প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে সাহসিকতার জন্য পুরস্কার প্রাপক তালিকায় নাম ঘোষণা হয়েছিল। তার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই জঙ্গিদের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হলেন কর্নেল মুনীন্দ্র নাথ রাই। দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলায় মঙ্গলবারের এই সংঘর্ষে প্রাণ গিয়েছে রাজ্য পুলিশের বিশেষ জঙ্গিদমন শাখার এক কর্মীরও। আহত আরও দুই। সেনা সূত্রের খবর, টানা গুলির লড়াইয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত দুই হিজবুল মুজাহিদিন জঙ্গি।
শ্রীনগর থেকে ৩৬ কিলোমিটার দূরে ত্রালের হান্দুরা গ্রামের ঘটনা। সংঘর্ষে নিহত কর্নেল মুনীন্দ্র নাথ রাই ৪২ রাষ্ট্রীয় রাইফেলস-এর কম্যান্ডিং অফিসার ছিলেন। নিহত জঙ্গিদমন শাখার হেড কনস্টেবল সঞ্জীব সিংহের পাশাপাশি পরিচয় মিলেছে সংঘর্ষে হত দুই স্থানীয় জঙ্গিরও। সেনা সূত্রের খবর, আবিদ খান ও আহমদ দার নামের ওই দুই জঙ্গি দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় সক্রিয় ছিল।
সংঘর্ষের বিবরণ দিতে গিয়ে রাজ্য পুলিশের আইজি আব্দুল গনি মির জানান, “জঙ্গিঘাঁটির দখল নিতে গেলে হঠাৎই হামলা শুরু করে জঙ্গিরা। পাল্টা জবাব দেয় আমাদের সেনা এবং পুলিশও।” প্রাথমিক ভাবে গুরুতর আহত অবস্থাতেই স্থানীয় সেনা হাসপাতালে আনা হয় কর্নেল-সহ বাকিদের। ঘটনাস্থল থেকে ফিরে এক পুলিশকর্মী জানান, দুপুর দু’টো থেকে সংঘর্ষ শুরু হয়। চলে ঘণ্টা তিনেক। তাঁর কথায়, জঙ্গিরা এক সময় গ্রাম ছেড়ে পালানোর চেষ্টাও করে। সংঘর্ষ চলাকালীন মাথায় গুলি লাগে কর্নেল রাই ও নিহত অন্য পুলিশকর্মীর।
সেনার এক কর্তা জানান, আবিদ খান নামের ওই জঙ্গি সম্প্রতি তার ক্যানসার-আক্রান্ত ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে গ্রামের বাড়িতে আসে। সেই খবর পেয়েই যৌথ অভিযানের সিদ্ধান্ত নেয় রাষ্ট্রীয় রাইফেলস এবং রাজ্য পুলিশের বিশেষ জঙ্গিদমন শাখা।
দক্ষিণ কাশ্মীরে হিজবুল মুজাহিদিনের কম্যান্ডার হিসেবে ২০১২ থেকেই সক্রিয় ছিল আবিদ খান। পাশাপাশি, স্থানীয় যুবকদের জঙ্গি দলে নাম লেখানোর কাজও করত বলে সেনা সূত্রের খবর। উল্লেখযোগ্য, আবিদের বাবা জালালুদ্দিন খান রাজ্য পুলিশের এএসআই পদে কর্মরত। নিহত অপর জঙ্গির পরিচয় নিয়ে অবশ্য দ্বিমত রয়েছে। ২০১৪-র অক্টোবরে ত্রালে চার সেনা-জওয়ানকে মারার ঘটনায় আবিদের হাত ছিল বলে অভিযোগ প্রশাসনের।