জওয়ানদের হাত ধরে বুথে ফিরল জঙ্গি দুর্গ সারান্ডা

মাওবাদী ‘দুর্গ’ সারান্ডায় বাড়ি বাড়ি ঘুরে ভোটারদের বুথে নিয়ে গেলেন জওয়ানরা। দ্বিতীয় দফার ভোটে এমনই ছবি দেখা গেল ঝাড়খণ্ডে। রাজ্যের ছ’টি লোকসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ-পর্ব মিটল কার্যত শান্তিপূর্ণ ভাবেই। আতঙ্ক ছড়াতে তৎপর ছিল মাওবাদীরা। সাধারণ মানুষকে ভয় দেখাতে গিরিডি কেন্দ্রের কয়েকটি এলাকায় ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

Advertisement

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

রাঁচি শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:৩৬
Share:

মাওবাদী হামলায় জখম জওয়ান। বোকারোয়। বৃহস্পতিবার। ছবি: চন্দন পাল।

মাওবাদী ‘দুর্গ’ সারান্ডায় বাড়ি বাড়ি ঘুরে ভোটারদের বুথে নিয়ে গেলেন জওয়ানরা।

Advertisement

দ্বিতীয় দফার ভোটে এমনই ছবি দেখা গেল ঝাড়খণ্ডে। রাজ্যের ছ’টি লোকসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ-পর্ব মিটল কার্যত শান্তিপূর্ণ ভাবেই।

আতঙ্ক ছড়াতে তৎপর ছিল মাওবাদীরা। সাধারণ মানুষকে ভয় দেখাতে গিরিডি কেন্দ্রের কয়েকটি এলাকায় ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। উড়িয়ে দেওয়া হয় রেললাইন, স্কুলবাড়ি। জঙ্গিদের গুলিতে জখম হন ৪ নিরাপত্তা কর্মী-সহ পাঁচ জন। কিন্তু মাওবাদীদের ভয়ে বাড়িতে বসে থাকেননি অধিকাংশ ভোটার। কমিশনের দেওয়া হিসেবই তার প্রমাণ। ভোট গ্রহণের সময় শেষ হওয়ার পরে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক পি কে জাজোরিয়া জানালেন, ছ’টি কেন্দ্রের বুথে হাজির হয়েছিলেন গড়ে ৬২ শতাংশ ভোটার।

Advertisement

আজ ভোট ছিল রাঁচি, হাজারিবাগ, সিংভূম, খুঁটি, গিরিডি, জামশেদপুরে। তার মধ্যে গিরিডি, সিংভূম মাওবাদী অধ্যুষিত।

জঙ্গি করিডর হিসেবে চিহ্নিত সিংভূমে নাশকতার ভয় উড়িয়ে বুথ-মুখী হলেন নাগরিকরা। ভোট-পর্ব শেষে তাঁরা জানালেন, দেড় দশক পর গণতন্ত্রের জয় হল সারান্ডায়। এক সময় মাওবাদীদের ‘হুলিয়া’য় ভোটের দিন ঘর-বন্দি থাকতেন সেখানকার গ্রামবাসীরা। এ দিন ছবিটা ছিল একেবারেই অন্য রকম। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, বুথে বুথে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন ছিল। যে সব এলাকার ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ভিড় কম ছিল, সেখানে দুপুরের দিকে বাড়ি বাড়ি ঘুরে ভোটারদের বুথে নিয়ে যায় নিরাপত্তা বাহিনী।

প্রশাসনের বক্তব্য, এক মাস ধরে সারান্ডার জঙ্গলে টহল দিয়েছে আধা-সেনা, ঝাড়খণ্ড জাগুয়ার, জেলা পুলিশ আর রিজার্ভ ব্যাটেলিয়ন। ভোটের ২৪ ঘণ্টা আগে নজরদারি আরও বাড়ানো হয়। বেগতিক দেখে সারান্ডার ধারেল কাছে ঘেঁষতে পারেনি জঙ্গিরা।

গিরিডিতে অবশ্য সুযোগ খুঁজে নেয় মাওবাদীরা। আজ ভোরে ওই কেন্দ্রের অন্তর্গত বোকারোর দানিয়ার কাছে বিস্ফোরণে তারা দেড় মিটার রেললাইন উড়িয়ে দেয়। এই হামলার জেরে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের কয়েকটি জায়গায় রেল পরিষেবা ব্যাহত হয়। বোকারোর গোমিয়ায় টহলদারির সময় টুলবুল গ্রামের ঝুমরা পাহাড়ে জঙ্গি-ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে জখম হন কেন্দ্রীয় বাহিনীর তিন জওয়ান ও তাঁদের জিপের চালক। টুলবুলের কাছে লালপনিয়া গ্রামে মাওবাদীদের গুলিতে আহত হন আরও এক জওয়ান। গিরিডির নারায়ণপুর গ্রামে একটি সরকারি স্কুল উড়িয়ে দেয় জঙ্গিরা। ওই লোকসভা কেন্দ্রের বিষুনপুর, চলকরি, হরলাডি এলাকায় বিস্ফোরণে কিছুটা আতঙ্ক ছড়ায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন