ভোটের ময়দানে রাজনীতির যুদ্ধের বিষয় এ বার দাউদ ইব্রাহিম।
বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদী এ বারের ভোট-পর্বে এই প্রথম দাউদ নিয়ে মুখ খুললেন আজ। দাউদকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে ইউপিএ সরকারের রণকৌশলের কড়া সমালোচনা করেছেন তিনি। কিছু দিন আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্দে জানিয়েছিলেন, দাউদকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে কাজ করছে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই এ বিষয়ে ভারতকে সাহায্য করছে বলেও জানান তিনি। আজ শিন্দেকে ‘অপরিণত’ আখ্যা দিয়ে মোদী বলেন, “এ সব বিষয় কি সংবাদমাধ্যমে আলোচনা করার বিষয়? পাকিস্তানের অ্যাবটাবাদে ওসাবা বিন লাদেনের ডেরায় অভিযান চালানোর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কি সাংবাদিক বৈঠক করেছিল? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এতই অপরিণত যে, দেখেশুনে আমি লজ্জিত বোধ করি।”
মোদীর এই মন্তব্যে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, তিনি প্রধানমন্ত্রী হলে দাউদকে ভারতে ফিরিয়ে আনার জন্য কি পাকিস্তানে অভিযান চালানো হবে! আজ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম প্রশ্ন তুলেছেন, “দাউদকে ভারতে আনার বিষয়ে মোদীর পরিকল্পনাটা কী? আমরা কোনও গোপন অভিযান চালাতে পারি না।” ২৬/১১-র মুম্বই হামলার পরে দীর্ঘদিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দায়িত্ব সামলেছেন চিদম্বরম। তাঁর বক্তব্য, “পাকিস্তান যেখানে দাউদকে আশ্রয় দিচ্ছে, সেখানে কী ভাবে তাকে ধরা সম্ভব?”
১৯৯৩ সালে মুম্বইয়ে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের মূল ষড়যন্ত্রী এই মাফিয়া ডন দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকার পয়লা নম্বর নাম। নয়াদিল্লি বহু বার দাউদকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানালেও পাকিস্তান এ বিষয়ে সহযোগিতা করেনি। চিদম্বরম বলেন, “দাউদ যে করাচিতে আছে, তা নয়াদিল্লির অজানা নয়। করাচির কোন এলাকায় দাউদ থাকে, সেটাও নয়াদিল্লির জানা। দাউদ পাকিস্তান থেকে মাঝে মাঝে আরব দেশগুলিতে যায়, তা-ও গোপন নেই। কিন্তু পাকিস্তান সরকার দাউদকে আশ্রয় দিচ্ছে। তাই ভারতের পক্ষে কিছুই করা সম্ভব নয়। চিদম্বরম বলেন, “যারা বলছে আমরা যথেষ্ট চেষ্টা করছি না, তাঁরা অনুগ্রহ করে বলে দিন, একটা সরকার আর কী করতে পারে। আমরা কি দাউদকে ধরে আনতে এক ডজন ব্ল্যাক ক্যাট কম্যান্ডো পাঠিয়ে দেব? এগুলো অদ্ভূত যুক্তি। আমরা যদি দাউদকে পাকড়াও করতে পারি, তা হলে অবশ্যই তাকে পাকড়াও করা হবে। কিন্তু তার জন্য গোপন অফিযান চালানো সম্ভব নয়।”