গত বার হয়নি। তাই এ বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সফরের তালিকায় প্রথম থেকেই স্থান পেয়েছে তাজমহল দর্শন। সফরসূচি অনুযায়ী আগামী ২৭ জানুয়ারি সস্ত্রীক তাজমহল দর্শনে যাবেন তিনি। স্বভাবতই সফরের এক সপ্তাহ আগে থেকেই নিরাপত্তার কড়াকড়ি শুরু হয়ে গিয়েছে আগরা জুড়ে।
প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে নিজস্ব এয়ার ফোর্স ওয়ান বিমানেই আগরা যাবেন ওবামা। নামবেন আগরার খেড়িয়া এয়ারবেসে। ১৯৪৭ সালে আগরায় সেনাবাহিনীর ব্যবহারের জন্য ওই বিমানবন্দরটি তৈরি করা হয়েছিল। মার্কিন প্রেসিডেন্টের আগরা সফর চূড়ান্ত হওয়ার পরে ওই বিমানবন্দরে এয়ারফোর্স ওয়ানের মতো ৭৪৭-২০০বি-এর মতো পেল্লাই বোয়িং বিমান নামতে পারে কিনা তা খতিয়ে দেখেন ভারতীয় ও মার্কিন গোয়েন্দারা। রানওয়ে, বিমানবন্দরের পরিকাঠামো খতিয়ে দেখে তবে এয়ার ফোর্স ওয়ান নামার বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত দেন মার্কিন গোয়েন্দারা।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে খবর, দিল্লি থেকে সোজা নিজস্ব বিমানে করে আগরার খেড়িয়া বিমানবন্দরে নামবেন ওবামা। সেখান থেকে তাজমহলের দূরত্ব ১১ কিলোমিটার। ওই রাস্তাটি তিনি পাড়ি দেবেন নিজস্ব গাড়ি বিস্ট-এই। ইতিমধ্যেই গোটা রাস্তাটিতে সিসিটিভি বসানোর কাজ শুরু করেছে আগরা প্রশাসন। সিক্রেট সার্ভিসের গোয়েন্দারা ছাড়াও ওবামার নিরাপত্তার জন্য আধা সামরিক বাহিনী, পুলিশ মিলিয়ে প্রায় দশ হাজার নিরাপত্তরক্ষী মোতায়েন করা হবে। ওবামার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে একাধিক হেলিকপ্টার ভাড়া নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আগরা প্রশাসন। গত এক সপ্তাহ ধরে আগরায় ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে মার্কিন গোয়েন্দাদের একটি দল। ওবামার নিরাপত্তার প্রশ্নে ২৭ জানুয়ারি তাজমহল বন্ধ থাকছে। মার্কিন গোয়েন্দাদের অনুরোধে সম্ভবত প্রজাতন্ত্র দিবসেও বন্ধ থাকবে তাজমহল। খুলবে ২৮ জানুয়ারি।
কিন্তু যদি কুয়াশা থাকে?
বছরের এই সময়ে সকালের দিকে দিল্লিতে বিমান চলাচলের জন্য দৃশ্যমানতা নিয়ে বরাবরই প্রশ্ন থাকে। এ বছরেও কুয়াশার কারণে ফি দিন দেরিতে চলছে একাধিক বিমান। ফলে ২৭ জানুয়ারির সকালে যদি ওবামার বিমান উড়তে না পারে, সেই পরিস্থিতিতে তাজ দর্শনের জন্য সড়ক পথকেই বেছে নিতে চাইছেন মার্কিন গোয়েন্দারা। এই সফরের পরিবর্ত পথ হিসেবে গ্রেটার নয়ডা থেকে আগরার মধ্যে তৈরি হওয়া আট লেনের যমুনা এক্সপ্রেসওয়েকেই বেছে নিয়েছেন মার্কিন গোয়েন্দারা। সূত্রের খবর, ওবামা তাজমহল দর্শন করে দিল্লি ফিরে না আসা পর্যন্ত ওই রাস্তা সাধারণের জন্য বন্ধ রাখা হবে বলে ঠিক করা হয়েছে।
প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে বায়ুসেনার মহড়া বন্ধ রাখার যে অনুরোধ মার্কিন প্রশাসন করেছিল তা খারিজ করেছে কেন্দ্র। কিন্তু সে সময়ে আকাশপথে যে কোনও ধরনের হামলা রুখতে একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছে। সূত্রের খবর, দিল্লি সংলগ্ন গাজিয়াবাদের হিন্ডন এয়ারবেস ছাড়াও, বরেলী, আগরা, আদমপুর, ভাটিন্ডা, গ্বালিয়রের মতো একাধিক এয়ারবেসকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে যাতে তিন থেকে পাঁচ মিনিটে উড়তে সক্ষম হয় যুদ্ধবিমান। একই সঙ্গে প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানের সময়ে র্যাডার যুক্ত পী-৮ আই বিমানের সাহায্যে দিল্লির আকাশে নজর রাখা হবে বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। নজরদারির জন্য ব্যবহার করা হবে আগরা এয়ারবেসে থাকা অ্যাবাকাস রেডারও।