জঙ্গি হানার আশঙ্কায় দিল্লি থেকে সরাসরি লাহৌর যাওয়ার বিশেষ বাসটিকে আপাতত চালানো হবে না। তার জায়গায় ব্যবহার করা হবে আর পাঁচটা বিলাসবহুল বাসের মতোই দেখতে অন্য কোনও বাস। পাকিস্তান ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (পিটিডিসি)-এর তরফে জানানো হয়েছে, ভারত-পাক ‘দোস্তি’ বাস পরিষেবার ওই বিশেষ কোচটিকে জঙ্গিরা নিশানা করছে বলে তাদের কাছে নির্দিষ্ট তথ্য রয়েছে। তাদের অনুরোধেই সাউথ ব্লক আপাতত ওই বাসটি না চালানোর ব্যাপারে একমত হয়েছে। ফলে এখন থেকে বাসে দিল্লি বা লাহৌর যেতে হলে ওয়াঘা সীমান্তে দু’দেশের যাত্রীদেরই বাস বদল করতে হবে।
দু’দেশের কর্তারা জানাচ্ছেন, বিশেষ বাসটির চেহারা অনেকেরই চেনা। তার সামনে ভারত ও পাকিস্তানের জাতীয় পতাকা আঁকা রয়েছে। যাত্রার সময় তার সামনে পুলিশের এসকর্টও থাকে। কাজেই বাসটিকে নিশানা করা অত্যন্ত সহজ। সেই কারণেই আপাতত লাহৌরমুখী যাত্রীরা ওই বাসটির বদলে অন্য কোনও ভারতীয় বাসে সীমান্তে আসবেন। অভিবাসন ও তল্লাশির পর হেঁটে সীমান্ত পেরোবেন তাঁরা। সীমান্তের ও-পারে অপেক্ষা করবে পাকিস্তানের বাস। সেই বাস তাঁদের লাহৌরে পৌঁছে দেবে। একই ভাবে লাহৌরের যাত্রীরা সীমান্তে বাস বদল করে পৌঁছবেন দিল্লি বা অমৃতসরে। পিটিডিসি-র এক কর্তা জানিয়েছেন, “এর ফলে দু’দিকের যাত্রীদেরই খুব অসুবিধে হবে, কিন্তু যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
১৯৯৯ সালে লাহৌর বাসযাত্রা শুরুর সময়েই নওয়াজ শরিফই ছিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী। আর ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর দল বিজেপি-ই এখন দিল্লির মসনদে। ’৯৯-তে বাস চালানোর পরেই বেধেছিল কার্গিল যুদ্ধ। তা সত্ত্বেও বাস পরিষেবা সে বার বন্ধ হয়নি। বরং তা থমকে গিয়েছিল ২০০১-এ সংসদে হানার পর। গত বছরের শেষ থেকেই সীমান্তে গুলি-বিনিময় ও আরব সাগরে সন্দেহজনক ট্রলারে বিস্ফোরণ ঘিরে ভারত-পাক সম্পর্কে টানাপড়েন চলছে।
এই পরিস্থিতিতেও বিশেষ বাসে জঙ্গি হানা রুখতে দু’দেশের এ ভাবে হাত মেলানো তাৎপর্যপূর্ণ। নভেম্বরেই যেখানে ওয়াঘা সীমান্তেই আত্মঘাতী হামলায় মারা যান ৬০ জন পাক নাগরিক। এর আগে বিস্ফোরণ হয়েছে ভারত-পাক সমঝোতা এক্সপ্রেসে। বাসের ক্ষেত্রে তাই কোনও ঝুঁকিই নিতে নারাজ দু’দেশ।