জেলে বন্দি সহারা-কর্তা সুব্রত রায়। তাতে চিন্তায় ছিল শিলচরের জেলে খুনের দায়ে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত রোহিত নুনিয়া। সহারায় জমানো স্থায়ী আমানতের টাকা ফেরত মিলবে কি না, তা নিয়ে আশঙ্কায় ভুগছিল। অবশেষে প্রশাসনের সাহায্যে সুদ-সহ সে ফেরত পেল ২৩ হাজার ১৪১ টাকা।
আজ কাছাড়ের জেলা বিচারক সঞ্জীবকুমার শর্মা ও মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট রমেন বরুয়া জেলে গিয়ে রোহিতের হাতে সহারার চেক তুলে দেন। সেখানে হাজির ছিলেন ভারপ্রাপ্ত জেল সুপার সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
জেল সূত্রের খবর, ‘সহারা রজত যোজনা’য় ২০০৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ১০ হাজার টাকা রেখেছিল রোহিত। ১০ বছরের স্থায়ী আমানত ছিল সেটি। খুনের অপরাধে তার কিছু দিন পরই তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। রোহিতের ঠিকানা হয় শিলচর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার। এ বছরের সেপ্টেম্বরে আমানতের মেয়াদ শেষ হয়। সহারা-কর্তা যে জেলে বন্দি, সে কথা শুনেছিল রোহিত। জেলের অন্য বন্দিরা তাকে বলেছিল, টাকা ফেরত পাওয়ার আশা ছেড়ে দিতে। কষ্ট করে জমানো টাকা হারাতে রাজি হয়নি রোহিত। সে যোগাযোগ করে ‘ডিস্ট্রিক্ট লিগ্যাল সার্ভিস অথরিটি’র সঙ্গে। আইনজীবী ধর্মানন্দ দেবকে বিষয়টি দেখার দায়িত্ব দেন ওই সংস্থার সচিব মাহমুদ হোসেন বড়ভুঁইঞা।
ধর্মানন্দবাবু জানান, ১৫ অক্টোবর সহারার স্থানীয় অফিসে চিঠি পাঠানো হয়। ৪ নভেম্বর রোহিতের আমানত সংক্রান্ত নথি চেয়ে পাঠান ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থাটির কর্তারা। ৮ ডিসেম্বর ফের সহারাকে পাঁচ দিনের সময়সীমা দিয়ে চিঠি পাঠান ধর্মানন্দবাবু। তার পরই ওই আইনজীবীর বাড়িতে চেক পাঠিয়ে দেয় সহারা।
সহারার তরফে খবর, আমানতকারীর হাতে চেক দেওয়ার রীতি রয়েছে। এ ক্ষেত্রে জেলে বন্দি আসামিকে কী ভাবে টাকা পৌঁছে দেওয়া হবে, তা নিয়ে ধন্দ ছিল। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ‘সবুজ সঙ্কেত’ পেয়েই চেক দেওয়া হয়েছে। টাকা ফেরত পেয়ে খুশি রোহিত। সে জানিয়েছে, টাকাটা সে রেখে দেবে ডাকঘরে। পরে কখনও দরকার পড়তেই পারে!