামুইয়ের পুলিশ সুপার উপেন্দ্র প্রসাদ সিংহ বলেন, “ওই রেলকর্মীকে উদ্ধার করাটাই এখন প্রধান কাজ। আমরা সে চেষ্টাই করছি।”