নাম না করে সনিয়া বললেন, মোদী মিথ্যাবাদী

নাম নিলেন না। শুধু উপস্থিত শ্রোতাদের উদ্দেশে প্রশ্নটি ছুড়ে দিলেন সনিয়া, “আমি আপনাদের একটা কথা জিজ্ঞাসা করতে চাই। যিনি শুধুই বড় বড় কথা বলেন, আর কথায় কথায় মিথ্যা বলেন তিনি কি দেশের প্রধানমন্ত্রী পদের যোগ্য দাবিদার হতে পারেন?” হাজারিবাগ লোকসভা কেন্দ্রের রামগড়ে, কংগ্রেসি জনসভায় ছোট শিশুটিরও বোধহয় বুঝতে অসুবিধে হল না, আক্রমণের লক্ষ্য বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

রামগড় শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৪ ০৫:১০
Share:

নাম নিলেন না। শুধু উপস্থিত শ্রোতাদের উদ্দেশে প্রশ্নটি ছুড়ে দিলেন সনিয়া, “আমি আপনাদের একটা কথা জিজ্ঞাসা করতে চাই। যিনি শুধুই বড় বড় কথা বলেন, আর কথায় কথায় মিথ্যা বলেন তিনি কি দেশের প্রধানমন্ত্রী পদের যোগ্য দাবিদার হতে পারেন?” হাজারিবাগ লোকসভা কেন্দ্রের রামগড়ে, কংগ্রেসি জনসভায় ছোট শিশুটিরও বোধহয় বুঝতে অসুবিধে হল না, আক্রমণের লক্ষ্য বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

গত ৪৮ ঘণ্টায় সনিয়ার বিরুদ্ধে দফায় দফায় সরাসরি আক্রমণ শানিয়েছেন মোদী ও সহযোগীরা। কখনও মুসলিম ভোটারদের উদ্দেশে কংগ্রেসকে সমর্থন করতে সনিয়ার ডাককে ‘নির্লজ্জ সাম্প্রদায়িক’ আখ্যা দিয়ে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি। কখনও বা দিল্লির জামা মসজিদের ইমাম সৈয়দ আহমেদ বুখারির সঙ্গে সনিয়ার বৈঠকের খবরের জের টেনে তাঁকে বিঁধেছেন মোদী। আজ রামগড়ের জনসভায় প্রথম সুযোগেই পাল্টা আক্রমণ করেন কংগ্রেস সভানেত্রী। জনসভায় অসংসদীয় ‘মিথ্যা’ শব্দ ব্যবহারেও দ্বিধা করেননি তিনি। উল্লেখ্য, সংসদে ‘মিথ্যা’ বা ‘লাই’ বলা যায় না, বলতে হয় অসত্যআনট্রু। মোদীরা সনিয়ার বিরুদ্ধে যে সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগ এনেছেন তাও আজ এক কথায় খারিজ করে দিয়েছেন কংগ্রেস সভানেত্রী। তাঁর কথায়, “আমাদের দল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতেই বিশ্বাসী। আমরা বিশ্বাস করি দেশের অখণ্ডতায়, ওদের মতো খণ্ডিত ভারতে নয়।”

রামগড়ের সিদো-কানহু ময়দানে আজ হাজারিবাগের কংগ্রেস প্রার্থী সৌরভনারায়ণ সিংহের হয়ে নির্বাচনী প্রচারে আসেন সনিয়া। সৌরভ বর্তমানে কংগ্রেস বিধায়ক। হাজারিবাগে তাঁর লড়াই মূলত প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যশবন্ত সিন্হার ছেলে বিজেপির জয়ন্ত সিন্হার সঙ্গে। প্রবল গরম সত্ত্বেও আজকের সভায় ভিড় ভালই হয়েছিল। তবে মোদীর মতো লোক টানতে পারেননি তিনি। সনিয়ার আগে কংগ্রেসের স্থানীয় নেতারা বিজেপি-বিরোধী কথায় কর্মী-সমর্থকদের তাতিয়ে তুলতে গিয়ে সভার সুর চড়াতেই বেঁধে দেন। মোদী কিংবা বিজেপি-র বিরুদ্ধে কংগ্রেস সভানেত্রীর আক্রমণও তীব্র হবে বলেই আশা ছিল। তবে নাম না করে মোদীকে মিথ্যাবাদী বলা ছাড়া আর কোনও নেতিবাচক কথায় যাননি সনিয়া।

Advertisement

কংগ্রেস নেত্রীর মিনিট দশেকের বক্তৃতার সিংহভাগ জুড়েই ছিল ইউপিএ সরকারের দশ বছরের কাজের হিসেব। তাঁর দাবি, গত ১০ বছরে উন্নয়নমূলক কাজে বিশেষ সাফল্য অর্জন করেছে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের নেতৃত্বাধীন সরকার। বক্তৃতায় খাদ্য সুরক্ষা আইনের উল্লেখ করেন সনিয়া। কয়লা খনি অধ্যুষিত রামগড় ও সংলগ্ন এলাকার মানুষকে স্মরণ করিয়ে দেন, তাঁর শাশুড়ি প্রয়াত ইন্দিরা গাঁধীই কয়লা খনি জাতীয়করণের পুরোধা। মাওবাদীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “হিংসা উন্নয়নের পথে বাধা। যাঁরা সে পথে যাচ্ছেন তাঁদের বলব, সমাজের মূল স্রোতে ফিরে আসুন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন