কালিঝুলি মাখা গ্যারাজের এক কর্মী। সেখান থেকে দাদাসাহেব ফালকে সম্মানের আলো। তৈরি হল ইতিহাস। সেই ইতিহাস স্রষ্টার নাম গুলজার।
৭৯টি বসন্ত পেরিয়ে ২০১৩ সালের জন্য ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতের সর্বোচ্চ সম্মান পেলেন এই কবি, গীতিকার এবং পরিচালক। গুলজারের কথায়, “ঠিক সময়েই এই সম্মান পেলাম।” কিন্তু ‘ঠিক সময়কে’ ছুঁতে হাঁটতে হয়েছে বহু-বহু পথ। ১৯৩৪ সালে অবিভক্ত ভারতের পঞ্জাবে জন্ম। পিতৃদত্ত নাম সম্পুরান সিংহ কালরা। দেশ ভাগের পরে গুলজারের পরিবার চলে আসে অমৃতসরে। গুলজার নিজে মুম্বইয়ে, তৎকালীন বম্বেতে। কাজ করতেন গ্যারাজে। অবসর সময়ে সাহিত্যচর্চা।
বলিউডে পা রাখেন ১৯৫৬-তে। পরিচালক বিমল রায়ের ‘বন্দিনী’ ছবিতে তাঁর লেখা ‘মোরা গোরা অঙ্গ লাই লে’ গানটি দারুণ জনপ্রিয় হয়। বাকিটা ইতিহাস। এর পর গুলজারের কলম থেকে বেরিয়ে এসেছে ‘মেরা কুছ সামান’, ‘রোজ রোজ আঁখো তলে’, ‘তুঝসে নারাজ নেহি জিন্দেগি’ বা ‘কাতরা কাতরা’-র মতো গান। তৈরি করেছেন ‘মেরে আপনে’, ‘কোশিশ’, ‘আঁধি’, ‘খুশবু’ ‘লিবাস’ ইত্যাদি ছবি। তাঁর প্রতিভা থেকে বঞ্চিত হয়নি ছোট পর্দাও। গান লিখেছেন ‘হ্যালো জিন্দেগি’, ‘জঙ্গল বুক’ ইত্যাদি ধারাবাহিকের জন্য।
কবি ছুঁয়েছেন অস্কারের মঞ্চও। ২০০৯ সালে ‘স্লামডগ মিলিয়নেয়ার’ ছবিতে ‘জয় হো’ গানটির জন্য এ আর রহমানের সঙ্গে যৌথ ভাবে অস্কার পেয়েছেন গুলজার। আর তাঁর ফালকে প্রাপ্তির খবরে লতা মঙ্গেশকর, আশা ভোঁসলে থেকে অনুপম খের উচ্ছ্বসিত তামাম বলিউড বলছে, ‘জয় হো গুলজার’।