ছিল দ্বিতীয় ট্রলার, সন্দেহ গোয়েন্দাদের

একটা নয়, পাক জঙ্গিদের নিয়ে সম্ভবত দু’টো ট্রলার করাচির কেটি বন্দর থেকে ভারতের উদ্দেশে রওনা হয়েছিল বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। বর্ষশেষের রাতে আরব সাগরে এই দু’টি ট্রলারের মধ্যে একটিকেই ধাওয়া করে প্রায় ধরে ফেলেছিল উপকূল রক্ষী বাহিনী। তখনই ট্রলারের জঙ্গিরা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সেটিকে উড়িয়ে দেয়। গোয়েন্দাদের মতে, অন্য ট্রলারটিতেও জঙ্গিরা ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:৪৩
Share:

একটা নয়, পাক জঙ্গিদের নিয়ে সম্ভবত দু’টো ট্রলার করাচির কেটি বন্দর থেকে ভারতের উদ্দেশে রওনা হয়েছিল বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।

Advertisement

বর্ষশেষের রাতে আরব সাগরে এই দু’টি ট্রলারের মধ্যে একটিকেই ধাওয়া করে প্রায় ধরে ফেলেছিল উপকূল রক্ষী বাহিনী। তখনই ট্রলারের জঙ্গিরা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সেটিকে উড়িয়ে দেয়। গোয়েন্দাদের মতে, অন্য ট্রলারটিতেও জঙ্গিরা ছিল। কিন্তু যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দেওয়ায় সেটি সম্ভবত ফিরে গিয়ে মৎস্যজীবীদের ট্রলারের ঝাঁকে মিশে যায়। পাকিস্তান অবশ্য পত্রপাঠ দায় ঝেড়ে ফেলেছে। সে দেশের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র তসনিম আসলাম দাবি করেছেন, কেটি বন্দর থেকে কোনও ট্রলারই সমুদ্রে পাড়িয়ে দেয়নি।

শনিবার দিনভর তল্লাশি চালিয়েও আগুন লেগে ডুবে যাওয়া ট্রলারের কারও দেহ মেলেনি। অন্য ট্রলারটিরও সন্ধান চলছে বলে উপকূল রক্ষী বাহিনী সূত্রের খবর। আজ তারা দাবি করেছে, ডুবে যাওয়া ট্রলারটিতে নিশ্চিত ভাবেই বিস্ফোরক ছিল এবং ওই ট্রলারে কোনও মাছ ধরার জালও চোখে পড়েনি। উপকূল রক্ষী বাহিনীর উত্তর-পশ্চিম এলাকার কম্যান্ডার কুলদীপ সিং শেওরান বলেন, “আমরা যে চার জনকে ট্রলারে দেখেছিলাম, তাদের চেহারা মোটেই মৎস্যজীবীদের মতো নয়। টি-শার্ট, হাফ-প্যান্ট পরেছিল ওরা। তাতেই আমাদের সন্দেহ হয়।”

Advertisement

শেওরান জানান, ৩১শে ডিসেম্বর সকালে গোয়েন্দা সূত্রে সন্দেহজনক ট্রলারটি সম্পর্কে জানতে পেরেই তাঁদের একটি ডর্নিয়ার বিমান ও একটি জাহাজ তল্লাশিতে বেরোয়। দুপুর ১টার মধ্যে ট্রলারটিকে চিহ্নিত করে ফেলেন তাঁরা। মাঝরাত নাগাদ উপকূল রক্ষী বাহিনীর জাহাজ ‘রাজরতন’ ট্রলারটির কাছাকাছি পৌঁছয়। শেওরানের কথায়, “আমাদের জাহাজ যখন ওদের আত্মসমর্পণ করতে বলে, তখন ওরা এঁকেবেঁকে পালানোর চেষ্টা করে। ট্রলারের আলোও নিভিয়ে দেওয়া হয়। আমরা প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে ওদের তাড়া করি। শূন্যে গুলি চালানো সত্ত্বেও ওরা থামছিল না। খানিক পরে ওরা ট্রলারে আগুন লাগিয়ে দেয়।”

যদিও ট্রলারের আরোহীরা জঙ্গিই ছিল কি না, গোয়েন্দারাই তা খুঁজে বার করবেন বলে এই কর্তা জানিয়েছেন। ঘটনাস্থলের প্রায় ৩৬৫ কিলোমিটার দূরে পোরবন্দর। চলতি মাসেই নরেন্দ্র মোদীর রাজ্যে দু’টি সম্মেলন হওয়ার কথা ‘প্রবাসী ভারতীয় উৎসব’ ও ‘ভাইব্র্যান্ট গুজরাত’ শিল্প সম্মেলন। উপরন্তু প্রজাতন্ত্র দিবসে প্রধান অতিথি হয়ে এই মাসেই দিল্লি আসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।

গোয়েন্দাদের মতে, যে কোনও একটি অনুষ্ঠানে হামলা চালালে যে বিশ্বে অস্তিত্ব জানান দেওয়া যাবে, জঙ্গিরা তা জানে। তাই জলপথের পাশাপাশি কাশ্মীর সীমান্তেও পাক বাহিনীর গুলির আড়ালে ভারতে ঢোকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। এই পরিস্থিতিতে ২৬ জানুয়ারি নিয়ে ঝুঁকি নিতে চাইছে না স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কাশ্মীর সীমান্তের পাশাপাশি গুজরাত উপকূলেও চলছে কড়া নজরদারি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন