সোনাদানা নয়। টাকাপয়সাও নয়। ওরা শুধু দিনে ৩৫ বালতি জল চায়। ওদের হুমকি হয় জল দাও, নয় মরো। উত্তর ভারতের একটি বড় অংশ জুড়ে এ ভাবেই তাণ্ডব চালাচ্ছে সশস্ত্র ডাকাতরা।
কারণ সেখানে তীব্র জলাভাব। একে তো খরার দাপট। তার পাশাপাশি জল সরবরাহ ব্যবস্থাও তথৈবচ। তাই ডাকাতদের হুমকিতে মাথা নত করা ছাড়া উপায় নেই বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা। পুলিশ জানিয়েছে, নয় নয় করে উত্তর ভারতের ২৮টি গ্রাম প্রতিদিন বাধ্য হচ্ছে ডাকাতদের জল-শুল্ক দিতে। ডাকাতরা শাসায়, শুল্ক হিসেবে গ্রামবাসীরা তাদের জল পাঠাবে।
উত্তরপ্রদেশের দক্ষিণ সীমান্তে বান্দার এসপি সুরেশকুমার সিংহ জানিয়েছেন, এই এলাকায় জলের খুবই অভাব। গ্রামবাসীরা নিজেদের কাজ ঠিকমতো মেটানোর জলটুকুও পায় না। তার মধ্যে ডাকাতদের রমরমা। এই দলটি বলখরিয়া নামে পরিচিত। ওই বিস্তীর্ণ অঞ্চলটি জল সরবরাহের লাইন থেকে বিচ্ছিন্ন। ২০০৭ সাল থেকে বৃষ্টিপাতও খুব কমে গিয়েছে এলাকায়। সুরেশের দাবি, ডাকাতরা প্রায়শই তাই আশপাশের গ্রামে ঢুকে আশ্রয় নেয়। খাবার বা জল চায়। গ্রামবাসীদের মধ্যে ভগবত প্রসাদ নামে এক জন বললেন, “বলখরিয়ার হুকুম মানা ছাড়া পথ নেই।” জলের জন্য গ্রামবাসীরা কখনও কখনও চার কিলোমিটার পথও হাঁটতে বাধ্য হন।
কিন্তু ডাকাতরা সব ছেড়ে জল চাইছে কেন? পুলিশের বক্তব্য, বলখরিয়ার ডাকাতদল যে সব এলাকায় আত্মগোপন করে থাকে, সেখানকার হ্রদ বা ঝর্নাও শুকিয়ে গিয়েছে। তাই লোকালয়ের কাছে এসে জল জোগাড় করতে হয়। যেটা ডাকাত দলের পক্ষে ঝুঁকির। পুলিশের হাতে ধরা পড়ার ভয়ে তাই ডাকাতরা জলের জন্য জুলুম চালাচ্ছে গ্রামবাসীদের উপরেই। বলখরিয়ার নেতার মাথার দাম আড়াই লক্ষ টাকা। খুন, লুঠপাট এবং অপহরণের মতো অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।