দাদরিতে বিজেপি নেতা সঙ্গীত সোম। ছবি: পিটিআই।
দাদরির বিসারা গ্রামে পিটিয়ে খুনের ঘটনা নিয়ে এখনও চুপ প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু এই ধরনের ঘটনা দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করে বলে মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। এই প্রথম দাদরি কাণ্ড নিয়ে মুখ খুললেন মোদীর কোনও প্রধান সেনাপতি। পাশাপাশি আজ এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে ফের উত্তেজনা ছড়িয়েছে বিসারায়।
বিসারা গ্রামে গোমাংস খাওয়া নিয়ে গুজবের জেরে মহম্মদ ইকলাখকে পিটিয়ে মারার ঘটনার ফায়দা নিতে এখন মরিয়া সব দলই। বিষয়টি নিয়ে ‘মৌনব্রত’ ভাঙতে মোদীকে চাপ দিচ্ছেন বিরোধীরা। এখনও প্রধানমন্ত্রী বা বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ এ নিয়ে মুখ খোলেননি। কিন্তু নিউ ইয়র্কে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতার পরে অর্থমন্ত্রী জেটলি বলেন, ‘‘ভারত একটি পরিণত দেশ। এমন ঘটনা দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করে। তাই সব ভারতীয়েরই উচিত এই ধরনের ঘটনা বা উস্কানিমূলক মন্তব্য থেকে দূরে থাকা।’’
বিরোধীদের একাংশের মতে, দাদরি নিয়ে মেরুকরণের রাজনীতি খুবই কৌশলে করতে চাইছে বিজেপি। এক দিকে অরুণ জেটলির মতো শহুরে মুখকে দিয়ে ঘটনার নিন্দা করানো হচ্ছে। আবার অন্য দিকে সঙ্গীত সোমের মতো নেতারা গিয়ে উস্কানিমূলক মন্তব্য করছেন। বিরোধীদের মতে, বিজেপির আশু লক্ষ্য বিহার ভোট। সেখানে জাতপাতের অঙ্ক ভাঙতে মরিয়া বিজেপি। তাই মোদীর উন্নয়নের স্বপ্নের পাশাপাশি মেরুকরণের রাজনীতিও করা হচ্ছে। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের মতো মেরুকরণ বিহারে সম্ভব নয়। তাই সেই রাজনীতির সুর বেশি চড়ানো হচ্ছে না। মুলায়ম সিংহ বা আসাদুদ্দিন ওয়েইসির মতো নেতারা পাল্টা মেরুকরণের রাজনীতি করে বিজেপির সুবিধে করে দিচ্ছেন। আজ বিসারায় ১৪৪ ধারা ভেঙে উস্কানিমূলক মন্তব্যের জন্য কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী মহেশ শর্মা, সঙ্গীত সোম ও বহুজন সমাজ পার্টির নেতা নাসিম সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে এফআইআর করতে চেয়ে জেলাশাসকের কাছে রিপোর্ট পাঠিয়েছে পুলিশ।
বিষয়টি নিয়ে আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে রিপোর্টও দিয়েছে অখিলেশ যাদব সরকার। তারা জানিয়েছে, ‘নিষিদ্ধ’ মাংস খাওয়ার গুজবের জেরেই এই ঘটনা। গোমাংস বা গোহত্যা নিয়ে রিপোর্টে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের দাবি, ওই ঘটনায় আটক ৫ জন অভিযুক্তই ইকলাখকে খুন করার কথা স্বীকার করেছে। তাদের মধ্যে দু’জন বলেছে, ইকলাখের বাড়ির কাছে রাস্তায় কিছু মাংস নিয়ে কুকুরে টানাটানি করছিল। তা দেখে তাদের গোমাংস বলে মনে হয়। জনতার আক্রমণের শিকার হন ইখলাকের ছেলে দানিশও। তিনি চিকিৎসাধীন। দানিশের বিবৃতি পাওয়া গেলে তা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বড় হাতিয়ার হবে বলে মনে করছে পুলিশ।