আগরতলায় বিবেকানন্দ স্টেডিয়ামে কংগ্রেসের জনসভায় সোমেন মিত্র। সঙ্গে ত্রিপুরার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সুদীপ রায়বর্মন। বৃহস্পতিবার। ছবি: বাপি রায়চৌধুরী।
ক’দিন আগেই এই একই জায়গায় সভা করে গিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ডাক দিয়েছিলেন ত্রিপুরার অচলায়তন ভাঙার। ত্রিপুরায় পরিবর্তনের কাণ্ডারি হিসেবে তুলে ধরেছিলেন নিজেকে, তাঁর দল তৃণমূল কংগ্রেসকে। আজ সেই বিবেকানন্দ স্টেডিয়ামে দাঁড়িয়েই ত্রিপুরায় বামপন্থী ‘দলতন্ত্র’-এর বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে ত্রিপুরাবাসীকে মমতার ‘একনায়কতন্ত্র’ সম্পর্কে সতর্ক করলেন সদ্য তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে ফিরে আসা, পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেস নেতা সোমেন মিত্র।
প্রাক্তন ‘তৃণমূল সাংসদ’ বলেন, ‘‘সিপিএমের হাত থেকে রেহাই পেতেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলাম। চেয়েছিলাম বাংলায় পরিবর্তন হোক। পরিবর্তন হয়েছে ঠিক। কিন্তু সিপিএমের শাসন শেষ হলেও যে পরিবর্তনের স্বপ্ন আমরা দেখেছিলাম তা হয়নি। বাম জমানার দলতন্ত্রের বদলে বাংলায় এখন একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।” তাঁর কথায়, “এই পরিবর্তনে বাংলার ভাল হয়নি। পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে।” তাঁর কথায় বাংলায় এখন কার্যত ‘স্বৈরাচারী শাসন’ চলছে। কেন ফিরলেন কংগ্রেসে? সোমেনবাবুর বক্তব্য, “আসলে কংগ্রেসই দেশের একমাত্র মুক্ত প্রতিবাদী রাজনৈতিক মঞ্চ।” সে কারণেই তাঁর ঘরে ফিরে আসা। তাঁর কথায়, তিনি যে ভুল করেছিলেন তার পুনরাবৃত্তি যেন ত্রিপুরাবাসী না করেন।
কার্যত আজকের এই সভা থেকেই রাজ্য কংগ্রেস নেতৃত্ব তাঁদের জোটসঙ্গীদের নিয়ে পুরোদমে নির্বাচনী প্রচারে নেমে পড়লেন। সমাবেশে প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অধিকাংশ দলীয় বিধায়ক। এ ছাড়াও হাজির ছিলেন রাজ্যে কংগ্রেসের জোটসঙ্গী দুই উপজাতি দল, আইএনপিটি ও এনসিটি নেতৃত্ব। ছিলেন পিডিএসের রাজ্য নেতারাও। মঞ্চে হাজির ছিলেন দলের দুই প্রার্থীই। পশ্চিম ত্রিপুরার প্রার্থী অরুণোদয় সাহা এবং পূর্ব ত্রিপুরা (সংরক্ষিত) কেন্দ্রের প্রার্থী বিচিত্র দেববর্মা। এক দিকে দেশের অখণ্ডতা তথা জাতীয় ঐক্য রক্ষার আবেদন, অন্য দিকে ত্রিপুরায় বামফ্রন্টের অপশাসন থেকে মুক্তিমূলত রাজ্য কংগ্রেস নেতারা এই দু’টি বিষয়কে সামনে রেখেই আজ সওয়াল করলেন। পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসের আর এক নেতা সর্দার আমজাদ আলি একদিকে সিপিএম, অন্য দিকে বিজেপিকে আক্রমণ করে বলেন, ‘‘সিপিএম, বিজেপি কংগ্রেসকে লোকসভা ভোটে ডুবন্ত জাহাজ হিসেবে চিহ্নিত করতে চাইছে। কংগ্রেস আসলে ডুবন্ত জাতির লাইফবোট।”