নয়া জমানায় বলিষ্ঠ কূটনীতি সাউথ ব্লকের

জয়ার ক্ষোভ, তবু স্বাগত রাজাপক্ষে

এক দিকে দ্রাবিড়-বলয়ের রাজনৈতিক বিক্ষোভ। অন্য দিকে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মহিন্দা রাজাপক্ষের লাল কার্পেটের উপর দিয়ে হাসিমুখে হেঁটে রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রবেশের ছবি। এই বৈপরীত্যের মধ্যেই ভারত-শ্রীলঙ্কা সম্পর্কের নতুন যাত্রা শুরু হল বলে মনে করছে কূটনৈতিক শিবির।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৪ ০৪:০৫
Share:

এক দিকে দ্রাবিড়-বলয়ের রাজনৈতিক বিক্ষোভ। অন্য দিকে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মহিন্দা রাজাপক্ষের লাল কার্পেটের উপর দিয়ে হাসিমুখে হেঁটে রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রবেশের ছবি। এই বৈপরীত্যের মধ্যেই ভারত-শ্রীলঙ্কা সম্পর্কের নতুন যাত্রা শুরু হল বলে মনে করছে কূটনৈতিক শিবির।

Advertisement

গত দশ বছরে একটি বারের জন্যও শ্রীলঙ্কা সফরে গিয়ে উঠতে পারেননি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। রাজনৈতিক সূত্রের মতে, সনিয়া গাঁধী তথা কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব দক্ষিণ ভারতের তামিল আবেগের কাছে নতজানু হয়েছেন। তা-ই এই সফরে অনীহা দেখিয়েছে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়। তামিল রাজনৈতিক দলগুলির চাপে রাষ্ট্রপুঞ্জেও রাজাপক্ষে সরকারের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে ভারত।

এই সুযোগে চিন শ্রীলঙ্কার ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। সে দেশে বন্দর, নৌ ঘাঁটি এবং বিভিন্ন প্রতিরক্ষা পরিকাঠামো চিন তৈরি করছে, তা জানা সত্ত্বেও কিছু করে উঠতে পারেনি মনমোহনের সরকার। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী স্পষ্ট করে দিয়েছেন, নিরাপত্তা এবং বাণিজ্যের প্রশ্নে শ্রীলঙ্কাকে পাশে নিয়েই তিনি এগোতে চান। গত কাল ভারতীয় তামিল ধীবরদের শ্রীলঙ্কার জেল থেকে মুক্তি দিয়ে ইতিবাচক বার্তা দিয়েছেন রাজাপক্ষেও।

Advertisement

রাজাপক্ষেকে আমন্ত্রণ করা নিয়ে তামিল দলগুলির প্রতিবাদ আজ যথারীতি চড়া স্বরে পৌঁছেছে। বিক্ষোভের জেরে আটক করা হয়েছে এনডিএ-রই শরিক দল এমডিএমকে-র নেতা ভাইকোকে। এই একই কারণে মোদীর শপথ বয়কট করেছেন এডিএমকে নেত্রী জয়ললিতা। নিমন্ত্রণ পাওয়া সত্ত্বেও আসেননি রজনীকান্ত (যদিও ৬৩ বছর বয়সি এই অভিনেতা জানিয়েছেন, তিনি একটি ছবির শু্যটিংয়ে ব্যস্ত)। তামিলনাড়ুর বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ হয়েছে। আগামী কাল হায়দরাবাদ হাউসে রাজাপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন তিনি।

রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ায় আত্মবিশ্বাসী মোদীর শ্রীলঙ্কা নীতি নিয়ে নতজানু হওয়ার কোনও প্রশ্নই উঠছে না। তামিলনাড়ুতে বিজেপি-র রাজনৈতিক ভিতও উল্লেখযোগ্য কিছু নয়, যে রাজাপক্ষে আসায় তা হারানোর ভয় থাকবে। অন্য দিকে তামিল দলগুলিও এটা জানে যে এই বিরোধিতা করে তারা মোদীকে কোনও ভাবেই নিরস্ত করতে পারবে না। ঘরোয়া রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার ফলে জয়ললিতা বা ভাইকোকে যে রাজাপক্ষে-বিরোধিতা করতেই হবে তা জানেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। জঙ্গি সংগঠন এলটিটিই-র সঙ্গে লড়াইয়ের সময়ে শ্রীলঙ্কা সেনাবাহিনী তামিলদের গণহত্যা করেছে বলে দাবি তামিলনাড়ুর দলগুলির। রাজাপক্ষে যুদ্ধাপরাধী বলেও দাবি তাদের। এই বিষয়ে বরাবরই শ্রীলঙ্কার তামিলদের পাশে দাঁড়িয়েছেন জয়ললিতা-ভাইকোরা। এক বিজেপি নেতা জানিয়েছেন, তামিল নেতানেত্রীরা রাজাপক্ষে-বিরোধিতা করবেনই। কিন্তু জয়ললিতা মোদীর সঙ্গে সহযোগিতার কথাও বলেছেন। আজ যন্তরমন্তরে বিক্ষোভ দেখালেও ভাইকো রাজনাথ সিংহের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ রাখছেন।

শ্রীলঙ্কার সঙ্গে হাত মেলানোর নীতি নিয়েই এগোচ্ছেন মোদী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন